পটুয়াখাালীর গলাচিপায় হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্রী সানিয়াকে (১০) ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ আটক ১ রবিউল হাসান বাবু মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি নির্বাচিত বজ্রপাত থেকে রক্ষায় কী করবেন রামগড়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারি দ্বিতীয়বারের মত পুনরায় নির্বাচিত গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন সোহেল খাগড়াছড়ির চার উপজেলায় নির্বাচনে তিন উপজেলায় ফলাফল ঘোষণা একটিতে ঘোষণা স্থগিত শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হলেন যারা সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে নতুন মুখ নির্বাচিত ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুলাল মিয়া সরদার চেয়ারম্যান নির্বাচিত ডোমার উপজেলা চেয়ারম্যান (আনঅফিসিয়ালী) নির্বাচিত হয়েছেন সরকার ফারহানা আখতার সুমি বউত দিন হাইয়্যু,আর ন-হাইয়্যু শ্লোগানে মুখরিত কক্সবাজার! জনগণের কষ্ট লাঘবে সবসময় সচেষ্ট সরকার: প্রধানমন্ত্রী এবার ৬জি উদ্ভাবন, যার গতি ৫জির চেয়ে ২০ গুণ হবু স্বামী-স্ত্রীর যে রোগ নির্ণয় করা জরুরি বিয়ের আগেই এবার সর্বোচ্চ যত গতিতে শহরে চালানো যাবে মোটরসাইকেল কক্সবাজার সদর উপজেলায় নুরুল আবছার বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত প্রত্যাশার চেয়ে কম ভোট পড়েছে: সিইসি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঝাউবাগানে চোরাকারবারীর ফেলে যাওয়া ব্যাগ থেকে ৩০হাজার উদ্ধার শেষ হলো জেলার তিন উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ভোট, চলছে গণনা

সরস্বতী, বিশ্বভূবন প্রকাশ সরস্বতীর জ্যোতিতে।

সরস্বতী শব্দটি ‘সার’ এবং ‘স্ব’ দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। সেই অনুসারে সরস্বতী শব্দের অর্থ যিনি কারো মধ্যে সারজ্ঞান প্রকাশ করেন। আবার সরস্বতী শব্দটি সংস্কৃত ‘সুরস বতি’ শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে জলের আধার। সরস্বতী সাক্ষাৎ দেবী মূর্তি এবং নদী-দুইরূপেই প্রকটিত। এক সময় শ্রীব্রহ্মা সৃষ্টিকার্যের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। শান্তভাবে ধ্যানস্থ আছেন। কী করবেন, কী করা উচিত চিন্তা করছেন। এমন সময় তাঁর শরীর থেকে এক সুন্দরী দেবীমূর্তি প্রকাশিত হয়। দেবী ব্রহ্মাজীকে বললেন, হে বিধাতা আমি আপনার থেকে প্রকাশিত হলাম। এখন দয়া করে আপনি আমার স্থান এবং কী কর্ম তা নির্দেশ করুন। ‘ব্রহ্মা বললেন “তোমার নাম সরস্বতী। তুমি অবস্থান করো সকলের জিহ্বাতে বিশেষভাবে সুশিক্ষিত ব্যক্তিদের জিহ্বাতে তুমি নৃত্য করো।পৃথিবীতে তুমি একটি নদীরূপে প্রকাশিত হও।”দেবী সরস্বতী প্রশ্ন করলেন- হে বিধাতা, আপনি বললেন, আমি সবার জিহ্বাতে অবস্থান করবো; আবার বললেন, নদীরূপে থাকবো। এর ব্যাখ্যা কী? ব্রহ্মা বললেন-সরস্বতী তুমি যখন লোকের জিহ্বাতে অবস্থান করবে, তখন লোকের জিহ্বা থেকে বাকশক্তি হবে। তাই তোমার নাম বাকদেবী। তুমি আমার মুখ থেকেই প্রকাশিত। তুমি পবিত্রবতী। জগৎ-সংসারে বহু অপবিত্র মানসিকতা সম্পন্ন জীব থাকবে, অপবিত্র মানুষের জিহ্বায় কদর্য বাক্য স্ফুরিত হবে, সেসব জিহ্বাতে তুমি অবস্থান করে সুখি হতে পারবে না। হে সরস্বতী, তুমি সাক্ষাৎ বুদ্ধি স্বরূপিণী। তুমি বলো, কোথায় তুমি আনন্দ লাভ করবে? সরস্বতী বললেন-যে সমস্ত ব্যক্তি পরম সুন্দর পরমেশ্বর ভগবানের আরাধনা করেন।সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার সহধর্মিণী এবং বিষ্ণুপত্নী লক্ষ¥ী ও মহেশ্বরজায়া পার্বতীর সঙ্গে একযোগে ত্রিদেবী নামে পরিচিত দেবী সরস্বতী। পুরাণ অনুযায়ী দেবী সরস্বতী ব্রহ্মের মুখ থেকে উথ্থান। দেবীর সকল সৌন্দর্য্য ও দীপ্তির উৎস মূলত ব্রহ্মা। পঞ্চ মস্তকধারী দেবী ব্রহ্মা এক স্বকীয় নিদর্শন। পূজার জন্য দেবী সরস্বতীর মূর্তি শ্বেত বস্ত্র পরিধান করে থাকে যা পবিত্রতার নিদর্শন বলে পরিচিত। বিশ্বভূবন প্রকাশ সরস্বতীর জ্যোতিতে। হৃদয়ে সে আলোকবর্তিকা যখন প্রজ্বলিত হয়, তখন জমাট বাধা অজ্ঞানতারূপ অন্ধকার যায় দূর হয়ে। অন্তরে, বাইরে সর্বত্র তখন জ্বলতে থাকে জ্ঞানের পুণ্য জ্যোতি। এই জ্যোতিজ্ঞানই ব্রহ্মজ্ঞান, এই জ্যোতিই সরস্বতী। আলোকময়ী, তাই তিনি সর্বশুক্লা।তিন গুণের মধ্যে তিনি সত্ত্বগুনময়ী, অনন্ত জ্ঞানময় ঈশ্বরের বাক্শক্তির প্রতীক বাগ্দেবী। গতিময় জ্ঞানের জন্যই ঋগ্বেদে তাঁকে নদীরূপা কল্পনা করা হয়েছে, যিনি প্রবাহরূপে কর্মের দ্বারা মহার্ণব বা অনন্ত সমুদ্রে মিলিত হয়েছেন। কল্যাণময়ী নদীতটে সাম গায়কেরা বেদমন্ত্র উচ্চারণে ও সাধনে নিমগ্ন হতো। তাদের কণ্ঠে উদ্গীত সাম সঙ্গীতের প্রতীকী বীণা দেবীর করকমলে। সরস্বতী বিধৌত ব্রহ্মাবর্ত ভূমি বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্ত আশ্রয় করে সাধনা করতেন আশ্রমবাসী ঋষিগণ। সেই ভাবটি নিয়েই দেবী 'পুস্তক হস্তে, গ্রন্থ রচনার সহায়ক লেখনীটিও তাঁর সঙ্গে। মার্কগেুয় পুরাণে শ্রীশ্রীচন্ডী উত্তরলীলায় শুম্ভ নিশুম্ভ নামক অসুরদ্বয়কে বধ করার সময় দেবীর যে মূর্তির কল্পনা করা হয়েছিল তা ছিল মহাসরস্বতীম।বাংলা তথা পূর্বভারতে সরস্বতী দ্বিভূজা ও রাজহংসের পৃষ্ঠে আসীনা। রাজহংস কেন সরস্বতীর বাহন? কেননা জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে সর্বত্রই হাঁসের সমান গতি, যেমন জ্ঞানময় পরমাত্মা সর্বব্যাপী - স্থলে, অনলে, অনিলে সর্বত্র তাঁর সমান প্রকাশ। হংস জল ও দুধের পার্থক্য করতে সক্ষম। জল ও দুগ্ধ মিশ্রিত থাকলে হাঁস শুধু সারবস্ত দুগ্ধ বা ক্ষীরটুকুই গ্রহণ করে, জল পড়ে থাকে। জ্ঞান সাধনার ক্ষেত্রেও হংসের এ স্বভাব তাৎপর্য বহন করে।সরস্বতী শব্দের দুই অর্থ - একটি ত্রিলোক্য ব্যাপিনী সূর্যাগ্নি, অন্যটি নদী। সরস্ + বতী = সরস্বতী, অর্থ জ্যোতির্ময়ী। আবার সৃ ধাতু নিস্পন্ন করে সর শব্দের অর্থ জল। অর্থাৎ যাতে জল আছে তাই সরস্বতী। ঋগ্বেদে আছে 'অম্বিতমে নদীতমে দেবীতমে সরস্বতী', সম্ভবত সরস্বতী নদীর তীরেই বৈদিক এবং ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির উদ্ভব।সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজা বর্তমান রূপটি আধুনিক কালে প্রচলিত হয়েছে। তবে প্রাচীন কালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী-সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন বলে জানা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে পাঠশালায় প্রতি মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে ধোয়া চৌকির উপর তালপাতার তাড়ি ও দোয়াতকলম রেখে পূজা করার প্রথা ছিলো। শ্রীপঞ্চমী তিথিতে ছাত্রেরা বাড়িতে বাংলা বা সংস্কৃত গ্রন্থ, শ্লেট, দোয়াত ও কলমে সরস্বতী পূজা করতো। গ্রামাঞ্চলে এই প্রথা বিংশ শতাব্দীতেও প্রচলিত ছিলো। শহরে ধনাঢ্য ব্যক্তিরাই সরস্বতীর প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করতেন। আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পূজার প্রচলন হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে।শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালেই সরস্বতী পূজা সম্পন্ন করা যায়। সরস্বতীর পূজা সাধারণ পূজার নিয়মানুসারেই হয়। তবে এই পূজায় কয়েকটি বিশেষ উপাচার বা সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। যথা: অভ্র-আবীর, আমের মুকুল, দোয়াত-কলম ও যবের শিষ। পূজার জন্য বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুলও প্রয়োজন হয়। লোকাঁচার অনুসারে, ছাত্রছাত্রীরা পূজার পূর্বে কুল ভক্ষণ করেন না। পূজার দিন কিছু লেখাও নিষিদ্ধ। যথাবিহিত পূজার পর লক্ষী, নারায়ণ, লেখনী-মস্যাধার (দোয়াত-কলম), পুস্তক ও বাদ্যযন্ত্রেরও পূজা করার প্রথা প্রচলিত আছে। এই দিন ছোটদের হাতেখড়ি দিয়ে পাঠ্যজীবন শুরু হয়। পূজান্তে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার প্রথাটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের দল বেঁধে অঞ্জলি দিতে দেখা যায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম এই ধর্মীয় উৎসবে পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন অগণিত ভক্ত। মর্তের ভক্তকুল শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী দেবী সরস্বতীর আবাহন করবে। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর পাদপদ্মে প্রণতি জানাবেন তারা। ঢাক-ঢোল-কাঁসর, শঙ্খ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠবে দেশের বিভিন্ন পূজামন্ডপ।(সংকলিত)

Tag
আরও খবর


deshchitro-663bbd074988f-080524115727.webp
বজ্রপাত থেকে রক্ষায় কী করবেন

৫ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে