পলাশে ৪১টি পুজা মন্ডপে ব্যস্ত প্রতিমাশিল্পীরা
মোহাম্মদ মিনার হোসেন খান, স্টাফ রিপোর্টার : পলাশ ( নরসিংদী)
নরসিংদীর পলাশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। কারিগরদের দম ফেলার ফুসরৎ নেই। কয়েক দিন বাদেই প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়। তবে গত বছরের চেয়ে কমেছে মন্ডপের সংখ্যা।
উপজেলার পৌর এলাকার পলাশ বাজার মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ পর্যায়ের কাজ। এই মন্দিরের ভেতরে এখন শোভা পাচ্ছে প্রতিমার বড় কাঠাম। বাঁশ-কাঠ আর কাঁদা মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রতিমাগুলো রঙের আঁচড়ে, পরিচ্ছদ ও অলঙ্কারে সজ্জিত হয়ে অপরূপ হয়ে উঠবে।এদিকে সনাতন ধর্মের লোকজন পুজার নতুন পোষাক কেনায় ব্যস্ত।পলাশ উপজেলায় এবছর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মোট ৪১টি দুৃর্গাপুজা। গতবারের চেয়ে একটি কম।
জিনারদী, গজারিয়া,ডাংগা, চরসিন্দুর ও ঘোড়াশাল পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামের মন্দিরে দুর্গা পুজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে বড় প্রতিমার দুর্গা উৎসব হয় রাবান, কুড়াইতলী, বরাবো, বালিয়া, পলাশ বাজার ও ডাঙ্গা মন্দিরে। তবে পূজা মন্ডব সংখ্যা কমেছে, পাশাপাশি কমছে পূজার উৎসব খরচের বাজেট।
ঘোড়াশালের কুমারবাড়ির প্রতিমাশিল্পী জয় কিশোর পাল বলেন, প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছন, খড়, বাঁশ, কাঠ ও মাটিসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে লাভের মুখ দেখা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ ক্রেতারা আগের দামেই প্রতিমা তৈরি করে নিতে চাচ্ছেন। তাছাড়া প্রতিমা শিল্পী আরও জানান, গত বছরের তুলনায় এবার দুর্গা প্রতিমার অর্ডারও কম। আমি ৪ সেট প্রতিমা গড়েছি এখনও কোনো নতুন কোন পূজারী সম্প্রদায়ের দেখা মিলেনি।
পলাশ উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অসিত চন্দ্র দাস এবং পলাশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দত্ত বলেন, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর মহাপঞ্চমী দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু। ২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব। ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী পূজা থেকে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ। আগামী ২ অক্টোবর দশমী পুজা শেষে এবারের দূর্গা পূজার সমাপ্তি ঘটবে। এবার দেবীর আগমন গজে ও প্রস্থান হবে দোলায় চড়ে। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অসিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চন্দ্র দত্ত বলেন, 'এবার ধর্ম মন্ত্রণালয় ও পুজা উদযাপনের কেন্দ্রীয় কমিটি প্রদত্ত নীতিমালা ও সরকারি নীতিমালা যথাযথ পালন করেই দুর্গাপূজা করা হবে।প্রতিটি মন্ডপেই সি সি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিবারের ন্যায় জাতি ধর্ম বর্ণ সবাই মিলেমিশে ও সবার সহযোগিতায় পূজা উদযাপন করা হবে। এ জন্য পলাশ পূজা উদযাপন কমিটি সবার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। প্রসঙ্গত সরকারি আর্থিক সহযোগিতা প্রতিবার সব মন্দিরে করে থাকে, এবারও পাব এ রকম আশ্বাস আমরা পেয়েছি।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্র বক্কর সিদ্দিকী বলেন,এবারের দূর্গাপুজায় আমরা প্রশাশন হতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।সরকারি বিধিমোতাবেক শান্তিপূর্ণভাবে ও সুশৃঙ্খলভাবে যেন প্রতিটা পূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে আমরা তার ব্যবস্থা নিব।ইতোমধ্যে সব রাজনৈতিকদলী নেতৃবৃন্দ ও পলাশ পূজা উদযাপন কমিটির সাথে আমরা সভা করেছি, দূর্গাপুজা যেন সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপিত হয়।এক কথায় আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। পলাশ থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, গত বছরগুলোর মতো পলাশে অনুষ্ঠিত সব দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন পুজা মন্ডপে ফোর্স পাঠিয়ে টহল ব্যবস্থা করেছি।