এক মাসের অচলাবস্থা কাটিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ রবিবার (১৮ আগস্ট) থেকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজ থেকে খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও পুরোদমে চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো নতুন সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ১১ সেপ্টেম্বর শুরু হবে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন বা প্রচলিত অর্থে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চার দিন মূল্যায়ন কার্যক্রম হওয়ার পর তা আটকে যায়। কবে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন শুরু হবে তা নিশ্চিত নয়।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গত ১৫ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনায় রোববার (১৮ আগস্ট) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানায়।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা স্কুলে স্কুলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। স্কুলের গেটে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইডি কার্ড ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে যেন প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্কুলের শিক্ষার্থী পরিবহনে যানবাহনগুলোকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। অভিভাবকদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় তার সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর জন্য এসএমএস দেওয়া হয়েছে।
তবে, রবিবার খুললেও ক্লাস হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কারণ শীর্ষ পদগুলো শূন্য থাকায় ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্তই নিতে পারেনি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। আবার ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ শিক্ষার্থীদের সব দাবি দাওয়া পূরণ না হাওয়ায় তারা ক্লাসে ফিরবেন কি না তা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষাকার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে কি না তা নিয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। উপাচার্যের পদত্যাগের পর মূলত স্থবির রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম। একই অবস্থায় বিরাজ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কতগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হবে। দলীয় পরিচালনা কমিটিগুলো রেখে কতখানি স্বাভাবিক রাখা যাবে, সেটি ভেবে দেখতে হবে। আবার সংস্কারের ক্ষেত্রেও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জেএসসির মতো পরীক্ষার বোঝা যেন আবার না আসে। শিক্ষাক্রম যুগোপযোগী হতে পারে, কিন্তু পরীক্ষার বোঝা যেন না ঢোকে।
রাশেদা কে চৌধূরী মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগ হয়তো একটি প্রক্রিয়ার বিষয়।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচল রাখার জন্য অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত।
সর্বজনীন প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনে ১ জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে যায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস-পরীক্ষা। আর কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানায় আইএসপিআর।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানায়, গত ৭ আগস্ট থেকে অনেক প্রতিষ্ঠানে ক্লাস হচ্ছিল। তবে উপস্থিতি কম ছিল। অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তার শঙ্কা ছিল। পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হয়ে আসায় রোববার থেকে স্কুল-কলেজে যথারীতি ক্লাস হবে।
মাধ্যমিক স্তরের মাদ্রাসা, কামিল ও ফাজিলে যথারীতি ক্লাস চালু হবে বলে জানিয়েছে মাদ্রাসা অধিদপ্তর এবং ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই নির্দেশনা দিয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরও।
৮ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ০ মিনিট আগে