লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে জাতিসংঘ মহাসচিব আশাশুনিতে রোজা ও যাকাতের তাৎপর্য শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত নাগেশ্বরীতে যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন কমলগঞ্জে একতা সমাজ কল্যাণ পরিষদের ইফতার সামগ্রী পেয়ে খুশি শতাধিক পরিবার নাগরপুরে তামাক ক্ষেত থেকে ১ মহিলার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান নার্গিস বেগমকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন শার্শা উপজেলা বিএনপি কক্সবাজারে জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস লাখাইয়ে সাংবাদিক এমএ ওয়াহেদ এর মায়ের ইন্তেকাল, বিভিন্ন মহলের শোক। জয়পুরহাটে অপ চিকিৎসায় পঙ্গুত্ববরণের অভিযোগে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন শাজাহানপুরে শারিরীক প্রতিবন্ধী মেয়ে ধর্ষণের স্বীকার পুতিন যুদ্ধবিরতি নিয়ে ‘ছলনা’ করছেন: জেলেনস্কি আজ পৃথিবীর অন্যতম বড় ইফতার অনুষ্ঠিত হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতিসংঘ মহাসচিব কে নিয়ে কক্সবাজার প্রধান উপদেষ্টা কুবিতে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাতিসংঘ: গুতেরেস রাজবাড়ীতে ৭৫ পুরিয়া হেরোইনসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার । সুন্দরবনে কোস্টগার্ডের অভিযানে ২৮ কেজি হরিণের মাংস সহ আটক ১ যমজ সন্তানদের পরিবারের ৩য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শ্যামনগর পৌরসভার জন্মনিবন্ধন জটিলতার সমাধান করলেন ইউএনও রণী খাতুন শ্যামনগর বনশ্রী শিক্ষা নিকেতনের সাবেক প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলীর মৃত্যু

কবে ঘুচবে যশোরের দুঃখ ভবদহ ?

Md Nazmul Hasan ( Contributor )

প্রকাশের সময়: 28-04-2024 04:26:52 am

পানিবন্দী দশা থেকে মুক্তির অপেক্ষায় ভবদহবাসী

আমি মোঃ নাজমুল হাসান। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের চতুর্থ সেমিষ্টারে অধ্যয়নরত। গত ২০ এপ্রিল "ফিসকেল ল" ক্লাস করার সময় শিক্ষকের থেকে জানতে পারি যশোরের ভবদহ নামে একটি জায়গার মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা। জানতে পারি সেখানকার মানুষের স্থায়ী জলাবদ্ধতার সমস্যা। প্রতিবছর সামান্য বৃষ্টিতেই ভবদহ অঞ্চলের মানুষেরা জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। সৃষ্টি হয় বন্যার, এতে তলিয়ে যায় ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। তখন এমন পরিস্থিতির ও উদ্ভব হয় যে মৃত মানুষকে কবর দেয়ার মতো পরিবেশ থাকে না তখন অন্য এলাকার মৃত মানুষকে সমাধিস্থ বা শেষকৃত্য সম্পাদন করতে হয়। 


যা শুনে রীতিমত অবাক হই। আধুনিকতার এই ২০২৪ সালে যখন বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গবেষণাসহ বিভিন্ন সূচকে আমরা ঈর্ষণীয় গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। তখন ভবদহের এরূপ সংবাদে মনে হচ্ছে ভবদহ যেন পড়ে আছে এখনো অর্ধশত বছর পেছনে যা অবগত হয়ে একদমই বিমর্ষ হয়ে পড়ি। ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরে এই বিষয়ে বিস্তার পড়াশুনা শুরু করে দেই। অফলাইন,অনলাইন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ভবদহ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করি। তখন জানতে পারি যে যশোর শহর হতে ৪৬ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ কোণে অবস্থিত ভবদহ স্লুইচ গেট। প্রতিবছর সামান্য বৃষ্টিতে ভবদহ অঞ্চলের মানুষের আত্মচিৎকার কখনও ফুরাতে চায় না। দিন থেকে মাস, মাস থেকে বছর পেরিয়ে গেলেও এই অঞ্চলের মানুষের দুঃখ যেন কিছুতেই ঘোচতে চায় না। 


ভবদহের প্রায় ৬টি উপজেলা, যথা কেশবপুর, অভয়নগর, মনিরামপুর, খুলনার বটিয়াঘাটা, ফুলতলা, ডুমুরিয়ার, ৪৩টি ইউনিয়ন, ৪৯০টি গ্রাম, ৮০ হাজার হেক্টর জমি এবং প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ জলাবদ্ধতায় অমানবিক দুর্ভোগের শিকার। অবর্ননীয় এই দুর্ভোগ তাদের আর্থ সামাজিক ভিত্তি ভেঙে দিয়ে সর্বস্বান্ত করে ফেলেছে। 


যখন যশোরের ভবদহ যা ১০ লক্ষাধিক মানুষের হাসি-কানার আবাসস্থলের শুরুর দিকের ইতিহাস খুঁজতে শুরু করি তখন জানতে পারি চীনের দুঃখ যেমন হোয়াংহো নদী ঠিক তেমনি যশোরের দূঃখ হিসেবে পরিচিত ভবদহ। যদিও বর্তমানে চীনের জনগণের হোয়াংহোর দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করছে তবে বাংলাদেশের যশোরের ভবদহ এলাকার জনগণ পানিবন্দি দশা থেকে দীর্ঘ দিনেও মুক্তি পাচ্ছে না। হোয়াংহো নদীর ন্যায় যশোরের ভবদহও যেন এখানকার জনগণের কাছে এক অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের সাথে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।


১৯৫৮ সালের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের শাসনামলে একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প ছিল ভবদহ স্লুইচ গেট নির্মাণ। সবুজ বিপ্লব প্রকল্পে উক্ত এলাকার ৮০ হাজার হেক্টর আবাদি জমি লবণাক্ততা দূর করার জন্য, বর্ষা মৌসুমের অতিরিক্ত জল বের করে দেওয়া ও স্লুইচ গেটের উত্তরে ২৭টি বিলের জল বর্ষা মৌসুমে ও উত্তরের সংযুক্ত নদীগুলোর অতিরিক্ত জল প্রবাহের সময় মুক্তেশ্বরী নদী ও সীমানা খালের মাধ্যমে বিলবোকড় ও বিলকেদারিয়ার হয়ে যাতে শ্রীনদীতে পড়ে এবং জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না করে, শুকনো মৌসুমে জল জমিয়ে রেখে সংযুক্ত খালের মাধ্যমে তা বিলের ভেতরে এনে চাষাবাদ অব্যাহত রাখা।


এজন্য ১৯৫৮ সালে ২১ ও ৯ ভেন্টের ভবদহ স্লুইচ গেট শ্রীনদী ও হরি নদীর মুখে তৈরির শুরু হয় এবং ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের কাজ চলে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সেই অঞ্চলের কৃষকদের সোনালী ফসলের সাথে সাথে মুখে ফুটে ওঠে উজ্জ্বল হাসি। এর ফলে ভবদহ অঞ্চলের মানুষেরা প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেললেও তা আর দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বছর বিশেক এর সুফল পাওয়া গেলেও আশির দশকে যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর উপজেলা ও খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মধ্যবর্তী ভবদহ এলাকার কৃষকরা জলাবদ্ধতার কারণে বিপর্যস্ত হতে থাকেন। মূলত মেইন গেটের সামনে ও পেছনে প্রচুর পলিমাটি জমতে শুরু করে ফলশ্রুতিতে ১৯৮২ সালে নেহালপুর ও কুলটিয়া ইউনিয়ন স্থায়ী বন্যায় প্লাবিত হয়। বন্যায় কৃষি জমি, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা প্লাবিত হয়। ১৯৮৮ সাল থেকে এই জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করে। এর ফলে পানি সরানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু করে এলাকার ভুক্তভোগী মানুষ। তখন থেকেই চলতে থাকে এ আন্দোলন।


এরপর ১৯৯৬ সালে ২২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় 'খুলনা যশোর ড্রেনেজ রিহাবিলিশান' প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রথম প্রকল্প হিসেবে নেহালপুর ইউনিয়নের বিলকেদারিয়ায় টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) এর মাধ্যমে উক্ত এলাকার মানুষজন বেশ উপকৃত হয়। ভবদহ গেট দিয়ে ২৭ টি বিলের পানি নেহালপুর ইউনিয়নের বিলকেদারিয়া হয়ে টেকামুক্তেশ্বরী নদী হয়ে সমুদ্রে পতিত হতো। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল এভাবেই জলবদ্ধ এই অঞ্চলকে স্থায়ী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করা। কিন্তু ১৯৫৮ সালে তৈরি করা সেই সুইচগেট আজ মৃতপ্রায় এবং দুই পাশে পলিমাটি জমায় সামান্য বৃষ্টিতেই প্রতিবছর এই অঞ্চলে সৃষ্টি হয় বন্যার। পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটির কারণে ভবদহ আজ ২৭ টি বিলে পাড়ের মানুষজনের দুঃখ দুর্দশা কারণ।


বর্তমানে ভবদহ সুইচগেট হারিয়েছে তার পুরনো ঐতিহ্য। এখন আর জলাবদ্ধতা নিরাসনে কোন কাজে আসছে না। বিল সমূহের মধ্য দিয়ে প্রবাহমান খাল গুলো মরে যাওয়া ও গভীরতা কমে যাওয়া। তার উপর ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল ফারাক্কা বাধ চালু হলে প্রধান ও শাখা নদীগুলো নাব্যতা হারাতে শুরু করে। যার ফলে জলপ্রবাহ কমতে থাকে ও নদীর তলদেশে পলি জমে গভীরতাও কমতে থাকে। এর জন্য পানির চাপ থাকলেও আর্কিমিডিসের সূত্রের সফল প্রয়োগ ঘটেনা অর্থাৎ সম্মুখের গভীরতা কম থাকার কারণে পানি নিষ্কাশন ঘটেনা এবং জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। উপরিউক্ত কারণে বিলের উচ্চতা নদীর গভীরতার তুলনায় কমে যাওয়ায় পানি সহজে সরতে পারেনা। এছাড়া বিলের ভেতর অসংখ্য বদ্ধ জলাশয় তৈরি করায় বর্ষা মৌসুমে পানি উন্মুক্তভাবে প্রবাহিত হয়ে নদীতে বা এক বিল থেকে আরেক বিলে যেতে অনেক দেরি হয় ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।


সব মিলিয়ে ভবদহের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা এক বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছরই বন্যা কালীন সময়ে এই সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে কর্তৃপক্ষ।


ভবদহ সমস্যা দূরীকরণে বিভিন্ন সংগঠন কাজ করছে যেমন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি, ভবদহ পানি নিষ্কাশন আন্দোলন কমিটি, এএলআরডি, আমরা অভয়নগরবাসী। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি নিয়মিতভাবেই এই সমস্যার কথা বিভিন্ন সভা-সেমিনারের মাধ্যমে যেমন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরছেন ঠিক তেমনি সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।


তাদের সকলের দাবি ভবদহ সমস্যা নিয়ে সরকারের স্বল্প মেয়াদী, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। দেশ-বিদেশের শ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারীদের থেকে পরামর্শ নিয়ে তাদের তত্ত্বাবধানে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা যার মাধ্যমে এই স্থায়ী জলাবদ্ধতা সম্পূর্ণরূপে নিরসন হবে।


এই অঞ্চলে মানুষদের পানি বাহিত রোগ, গৃহপালিত পশু, সাপ আর ব্যাঙকে তাদের নিত্যসঙ্গী হতে দেয়া যাবেনা। নদীর নাব্যতা ফেরাতে হলে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) এর বিকল্প নেই এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে যথেষ্ট আন্তরিক থেকে সফলতার পরিচয় দিতে হবে। তাছাড়া নদী খনন করে পর্যাপ্ত গভীরতা নিশ্চিত করা ও কেউ নদী দখলকারী থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের খরচের সঠিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। কোন প্রকারের অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিকে কোন অবস্থাতেই প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। এভাবেই ভবদহ অঞ্চলের মানুষদের জীবন থেকে চিরতরে জলাবদ্ধতার অভিশাপ ঘোচানো সম্ভব।



মোঃ নাজমুল হাসান: শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।


Email: pressnazmulbd@gmail.com

আরও খবর

67d188677ba12-120325071311.webp
ঈদের পোশাক বাজারে লাগামহীন দাম

২ দিন ১ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে




deshchitro-67ca00e5413bc-070325020909.webp
মেডিক্যাল ডায়াগনস্টিক ফি কমানো জরুরি।

৭ দিন ১৮ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে


67c99e016775f-060325070713.webp
মাটি দূষণ রোধ করা প্রয়োজন

৮ দিন ৫ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে


deshchitro-67c71dbaad111-040325093522.webp
Health Benefits of Fasting from a Medical Perspective

৯ দিন ২৩ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে


67c681e4e17a8-040325103028.webp
রমজান মাসে যে আমলে জীবনের গুণাহ মাফ হয়

১০ দিন ১০ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে