◾মোহাম্মদ ইয়াছিন ইসলাম : বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন শব্দটির সাথে বোধহয় খুব বেশিই পরিচিত। বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস থেকে অর্ধশত বছর পার হলেও আন্দোলন শব্দটি বাংলাদেশের জনগণের সাথে ওতোপ্রোতভাবে মিশে আছে। প্রতিটি আন্দোলন একটি করে পরিবর্তন নিয়ে আসে। এই পরিবর্তন হতে পারে ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক। কখনো আন্দোলন ব্যর্থ হয় আবার কখনো সফল। সফল আন্দোলন তখনি সংঘটিত হয় যখন সে আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা এবং যৌক্তিক দাবি থাকে।
বাংলাদেশ সৃষ্টির আগেও সফল আন্দোলনের সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের যেটাই আজকের বাংলাদেশ। সফল আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি বাংলা ভাষা এবং সর্বোপরি বাংলাদেশ নামক একটি দেশ। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর থেকে ২০২৪ অব্ধি ঘটেছে এমন বহু আন্দোলন। তবে সেগুলো দেশ সংস্কারের আন্দোলন এবং অধিকার আদায়ের আন্দোলন। আন্দোলন শব্দের অর্থ ই হচ্ছে দ্ব্যর্থতা নিরসন সুতরাং এই শব্দার্থ ই অনেক কিছু বলে দেয়। আমি সর্বদাই আন্দোলনকে দেখি ধনাত্মকভাবে। হয়তো পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।
বিগত প্রায় দেড় যুগ আওয়ামীলীগের শাসন আমলেও আন্দোলন হয়েছে। তবে সেগুলো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দমন করা হয়েছে। অধিকার আদায়ে বাংলাদেশে আন্দোলনের বিকল্প নেই কেননা এখানে অনিয়মটাই একটি সুসংগঠিত নিয়ম। সুতরাং আন্দোলন দমন করাটা মানুষের মত প্রকাশের অধিকারকে ক্ষুন্ন করার সামিল এবং ঘটমান অনিয়মকে অলিখিতভাবে প্রশ্রয় দেয়া।
সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামীলীগ সরকার। এরপর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রফেসর ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এক নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশের জনগন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে পূর্ববর্তী সময়ের করে যাওয়া সকল অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অপরাজনীতির মূলোৎপাটন। বদলে যাওয়া সময়ে দেশের প্রতিটি সেক্টর চাচ্ছে ঢেলে সাজাতে। সকলের প্রত্যাশার পারদ অতি উঁচু। কেননা মানুষ তার অধিকার চাওয়ার অধিকার পেয়েছে। তাইতো বিপ্লব পরবর্তী রাজধানীকে বলা যেতে পারে আন্দোলনের নগরী। কিছু উদ্দ্যেশ্য প্রনোদিত আন্দোলন ব্যতীত প্রায় সকল আন্দোলন ই দেশ সংস্কারের এবং অনিয়ম শুধরে নিয়মে ফেরার আকুলতা।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত অনিয়ম সংশোধনে এবং প্রাপ্য অধিকার আদায়ের জন্যই রাস্তায় নামতে দেখা যায়। টুটিচেপে ধরা একটি জাতি যখন বলার সুযোগ এবং সাহস পায় তখন তাদের আবদার, আকাঙ্ক্ষাও আকাশচুম্বী হয়। দীর্ঘদিনের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার কন্ঠস্বর উচ্চারিত হয় রাজধানীর রাজপথে। আমি আন্দোলনকে সমর্থন করি কেননা আন্দোলন মানেই সংস্কারের দাবি। তবে হ্যা অযৌক্তিক আন্দোলন এবং যে আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নেই সেই আন্দোলন অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার অবশ্যই সবচেয়ে উত্তম।
রাজধানী ঢাকা যেন আন্দোলনের নগরী। কর্মদিবসে আন্দোলনে যানজটে চরম ভোগান্তি পোহায় সাধারণ জনগন। অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আন্দোলন ব্যতিরেকে আমি আন্দোলনের সম্ভাবনাই দেখছি। কেননা আন্দোলন মানে সংস্কারের দাবি আর সংস্কার মানে দেশ ও জাতির উন্নতি। পরিবর্তন আসুক মানুষের মানসিকতায় এবং অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাওয়া কথা বলার অধিকার এবং স্বাধীনতা অমলিন থাকুক। কেননা যৌক্তিক সংস্কার এবং পরিবর্তনগুলোই হলো আগামীর বাংলাদেশের সম্ভাবনা।
» মোহাম্মদ ইয়াছিন ইসলাম
তরুণ লেখক ও সংগঠক
১ দিন ৪ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
১ দিন ৪ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে
৫ দিন ৩ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
৫ দিন ১১ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৬ দিন ২১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
৭ দিন ৮ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৯ দিন ২ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
৯ দিন ১৩ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে