লাখাইয়ে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে দেশিজাতের পোনামাছ, দেশি মাছ বিলুপ্তির পথে।
লাখাইয়ে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে দেশিজাতের পোনামাছ, দেশি মাছ বিলুপ্তির পথে।
নতুন পানি আগমনের সাথে সাথেই লাখাই উপজেলাব্যাপী দেশীয় মাছ নিধনের মহোৎসব চলছে। এ উৎসবে মেতেছে মৌসুমি জেলেরা। নিধনের প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে- চায়না দূয়ারী, ভেসাল, ছেচনা,বাউলী,চাক, কারেন্টসহ (আঞ্চলিক) নাম না জানা অসংখ্য জাল।
এখনই ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। স্থানীয়দের অভিযোগ- সচেতনতার অভাব আর প্রশাসনের ঢিলেঢালা পদক্ষেপের কারণেই সুযোগ পাচ্ছে জেলেরা। সরকারের মহৎ উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে। তাই প্রশাসনের কড়া হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন তারা।
সরেজমিন, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, সদ্য জন্ম নেয়া ছোট ছোট দেশীয় মাছের পোনা প্রকাশ্যে বিক্রি করছে মাছ ব্যবসায়ীরা। এছারাও মাছের আড়তেও প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে দেশিয় প্রজাতির পোনামাছ। এর মধ্যে রয়েছে শিং, মাগুর,নওলা,কাতল, কই, টাকি, পুঁটি, ভেদা,বেলে, শোল,বোয়ালসহ নানা জাতের মাছ। প্রতিটি মাছের ভাগে কারি কারি ছোট ছোট বিভিন্ন জাতের মাছ। ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে কেজি ওজনে বিক্রি হচ্ছে ওইসব মাছ। কয়েক দিন ধরে প্রতিদিনই এসব মাছ দেখা যাচ্ছে বাজারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বুল্লা বাজারের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, এই ছোট পোনা মাছের জ্বালায় অস্থির। জম্মের আনা আনে জেলেরা। কেউ কিনেও নিতে চায় না। মাঝে মাঝে ফেলে দেয়া লাগে। এছারা, কমদামে বিভিন্ন হোটেলেও দেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক জেলে বলেন, চায়না দূয়ারী,ভেসাল,বাউলী,চাক জাল দিয়ে খালে এই মাছের পোনাগুলো ধরা পড়ছে।
বাজারে মাছ কিনতে বুল্লা বাজারে আসা সিংহগ্রামের মনির বলেন, প্রতিদিনই এসব মাছ বাজারে দেখছি। এভাবে ছোট মাছ ধ্বংস করা হলে অচিরেই দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হবে।
পশ্চিম বুল্লা গ্রামের আরেক ক্রেতা আসাদ বলেন, এভাবে নির্বিচারে দেশীয় ছোট মাছ নিধন হলে ভবিষ্যতে মাছ খুঁজে পাওয়া মুশকিল হবে। তাই এই মাছ মারতে যেসব অবৈধ জাল ব্যবহার করছে তার দৌরাত্ম্য বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী।
ধর্মপুর গ্রামের নাজমুল তালুকদার বলেন, অনেক পোনা মাছ আসে বাজারে, পোনা মাছের জন্য বুল্লাবাজার নিরাপদ ভেবেই মনে হয় এতো পোনা মাছ আসে বাজারে।
৬নং বুল্লা ইউপির জনপ্রতিনিধি নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের উপজেলার বিভিন্ন নদী,খালবিল,পুকুরে দেশিয় প্রজাতির মাছ অবমুক্ত করছি। আর কিছু জেলেরা সামান্য লোভে এমন ধ্বংসের খেলা মেনে নেয়ার মত না। এখনি এ ধরনের অবৈধ জাল বন্ধ করা না গেলে ভবিষ্যতে দেশীয় প্রজাতির মাছ একেবারে বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ কাজে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণার পাশাপাশি প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা অতিরিক্ত মৎস্য কর্মকর্তা কনিক চন্দ্র শর্মা বলেন, চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করার কারনে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে। চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরার জন্য জেলেদেরকে নিরুৎসাহিত করা ও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।এবং খুব দ্রুত এ ব্যাপারে মোবাইল কোর্ট করে অভিযান দিব। তাছাড়া মে মাসের ২৮ তারিখ হইতে এক মাস পর্যন্ত সবধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ, সে ব্যাপারে অবগত করা হবে।