সুন্দরবনে করিম শরীফ বাহিনীর ২ সহযোগী আটক, অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার ঈশ্বরগঞ্জে ওয়াইপিএজির ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বাংলাদেশের দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের ভাষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠ আজ লালপুরে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের দিন বদলে কাজ করবে : সাবেক এমপি মোশারফ বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সামাজিক ভাবে হেয় ,অন্যায্য ভাবে আল্টিমেটামের তীব্র প্রতিবাদ কেন্দ্র ঘোষিত শ্রমিক যোগাযোগ পক্ষ পালন বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত আনুলিয়ায় একশত পরিবারের রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় আওয়ামীলীগ নেতার অভিযোগ পীরগাছায় হেযবুত তওহীদ কর্তৃক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলা শাখার দায়িত্বশীল প্রশিক্ষণ কর্মশালা! সোনাইমুড়িতে বৃদ্ধাকে হত্যা আবারও বাগযুদ্ধ: বাড়বে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন? লালপুরে বিএডিসির 'পানাসি' সেচ উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন ইউএনও কুবির ভর্তিযুদ্ধ কাল; আসনপ্রতি লড়বেন ‘এ’ ইউনিটে ৯৩ ও ‘সি’ ইউনিটে ৪১ শিল্পায়নের নামে হাইল হাওরে পরিবেশ বিধ্বংসী প্রকল্প, ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয়রা

সুন্দরবনে দস্যু আতঙ্ক, কোস্ট গার্ডের অভিযানে বনজীবিদের স্বস্তি

ছবি সংগৃহীত

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে আবারো বেড়েছে দস্যু আতঙ্ক। দস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণের কারণে দস্যু আতঙ্ক কাটিয়ে কিছুদিন হাঁপ ছেড়েছিল সুন্দরবন। স্বস্তি ফিরেছিল বনের উপরে নির্ভরশীল মানুষের জীবনে।

কিন্তু আবারও মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে দস্যুরা। এতে সুন্দরবনের মূর্তিমান আতঙ্ক বনদস্যু বাহিনীর কারণে বনে যেতে ভয় পাচ্ছেন জেলে বাওয়ালিরা। তবে কোস্টগার্ডের সাঁড়াশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এতে তৎপরতা কমেছে বনদস্যু বাহিনীর। স্বস্তি ফিরেছে উপকূলের বনজীবীদের মাঝে।

বনবিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সূত্র বলছে, সুন্দরবনের বনদস্যুরা কয়েক দফায় আত্মসমর্পণ করে আলোর পথে ফিরেছিল। ২০১৬ সালে সুন্দরবনের সাতটি বনদস্যু দল একসঙ্গে আত্মসমর্পণ করে। সে সময় ৩২ জন বনদস্যু অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অঙ্গীকার করে। এরপর ২০১৮ সালের পহেলা নভেম্বর ৯টি বনদস্যু বাহিনীর ৫৭ জন বনদস্যু আত্মসমর্পণ করে। পরে আরেক দফায় ২০১৯ সালের পহেলা নভেম্বর আরো ২৫ জন বনদস্যু আত্মসমর্পণ করে। প্রায় শতাধিকের বেশি বনদস্যু আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে, যার কারণে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হওয়ার পথে অগ্রসর হয়।

তবে গত তিন মাসে জেলে বাওয়ালীদের অপহরণের মত ঘটনাগুলো আবারো জানান দিচ্ছে সুন্দরবনে নতুন দস্যু বাহীনির উত্থান ঘটেছে।

সূত্র বলছে, গত তিন মাসে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০ জনেরও বেশি জেলে ও মৌয়াল অপহরণের শিকার হয়েছেন। মুক্তিপণের জন্য তাদের কাছে দাবী করা হয়েছে অন্তত ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কোস্ট গার্ড সফল অভিযানের মাধ্যমে জেলে বাওয়ালিদেরকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট একাধিক জেলে ও বনজীবিরা বলছেন, বর্তমানে বিভিন্ন নামে নতুন বনদস্যু বাহিনী গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে করিম শরীফ বাহিনী, দয়াল বাহিনী সহ অন্তত ৫-৭ টি ডাকাত দল রয়েছে। নৌকায় করে এসব বনদস্যুরা সুন্দরবনের গহীনে অবস্থান করে। বনের বিভিন্ন পয়েন্টে রয়েছে এদের ডেরা। সুযোগ বুঝে এই বনদস্যুরা কখনো মাছ ধরার ট্রলার কিংবা বনজীবিদের জিম্মি করে। অপহরণের পর বনদস্যু বাহিনীর ডেরায় নিয়ে করা হয় অমানসিক নির্যাতন। অনেকেই মুক্তিপণ দিয়ে সেখান থেকে ছাড়া পেয়েছেন।

বনদস্যুবাহিনীর হাতে অপহরণের শিকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার চেয়ারম্যান মোড়ের এক জেলে বলেন, “সুন্দরবনের যে কয়টি দস্যু বাহিনী এই মুহূর্তে সক্রিয় রয়েছে তার মধ্যে দয়াল বাহিনী অত্যন্ত দুর্ধর্ষ। এই বনদস্যুরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে মাছ ধরার ট্রলারে হামলা করে অপহরণ করে। এরা এতটাই কুখ্যাত যে মুক্তিপণের টাকা না দিলে নির্মম নির্যাতন চালায়। এরা কেউকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিতেও দ্বিধাবোধ করে না”।

সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও বগেরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, বনদস্যুরা সাধারণত বনজীবী কিংবা জেলে বাওয়ালিদের ছদ্মবেশে সুন্দরবনের প্রবেশ করে দস্যুতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব বনদস্যুদের ডাটাবেজ তৈরি করে তাদেরকে ডিজিটালাইজড করতে হবে, যাতে সহজেই তাদেরকে চিহ্নিত করা যায়। এসব দস্যুদের চিহ্নিত করে তাদের সুন্দরবনে যাওয়া আটকাতে হবে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে এবং পরিবারের প্রতিও নজর রাখতে হবে। সুন্দরবনের বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল এবং নজরদারি বাড়াতে হবে। তাদেরকে বিকল্প কর্মসংস্থানের সাথে যুক্ত করতে হবে। সুন্দরবনের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এটি শুধু একটি নিরাপত্তার ইস্যু নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সংকটের দিকেও ইঙ্গিত করছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে এই প্রাকৃতিক সম্পদ ও এর উপর নির্ভরশীল মানুষের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

এদিকে গত ১০ এপ্রিল সুন্দরবনের গহীন হতে বনদস্যু করিম শরীফ বাহিনীর জিম্মি থেকে ৬ নারীসহ ৩৩ জেলেকে উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড। এর আগেও অস্ত্রসহ কয়েকজন দস্যুকেও গ্রেফতার করে কোস্ট গার্ড।

কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেঃ মাহবুব হোসেন বলেন, বিগত দিনে সুন্দরবনের দস্যুতা দমনে কোস্ট গার্ড যেমনি তৎপর ছিলো, তেমনি বর্তমানেও রয়েছে, আগামীতেও এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।


আরও খবর