বিশ্বসেরা হাফেজ ইন্দোনেশিয়ার জাকি, দেশসেরা নেত্রকোনার ইরশাদুল ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য ইলিয়াস আলীসহ বিএনপি নেতাকর্মীকে গুম করে- তাহসিনা রুশদীর লুনা ডোমারে জমিয়তের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত উলিপুরে তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের দাবীতে মানববন্ধন বাকৃবির শাহজালাল হলের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত পীরগাছায় ছাওলা ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে ইফতার মাহফিল সেনাবাহিনীর অভিযানে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ইয়াবা, রামদা ও মাদক সেবনের সরঞ্জামসহ আটক ২ বগুড়ায় জুয়ার আসর থেকে কৃষকলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার চার ক্ষেতলালে শত শত রোজাদারকে ইফতার করালেন সাবেক ছাত্রনেতা আব্বাস আলী বেগমগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময় ও ইফতার গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের সম্মানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইফতার না:গঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইফতার মাহফিল হবিগঞ্জে মউশিক শিক্ষক কল্যাণ পরিষদের মানববন্ধন বড়লেখায় বিএনপি নেতা সাজু দায়িত্ব নিলেন হতদরিদ্র একশ' শিক্ষার্থীর নতুন করে সুন্দরবনের গুলিশাখালী আগুন পানি সংকট,নেভাতে জোয়ারের অপেক্ষা শ্রীমঙ্গলে শিক্ষকদের সম্মানে হাজী সোনা মিয়া সুরজান বিবি আলিয়া মাদ্রাসার ইফতার সংস্কার কমিশনের ১১৩টি প্রস্তাবে একমত এনসিপি ঈদ মিছিল হবে ঢাকায়, বসবে মেলা: আসিফ মাহমুদ পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটে যাত্রী পারাপারের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি। গোয়ালন্দ উপজেলা সাউন্ড ও লাইটিং ব্যবসায়ীর উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল।

নিজের অধিকারের প্রশ্নে হতে হবে আপোষহীণ


হাল সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি শব্দ মানবাধিকার। অবস্থাষ্টে মনে হয় এ শব্দটি নিয়ে যারা বেশি কথা বলে তারাই এ বিষয়টির হরণকারি। বেশি কথা বলার পাশাপাশি চলে হরণের নগ্ন হামলা। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়া সম্পর্কে যতকথা বলা হয় তা রক্ষার জন্য তত কাজ করা হয় বলে হয় না। প্রেস রিলিজে আটকে যায় মানবতা। মানবাধিকারের নাম করে বিভিন্ন প্রকার অত্যাচার চলে ছোট দেশ ও সাধারণ মানুষের উপর। এই অত্যাচারের মাধ্যমে বড়রা ছোটদের মানবাধিকার হরণ করছে তা কিন্তু ভাবা হচ্ছে না। এক রাষ্ট্র আরেক রাষ্ট্রের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে প্রায়ই কিন্তু সত্যিকার অর্থে এসবের প্রতিকার পাওয়া অনেক কঠিন। প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় মানবাধিকার দিবস। দিবসটি নিয়ে আলোচনার পূর্বে তার জন্ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া দরকার। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১০ ডিসেম্বরকে মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। বলা চলে সার্বজনীন মানব অধিকার ঘোষণা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নবরুপে সৃষ্ট জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ অর্জন। পরবর্তীতে ১৯৫০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সদস্যভূক্ত দেশ সমুহ এবং আগ্রহী সংস্থাগুলোকে নিজেদের মতো করে উদযাপনের আহবান জানানো হয়। প্রতিবারই মানবাধিকার দিবস আসে পালিত হয় জাঁকজমকপূর্ণভাবে কিন্তু কাজ হয় একেবারেই কম। মানবাধিকার দিবসের আলোচনার পূর্বে জানা প্রয়োজন মানবাধিকার কি ? কারণ মানবাধিকার কি সেটা সাধারণ মানুষ না জানলে মানবাধিকার রক্ষা করা  একেবারেই সম্ভব নয়। মানবাধিকারের বিষয়গুলো জানা থাকলে এবং লঙ্ঘিত হলে এর প্রতিকার চেয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব। আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সমাজ ,রাষ্ট্র ও ব্যক্তি এই লঙ্ঘনের  বাইরে নয়। উকিপিডিয়া থেকে নেয়া মানবাধিকারের কিছু আলোচনার পর সেগুলিকে আরো স্পষ্ট করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারই হচ্ছে মানবাধিকার। এছাড়া মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ মাত্রই এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারন হতে পারবে না। মূল কথা হলো মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমান ভাবে প্রযোজ্য। আমাদের মতো দেশে সমস্যাটা সে জায়গাই সবচেয়ে বেশি। আইন সকলের জন্য সমান বলা হলেও বাস্তবে তা নেই। আইনের প্রয়োগ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বিভিন্ন স্তরে বিভিন্নভাবে। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হল এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা। পরিবার ও সমাজের কর্তারা তাদের অধিনস্তদের অধিকার রক্ষা করবে। রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করবে। জন্মগতভাবে সকল মানুষ স্বাধীন এবং সমান সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবে। এক কথায় বলা যায়, দৈনন্দিন জীবনে চলার জন্য মানুষের যে সকল অধিকার রাষ্ট্রের সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত তাদেরকে মানবাধিকার বলে। রাষ্ট্র পরিচালনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হচ্ছে সংবিধান। সংবিধান অনুযায়ি দেশ পরিচালিত হলে মানুষের অধিকার রক্ষা হবে কিন্তু মানবাধিকারের বেলায় সংবিধান মানা হয় না। সকল মানুষ সব জায়গায় সকল অধিকার পায় না সঠিকভাবে। বাংলাদেশে ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) স্বায়িত্বশাসিত সংস্থা হিসেবে অস্তিত্ব লাভ করে। সংস্থাটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশের বিধানের অধীনে গঠিত হয়েছিল। পরবর্তী বছর ডিসেম্বর মাসে কমিশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল মানব মর্যাদা ও অখন্ডতার মূর্ত প্রতীক এবং গণতন্ত্রের মৌলিক শৃঙ্খলা রক্ষায় অবদান রাখা যাতে সকল ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষিত হয় এবং মানবাধিকারের মান উন্নত হয়। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন মানুষের অধিকার আদায়ের ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। কিন্তু এসব সংগঠন এবং আইন কোন কিছুই সাধারণ মানুষকে অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছে না। দেশ বিদেশে আজ মানবাধিকার হরণের মহোৎসব চলছে। যার ফলে মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। ক্ষমতার লোভে প্রতিনিয়তই সাধারণ মানুষ অত্যাচারিত হচ্ছে। লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ায় নিলজ্জভাবে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে মানুষের মৌলিক অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। পাশ্ববর্তী দেশ মায়ানমারে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতন ও ধর্ষণ করে বিতারিত করা হয়েছে দেশ থকে। যাযাবরের মতো জীবন যাপন করতে হচ্ছে বাংলাদেশে। গাজাতে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে সাধারণ মানুষদের । জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাড়ি ঘর হাসপাতাল। আমরা শুধু বলে যাচ্ছি মানবাধিকার হরণের কথা কিন্তু এর জন্য কার্যকরি কোন ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হচ্ছি। শুধু ক্ষমতার মোহে হারিয়ে যাচ্ছে মানবতা। চলছে ইউক্রেনে হামলা। মীমাংশার কাজ না করে দেওয়া হচ্ছে উসকানি। সারা পৃথিবীতেই আজ মানবতার আকাল। থেমে নেই ১৯৭১ সালে এক সাগর রক্ত আর মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে যুদ্ধ করে স্বাধীন করা বাংলাদেশটাও। মতের অমিল আর ক্ষমতার লোভে মানুষের মৌলিক অধিকারকে হরণ করা হচ্ছে বারবার। সমাজ ব্যবস্থায় তৈরি হচ্ছে নানা অসঙ্গতি। আগামীর সুন্দর সোনার বাংলা বির্নিমাণে দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার স্থাপন একান্ত জরুরি। প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি গ্রাস করছে সাধারণ মানুষদের। ফলে মানুষের মৌলিক অধিকারের জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। তাই অধিকার রক্ষায় প্রত্যেকেই নিজের জায়গা থেকে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। অধিকার পাওয়া নয় আদায় করে নিতে হবে। নিজে সচেতন হয়ে আদায় করে নিতে নিতে হয়তো একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে মানবাধিকার।




লেখক পরিচিতি

শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক





Tag
আরও খবর