◾মোঃ হেদায়েত উল্লাহ তুর্কী : হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাঙালির মহানায়ক, বাঙালির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপূত্র শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকার ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর প্রিয় লেখক খ্যাতিমান দার্শনিক ও নোবেলবিজয়ী ব্যক্তিত্ব বার্ট্রান্ড রাসেলের নাম অনুসারে তাঁর কনিষ্ঠ পূত্রের নাম রাখেন রাসেল। বংশের পদবী সহ যাহা দাঁড়ায় শেখ রাসেল। মাত্র দেড় বছর বয়স থেকে ছোট্ট শেখ রাসেল তাঁর প্রিয় পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করতে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে যেতেন কারন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার দায়ে এবং পরবর্তীতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারাগারে বন্দী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী কারাগার থেকে নিঃশর্ত মুক্তিলাভ করলেও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক-হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলে সাত বছর বয়সী শেখ রাসেল তাঁর মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং বড় দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনার সাথে পাক-হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দী হয়ে ধানমন্ডির ১৮ নাম্বার সড়কের একটি বাড়িতে আটক থাকেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলে ১৭ ডিসেম্বর পরিবারের সবার সাথে মুক্ত হন। শেখ রাসেল খুব কম খেতেন, তবে তাঁর পছন্দের খাবারের তালিকায় সবার প্রথম ছিলো ভাত। তিনি বাসার কাজের লোকদের সাথে রান্নাঘরে পিড়িতে বসে লাল ফুলের ছাপা থালায় খেতে পছন্দ করতেন। তিনি সাইকেল চালাতে ভীষণ পছন্দ করতেন। প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হয়েও তিনি প্রটোকল ভেঙে নিজে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতেন। সাইকেলের পাশাপাশি মপেট মোটরসাইকেল ছিলো তাঁর। পাশের বাসার আদিল ও ইমরান ছিলো তাঁর খেলার সাথী। তবে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গেলে গ্রামের বন্ধুদের সাথে ডামি বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতেন। বড় হয়ে সেনাবাহিনীর অফিসার হওয়ার ইচ্ছা ছিলো তাঁর। তবে বড় কালো পিঁপড়াকে ভীষণ ভয় পেতেন। কালো পিঁপড়াকে তিনি ভুট্টো বলে ডাকতেন। তিনি পায়রা পুষতেন এবং বড়শি দিয়ে মাছধরা পছন্দ করতেন। প্রিয় কুকুর টমিকে নিয়ে খেলা করতেন। তিনি সবসময় সুন্দর পোশাক পরতে পছন্দ করতেন এবং প্রিন্সকোর্ট ছিলো তাঁর অন্যতম পছন্দ। তিনি ১৯৭৩ সালে পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে জাপান সফর করেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় হায়নাদের গুলিতে বাবা, মা, ভাই, ভাবি সহ পরিবার এবং আত্মীয়স্বজন ১৭ জনের সাথে শাহাদাৎ বরণ করেন। বনানী কবরস্থানে পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের সাথে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদরের কনিষ্ঠসন্তান শেখ রাসেল। তাঁর জন্মদিন ১৮ অক্টোবরকে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সাল থেকে শেখ রাসেল দিবস ঘোষণা করেছে। তাঁর স্মরণে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সরকার প্রতিটি মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম তৈরী করেছেন। প্রায়ত শেখ রাসেল শুধু স্কুল এবং খেলার মাঠে নয়, সকল সময় বেঁচে থাকবেন বাঙালির হৃদয়ে।
লেখক,
মোঃ হেদায়েত উল্লাহ তুর্কী
ডেপুটি রেজিস্ট্রার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
৫৭ মিনিট আগে
৫৮ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
১৪ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
১৪ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে
১৯ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
১৯ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
১৯ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে