লাখাইয়ে বিক্রি হচ্ছে ক্ষতিকর রং ও ক্যামিকেল যুক্ত আইসক্রিম, স্বাস্থ্য ঝুকিতে কোমলমতি শিশুরা।
লাখাইয়ের কারখানায় রং আর ক্যামিকেল মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে আইসক্রিম। এসব আইসক্রিম বাহারি মোড়কে সরবরাহ করা হয় উপজেলার বিভিন্ন দোকানে,এবং ফুটপাতের হকারদের কাছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইসক্রিম তৈরি করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর অনুমোদন লাগলেও,উপজেলার একটি আইসক্রিম কারখানারও নেই এই অনুমোদন।
সরেজমিন আইসক্রিম কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে নোংরা পানি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে আইসক্রিম। আকর্ষণীয় করতে মেশানো হচ্ছে কাপড়ের রঙ। চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর ঘন চিনি, আম ও লিচুর স্বাদের জন্য কেমিকেল এবং গরুর দুধের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ভেজাল গুঁড়া দুধ। অপরিচ্ছন্ন বালতিতে খালি হাতেই মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক সব উপকরণ।
অস্বাস্থ্যকর এসব আইসক্রিম বাহারি সব মোড়কে সরবরাহ করা হচ্ছে জেলার বিভিন্ন দোকানে। প্রচণ্ড দাবদাহে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য শিশুদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আইসক্রিম মুখে দেয়। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে তারা।
অনুমোদন না থাকা এবং আইসক্রিমে অস্বাস্থ্যকর উপাদান ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন কারখানার মালিকরা।
এক আইসক্রিম কারখানার মালিক বলেন, আইসক্রিম দেখতে সুন্দর ও স্বাদ না হলে মানুষ খেতে চায় না। তাই আইসক্রিমে আম ও লিচুর স্বাদের জন্য আমরা কেমিকেল ব্যবহার করি।
অস্বাস্থ্যকর এসব আইসক্রিমের ব্যাপারে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ অধিদপ্তর এর মতে, ছোট আইসক্রিম কারখানাগুলোতে চিনির পরিবর্তে ঘন চিনি এবং নিম্নমানের রঙ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
লাখাই উপজেলার সেনেটারী ইন্সপেক্টর বিধান সোম বলেন , ‘আইসক্রিম কারখানাগুলোতে অনেক সময় চিনির পরিবর্তে ঘন চিনি বা সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ঘন চিনি খাওয়ার ফলে মানুষের দৃষ্টিহীনতা ও নিদ্রাহীনতা দেখা দেয়। এ ছাড়া অনেক সময় তারা আইসক্রিমে রঙ ব্যবহার করে থাকে। এই রঙ মানুষের লিভার সিরোসিস ও কিডনি ডিজিজের জন্য দায়ী। এ ছাড়া দীর্ঘসময় এ রং খেতে থাকলে ক্যানসার হয়ে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।