◾ আহাম্মদ উল্লাহ || তরুণ্যের শক্তিই পারে পুরাতন সমাজব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে নতুন সমাজব্যবস্থা গড়তে। সমাজের সকল স্তরে সুশাসন নিশ্চিত করতে বৈষম্য দূর করার কারিগরি তরুণরা। দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সামাজিক অঙ্গনে তরুণেরা কাজ করার মাধ্যমে দেশ গঠনের যোগ্য উত্তরসূরী হিসাবে অগ্নিগিরির মত নিজেদের বিস্ফোরিত করেছে । দেশ ও সমাজ গঠনের আর্দশ কাজটি তরুণ্যে শক্তিবলে পরিচালিত করতে তরুণ্যেশক্তির সূর্যদয় সমাজে নিম্নস্তরে অন্ধকারে থাকা মানুষের জীবনে আলো পৌঁছে দিবে।
তারুণ্য মানেই ভিন্ন কিছু, তারুণ্য মানেই সফলতা। তরুণ প্রজন্মের দৃঢ় প্রত্যয়, সাহস, নেতৃত্ব, পরিশ্রম ও ত্যাগ-তিতিক্ষায় স্বেচ্ছাসেবার অনন্য নজিরবিহীন কার্যক্রম গঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্বেচ্ছাসেবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সমাজের মানুষের প্রয়োজনে তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা নিবেদিত প্রাণ। প্রতিবছর বন্যা পরিস্থিতিতে তারুণ্যেশক্তি দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটি গেছে বানবাসীদের কাছে।সারাদেশ জুড়ে তাহবিল সংগ্রহ, শুকনা খাবার ক্রয়, পোশাক সংগ্রহ সহ নানা রকম কার্যক্রমে তাদের দেখা গেছে। উদ্ধার কাজে স্বেচ্ছাসেবকদের তৎপরতা ছিল ব্যাপক। সরকারি কোনো প্রকার সাহায্য ছাড়া বন্যাকবলিত মানুষের জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ ছিল নজরকাড়া।
প্রতিবছর শীতে তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা রাস্তায় ঘুরে ঘুরে শীতার্থ মানুষের জন্য কম্বল, শীতের পোশাক বিতরণের কাজ প্রশংসনীয়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পূর্নবাসন ব্যবস্থা করতে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রথম উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। তাছাড়াও দেশে ইদ, রোজা , পূজা নানা রকম ধর্মীয় উৎসবে স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ উদ্যোগে ধর্মপ্রাণ মানুষের উৎসব উৎযাপন নির্বিঘ্ন করতে নিরলস পরিশ্রম করে যায়। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উধ্বগতি অবস্থায় যেখানে স্বল্প আয়ের মানুষরা দিনে এনে দিনে খেতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে স্বেচ্ছাসেবকরা কমদামে পণ্য,সবজি,মাছ,মাংস বিক্রির উদ্যোগ গ্রহন করেছে। সমাজের মানুষদের জীবন নিরাপত্তা দিতে স্বেচ্ছাসেবকদের তৎপরতা ঈর্ষনীয়।
রক্তদানের মত মহৎ কাজটি স্বেচ্ছাসেবকরা করে। দিন রাতের যেকোনো সময়, কাজ ফেলে রেখে, নিজ অর্থ ব্যয় করে মানুষকে রক্ত দিতে ছুটে যায় হসপিটালগুলোতে। বৃক্ষরোপন করা, বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তার জন্য কমিউনিটি গড়ে তোলা,পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করে কাজ করে থাকে। পথের প্রাণীদের নিরাপত্তা দেওয়া, তাদের চিকিৎসা, খাদ্য, নিরাপদ আবাসস্থল ব্যবস্থার জন্য একদল স্বেচ্ছাসেবকরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আমাদের সমাজের অবহেলিত এক শ্রেণি ছিন্নমূল শিশু। এদের কারো পরিবার পরিজন থাকে, কারো শুধু বাবা কিংবা মা থাকে, কিছুক্ষেত্রে দেখা যায় এদের কারো থাকে না। ফ্লাইওভার নিচে, ব্রিজ, রেলস্টেশন, রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় এদের থাকতে দেখা যায়। শিক্ষার আলো থেকে দূরে পথশিশুরা। সমাজের অবহেলিত পথের শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, এনজিও এর সহয়তা নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে স্বেচ্ছাসেবকদের কাজের ছাপ রয়েছে, মানবিকতার দৃষ্টান্ত রয়েছে।
সমাজের তরুণদের স্বেচ্ছাসেবায় কাজের পরিধি বিস্তৃত। তরুণরা থেকে গেলে সমাজ থেকে যাবে।সমাজের অন্ধকার আরো জেঁকে বসবে। আর্দশ দেশ ও সমাজ গঠনে তরুণদের উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।যাদের হাতে সমাজের প্রাণ, বৈষম্যদূর করার চাবিকাঠি থাকে তাদের নিষ্প্রাণ হতে দেওয়া যাবে না।
একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে তরুণদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সুন্দর হতে হবে। তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের ছোট করে দেখা কিংবা খারাপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। তাদের কাজে এগিয়ে আসতে হবে, সাহায্য জন্য হাত বাড়াতে হবে। তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা সমাজের প্রাণ। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। সরকার কর্তৃক বিনামূল্যেয় তাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষন ব্যবস্থা করা গেলে স্বেচ্ছাসেবকদের কাজের তৎপরতা আরো বৃদ্ধি পাবো। মানোন্নয়ন আরো বৃদ্ধি পাবে। সমাজসেবা মূলক এ সকল কাজের মাধ্যমে মানুষের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়, বন্ধন অটুট হয়। সমাজে তারুণ্যশক্তি যত তৎপর থাকবে সমাজের মানুষ তত শান্তি ও নির্বিঘ্নে থাকতে পারবে। সমাজের অন্ধকার কেটে যাবে। এই সকল সহযোগিতা মূলককাজ সমাজের অন্য মানুষের উপর প্রভাব ফেলে। তাদের ভেতরের অন্ধকার,জড়তা দূর করে সমাজকে আরো এগিয়ে নিয়ে যায়।
» লেখক : আহাম্মদ উল্লাহ
শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ, ঢাকা কলেজ
১ দিন ৪ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
১ দিন ৪ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৫ দিন ৩ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
৫ দিন ১১ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে
৬ দিন ২১ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে
৭ দিন ৮ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
৯ দিন ২ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
৯ দিন ১৩ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে