আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বকশীগঞ্জ খয়ের উদ্দিন মাদ্রাসা মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপির অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ওই ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগরের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম সওদাগর এক সময় বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ২০১৫ সালের ১২ জুন উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি তৎকালীন স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। পরবর্তীতে নজরুল ইসলাম সওদাগর বকশীগঞ্জ পৌর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক পদে আসীন হন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মানিক সওদাগর। পৌর বিএনপির আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম প্রিন্সের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক এমপি এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। সম্মেলনে বকশীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খান সজীব এবং বকশীগঞ্জ পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম শাকিল তালুকদার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুপুর আড়াইটার দিকে কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে বিএনপির সম্মেলন স্থলে প্রবেশ করেন যুবলীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর। তাঁর পরনে ছিলো পায়জামা-পাঞ্জাবি। সম্মেলন স্থলের একেবারে পশ্চিম পাশে পূর্ব দিকে অন্তত আধাঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে অতিথিদের বক্তব্য শোনেন তিনি। এ সময় সম্মেলনে আগত লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরলে, তাঁর সহযোগিরা লোকজনদের সরিয়ে দেন। বিএনপির সম্মেলনে যুবলীগ নেতার উপস্থিত হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে, সম্মেলনে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে এক ধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি ঘোলাটের দিকে যাওয়ার আশঙ্কায় নজরুল ইসলাম সওদাগরকে তাঁর এক সহযোগী মুখোশ পরিয়ে দেন। এতে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সম্মেলন স্থলের উত্তর পাশে সামিয়ানার বাইরে চলে যান নজরুল ইসলাম সওদাগর। পরে সেখানে তিনি বেশকিছু সহযোগীর সঙ্গে খোশগল্পে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবস্থান করেন। পরে লোকচক্ষুর আড়ালে ভিন্ন পথে সম্মেলন স্থল ত্যাগ
নজরুল ইসলাম সওদাগর।
যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম সওদাগরকে ইঙ্গিত করে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, 'একসময় যুবদলের রাজনীতি করেছেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হয়েছিলেন ওই যুবলীগ। বিএনপি নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করেছে। নেতা-কর্মীদের গায়েবি মামলা দিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করেছে। এরপরও কীভাবে প্রকাশ্যে ঘোরে বেড়াচ্ছেন। আগামী তিন দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের দোসরদের গ্রেপ্তার করতে হবে। যদি গ্রেপ্তার না করা হয়। এর দায়ভার প্রশাসনকেই নিতে হবে। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে আওয়ামী দোসরদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।'
প্রত্যক্ষদর্শী বিএনপি সমর্থক হাবিব মিয়া, মঞ্জু আহমেদ, সোহেল রানা, মিজান, আকবর আলীসহ অনেকেই বলেন, '১০-১৫ জন সহযোগী নিয়ে যুবলীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর দুপুরে বিএনপির সম্মেলনে আসেন। সম্মেলন স্থলের পশ্চিম পাশে কিছুক্ষুণ দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে সামিয়ানার বাইরে চেয়ার বসে অবস্থান করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য দেওয়ায় তিনি সম্মেলন স্থল থেকে শটকে পড়েন।'
যুবলীগ নেতা হয়ে বিএনপির সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে বকশীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম সওদাগরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তিনি কল রিসিভ না করায় তাঁর মন্তব্য নেওয়া যায়নি।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, 'পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় কোনো মামলা নেই। তদন্তে যদি তাঁর নাম আসে, তখন তো তাকে গ্রেপ্তার করতেই হবে।'
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো বকশীগঞ্জ পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম সওদাগর প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে পরাজিত হন তিনি।
৮ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
১২ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
১২ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে