উচ্চমূল্যের ফাঁদে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা: আস্থা হারাচ্ছেন ট্রাম্প পীরগাছা সরকারি কলেজের প্রথম অধ্যক্ষের বিদায় ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বগ্রহণ গরমে পানি পানের উপকারিতা মোংলার ভ্যান চালকের মরদেহ মোড়েলগঞ্জের মাছের ঘের থেকে উদ্ধার নিরীহ লোককে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি ‘মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়াই ইশরাককে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে কমিউনিটি অ্যাকশন মিটিং ক্ষেতলালে কাফি হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত চিলমারীতে আইনগত সহায়তা দিবস-২০২৫ অনুষ্ঠিত সুন্দরবনে কোস্ট গার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ বিল্লাল ডাকাত আটক শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ কারাগারে ঝিনাইগাতীতে কূপ খনন করতে গিয়ে নিহত ২ পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য প্রদান ডোমারের সাবেক চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ গ্রেপ্তার সাতক্ষীরায় জাতীয় আইনগত সহায়তা এইড দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে ছাত্রদলের মারধর: বিভাগে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ সাতক্ষীরায় ট্রাকের চাপায় কলেজ ছাত্র নাঈম নিহত ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য জাতীয় সনদ তৈরি: আলী রীয়াজ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগ পবিপ্রবিতে ভিএসএ-র আয়োজনে বিনামূল্যে ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল সংঘর্ষ, নিহত ৫৪

প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় হারিয়ে যাওয়া মানবিক সম্পর্ক

সম্পাদকীয় ডেস্ক - প্রতিনিধি

প্রকাশের সময়: 17-12-2024 01:16:07 am

তরুণ লেখক হৃদয় পান্ডে। © ফাইল ছবি


◾হৃদয় পান্ডে  || মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি আজ অপরিহার্য একটি অংশে পরিণত হয়েছে। যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন—সবখানে প্রযুক্তির প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজতর ও গতিময় করেছে, দূরত্ব কমিয়ে দিয়েছে, এবং জ্ঞান আহরণকে সহজলভ্য করেছে। কিন্তু এই অগ্রগতির বিপরীতে আমাদের জীবনে মানবিক সম্পর্কের এক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। একসময় যখন পরিবার, বন্ধু, এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে সময় কাটানো ছিল জীবনের স্বাভাবিক প্রবাহ, আজ তা স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ভার্চুয়াল বাস্তবতায় ঢাকা পড়েছে। প্রযুক্তি মানুষকে কাছাকাছি এনেছে, কিন্তু একইসঙ্গে অন্তরের দূরত্ব বাড়িয়েছে।


প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় যে পরিবর্তনগুলো ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সম্পর্কের সরলতা হারিয়ে যাওয়া। একসময় মানুষ সামনাসামনি দেখা করে, কথা বলে, এবং সময় কাটিয়ে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করত। সম্পর্কের মধ্যে ছিল আন্তরিকতা এবং আবেগের গভীরতা। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তি সেই সরলতাকে প্রতিস্থাপন করেছে বার্তা, ইমোজি, বা ভিডিও কলের মাধ্যমে। আবেগের স্পর্শ এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া দিন দিন সীমিত হয়ে পড়ছে ভার্চুয়াল যোগাযোগের ফ্রেমে। এই পরিবর্তন সহজতার আড়ালে সম্পর্ককে যান্ত্রিক করে তুলছে, যেখানে মানসিক সংযোগের জায়গায় তৈরি হচ্ছে এক ধরনের ফাঁকা অনুভূতি।


বিশেষত পরিবারের ভেতর সম্পর্কের বাঁধন আলগা হচ্ছে। একসময় পরিবারের সবাই একত্রে বসে খাবার খেত, পারিবারিক গল্প শুনত এবং নিজেদের মাঝে স্নেহ ও মমতার আদান-প্রদান করত। কিন্তু প্রযুক্তির প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরতা এই সংস্কৃতিকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা এখন এক ছাদের নিচে থেকেও একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন। টিভি, স্মার্টফোন, এবং অনলাইন গেমস পারিবারিক মুহূর্তগুলোকে দখল করে নিয়েছে। এর ফলে পরিবারের ভেতর স্নেহ, মমতা এবং সহমর্মিতার মতো গুণাবলীর চর্চা হ্রাস পাচ্ছে।


শুধু পরিবার নয়, প্রযুক্তি বন্ধুত্বের সম্পর্কেও প্রভাব ফেলেছে। আগেকার দিনে বন্ধুরা একত্রে আড্ডা দিত, খেলত, বা ভ্রমণে বের হতো। সেই আন্তরিক সম্পর্কগুলো আজ সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট, লাইক, এবং চ্যাটে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ভার্চুয়াল যোগাযোগের এই সহজলভ্যতা বন্ধুত্বের গভীরতা এবং আন্তরিকতাকে ক্রমশ কমিয়ে দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এই কৃত্রিম যোগাযোগ মানুষকে একাকীত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।


প্রযুক্তি কর্মক্ষেত্রেও মানবিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করেছে। আগে কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা, কাজ ভাগাভাগি করা, এবং একত্রে কাজ করার একটি সংস্কৃতি ছিল। আজ সেই স্থান নিয়েছে ইমেল, মেসেজিং অ্যাপ এবং ভার্চুয়াল মিটিং। এর ফলে অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক পেশাগত সীমার মধ্যে আটকে যাচ্ছে এবং সহযোগিতার মনোভাব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


শিক্ষাক্ষেত্রেও এই প্রভাব স্পষ্ট। আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, যা জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করত। এখন অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম এবং ভার্চুয়াল ক্লাসরুম শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছে। এতে করে শিক্ষার মানবিক দিকটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা অনেক সময় অনুপ্রাণিত হতে পারছে না।


প্রযুক্তি আমাদের জীবনে এমন এক নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে যে আমরা প্রকৃত সংযোগের গুরুত্ব ভুলে যাচ্ছি। একসময় যে গ্রামীণ বা সামাজিক উৎসবগুলো মানুষকে একত্রিত করত, তা আজ অনেকটাই বিলীন। ভার্চুয়াল দুনিয়ার প্রতি আমাদের আসক্তি আমাদের সমাজের ঐতিহ্যবাহী সম্পর্কগুলোকে ক্রমশ দুর্বল করে দিচ্ছে।


তবে প্রযুক্তির এই নেতিবাচক প্রভাব রোধে আমাদের সচেতনতা এবং দায়িত্বশীলতা অত্যন্ত জরুরি। প্রথমত, আমাদের জীবনে প্রযুক্তি এবং সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। প্রতিদিন একত্রে খাওয়া, গল্প করা, কিংবা কোনো সাধারণ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে পারিবারিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা যেতে পারে।


দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়ার ভার্চুয়াল সম্পর্ক কখনোই সশরীর সাক্ষাতের উষ্ণতা এবং আন্তরিকতার বিকল্প নয়। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। প্রযুক্তিকে আমরা কাজে লাগাতে পারি, কিন্তু তা যেন আমাদের সম্পর্কের প্রকৃত গুণগত মান কমিয়ে না দেয়।


তৃতীয়ত, আমাদের উচিত তরুণ প্রজন্মকে মানবিক সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষিত করা। তাদের শেখাতে হবে যে, প্রযুক্তি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও তা কখনোই মানবিক মূল্যবোধের স্থান নিতে পারে না। শিক্ষাব্যবস্থায় সম্পর্কের মূল্যবোধ এবং সহমর্মিতার চর্চা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এভাবেই আমরা প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকগুলো কাজে লাগিয়ে সম্পর্কের উষ্ণতা এবং মানবিকতাকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারব।


প্রযুক্তির এই যুগে মানবিক সম্পর্ক রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। প্রযুক্তি যতই আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠুক না কেন, প্রকৃত মানবিক সম্পর্কই জীবনের প্রকৃত রসদ। তাই আসুন আমরা প্রযুক্তিকে ব্যবহার করি আমাদের সম্পর্কগুলো আরও সমৃদ্ধ করার জন্য, দূরত্ব সৃষ্টি করার জন্য নয়। একসঙ্গে সময় কাটানো, কথা বলা, এবং অনুভূতির আদান-প্রদান করার যে আনন্দ, তা প্রযুক্তি কখনোই দিতে পারবে না। তাই মানবিক সম্পর্কের শিকড়কে শক্তিশালী করে আমরা আমাদের সমাজকে আরও সংবেদনশীল এবং মানবিক করে তুলতে পারি।


» হৃদয় পান্ডে 

তরুণ লেখক ও শিক্ষার্থী 


আরও খবর
deshchitro-6801d6dae401c-180425103642.webp
Take early steps to resolve waterlogging in Dhaka

১০ দিন ৭ ঘন্টা ২ মিনিট আগে




deshchitro-67f32034a3e9c-070425064540.webp
সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হোক

২১ দিন ১০ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে


67f00c4be906d-040425104355.webp
অবহেলার পাত্র নাকি সভ্যতার স্থপতি?

২৩ দিন ১৮ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে


deshchitro-67e77b5f5d7ad-290325104727.webp
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঈদ ভাবনা

৩০ দিন ৬ ঘন্টা ৫২ মিনিট আগে


67e68cb231674-280325054906.webp
ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বার্তা

৩০ দিন ২৩ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে