অবশেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলো জিল্লুর রহমানকে। সোমবার (১৬ জুন) গভীর রাতে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন থানা পুলিশ। এর আগে জিল্লুর রহমানের মেয়ে রিয়ামনি তার বাবা অপহরণ হয়েছে বলে সাইদুল ইসলামের নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অপহরণের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন সাইদুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের মোংলাকুটি-হক বাজারে।
সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে জিল্লুর রহমান ও সাইদুল ইসলাম। তারা আপন দুই ভাই। সাইদুল ইসলাম জিল্লুর রহমানকে মাদকাসক্ত শঙ্কায় রোববার (১৫জুন) গভীর রাতে রংপুর নগরীর স্বপ্ন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। ভর্তির পর নিরাময় কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানতে পারেন জিল্লুর রহমান মাদকাসক্ত নন। পরে ছাড়পত্র দিয়ে জিল্লুর রহমানকে ছেড়ে দেন তারা।
এদিকে জিল্লুর রহমানের মেয়ে রিয়ামনি তার বাবা অপহরণ হয়েছে বলে সাইদুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে পীরগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহ আলম সরকার বাদী, বিবাদী ও নিরাময় কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে থানায় ডেকে নেন। পরে পীরগাছা থানা পুলিশ ইউপি সদস্য সুলতান মিয়ার জিম্মায় জিল্লুর রহমানকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
স্বপ্ন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান বলেন, জিল্লুর রহমানের ভাই সাইদুল ইসলাম মাদকাসক্ত শঙ্কায় আমাদের কেন্দ্রে ভর্তি করান। তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানতে পারি জিল্লুর রহমান মাদকাসক্ত নন। পরে ছাড়পত্র দিয়ে জিল্লুর রহমানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইউপি সদস্য সুলতান মিয়া জানান, আমি জামিনদার হিসেবে জিল্লুর রহমানকে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
জিল্লুর রহমানকে অপহরণ করা হয়েছিল কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, অপহরণ কিনা-জানিনা তবে আমাকে মাইক্রোবাসে রংপুরে নিয়ে গিয়েছে। আমার কোন ক্ষয়ক্ষতি করেননি তারা।
সাইদুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই জিল্লুর রহমান। বেশ কয়েকদিন থেকে তার চলাফেরা অস্বাভাবিক মনে হয়েছিল তাই তার মেয়ে জামাই ও প্রতিবেশীকে অবগত করে তাকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাই। এর আগে আমার ভাই মসজিদের মেহরাম ভেঙেছে, আমার পেটে ছুরি মেরে গুরুত্বর আহত করেন। তিনি আরও বলেন, কারো ষড়যন্ত্রে পড়ে আমার নামে মিথ্যা অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন তার মেয়ে রিয়ামনি।
অভিযোগের পর অভিযোগকারী রিয়ামনির মোবাইল নম্বর বন্ধ ছিল। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পীরগাছা থানা ওসি (তদন্ত) নাহিদ হোসেন বলেন, জিল্লুর রহমান স্বেচ্ছায় বাড়ি যেতে চাওয়ায় কারো কোন অভিযোগ না থাকায় ইউপি সদস্য সুলতান মিয়ার মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।