চৌদ্দগ্রামে আবুল হাশেম জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী বিতরণ দোয়ারাবাজারে সংঘর্ষে আহত যুবকের মৃত্যু চৌদ্দগ্রামে ১১ মার্চ শহীদ দিবস উপলক্ষে ছাত্রশিবিরের ইফতার ও কোরআন উপহার প্রদান নাগরপুরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত অভয়নগরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু বেগমগঞ্জে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাশের মিছিল আর দেখতে চায় না দেশবাসী: জামায়াত আমির নন্দীগ্রামে ওয়ার্ড জামায়াতের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে সব ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার: প্রেস সচিব প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে বাধ্যতামূলক ছুটিতে কুবি শিক্ষক কাজী আনিছ নন্দীগ্রামে গণহত্যা ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা কুবিতে শাহবাগ ও পতিত স্বৈরাচারের দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মাহমুদউল্লাহ কুবিতে উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদের ইফতার মাহফিল কুবি বিএনসিসি প্লাটুনের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত কুবিতে মার্কেটিং বিভাগের ইফতার ও দোয়া মাহফিল সংস্কার করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবেঃ মোংলায় বিএনপি নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে বিজিবি বিএসএফ’র পতাকা বৈঠকে দুই বাংলাদশী নাগরিককে হস্তান্তর শৈলকুপায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত ঝিনাইদহে ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

১ টাকায় রোগী দেখেন মানবিক ডাক্তার সুমাইয়া

দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 12-01-2023 10:49:28 am


◾ সুখবর ও ইতিবাচক ডেস্ক 


মাত্র ১ টাকায় রোগী দেখেন ডা: সুমাইয়া। তাঁর পুরো নাম সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল। বাবার ইচ্ছা পূরণে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন রাজশাহীর এই মেয়ে। 


রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার এলাকার একটি ওষুধের দোকানে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। সেখানেই তিনি প্রতি শনিবার হতে বৃহস্পতিবার রোগী দেখেন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।


বর্তমানে নিত্যপণ্যের দ্রব্যমূল্যের যে উর্ধ্বগতি তাতে এই বাজারে একশত টাকা কিংবা এক হাজার টাকা দিয়েও যখন কিছুই জোটে না সেই সময়ে এক টাকায় মিলছে চিকিৎসা সেবা। রোগী দেখছেন এমবিবিএস পাস করা চিকিৎসক। বিষয়টি কল্পনীয় ও আশ্চর্যজনক হলেও এটি বর্তমানে বাস্তবে পরিণত করেছেন রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা ডা. সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল।


২০১৫ সালে রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সুমাইয়া। বড় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন মেডিকেল ভর্তির। ভাগ্যের নির্মমতায় সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেলেও বুনতে থাকেন স্বপ্নের জাল। এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে। সম্প্রতি এমবিবিএস পাস করে ইন্টানী শেষ করেছেন তিনি। প্রাইভেট একটি ক্লিনিকে চাকরির পাশাপাশি বিসিএস প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর এর পাশাপাশি করছেন জনসেবা।


এ বিষয়ে ডা. সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল বলেন, ‘মূলত আমার বাবার ইচ্ছে ছিল যে আমি যেন জনসেবামূলক কিছু একটা করি। ফ্রিতে মানুষের ট্রিটমেন্ট দেওয়া বা এরকম কিছু করাতে চেয়েছিলেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় এই জনসেবামূলক কাজটি আমি শুরু করেছি। ইচ্ছে আছে, যতদিন আল্লাহর রহমতে বেঁচে থাকি ততদিন এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার।


কার্যক্রম নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবে মাত্র পাঁচ দিন হচ্ছে রোগী দেখা শুরু করেছি। লিফলেট বানানো হয়েছে, কিন্তু এখনও বিলি করাই হয় নি। বিষয়টি এখনো সেভাবে কেউ জানেই না। এক প্রকার এক্সাইটমেন্ট থেকে গত ৭ জানুয়ারি ফেসবুকে লিফলেটসহ একটা পোস্ট করেছিলাম। এতেই অনেকের নজর পড়েছে বলেও জানান এই চিকিৎসক।


ডা. সুমাইয়া বলেন, ফেসবুকে পোস্ট করার পর থেকে অনেকেরই কল পেয়েছি, অনেকে মেসেজও করেছে। অনেকে সাধুবাদ জানাচ্ছে, এগিয়ে যাওয়ার জন্য বলছে। এমনকি একজন শিক্ষক ফোন করে আমার বিস্তারিত শুনে জানতে চাইলেন আমার লক্ষ্য কি। বিসিএস প্রস্তুতির কথা বলতেই জানালেন, ‘তোমার যদি ইংলিশে প্রিপারেশন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তুমি নির্দ্বিধায় আমাকে বলতে পারো।’ এসব শুনেও ভালো লাগছে বলেও জানান এই চিকিৎসক।


ভবিষৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আল্লাহ দিলে যদি চান্স হয় আর দূরে কোথাও পোস্টিং হয় তাহলে সপ্তাহে অন্তত একদিন করে হলেও এখানে রোগী দেখবো। আর পোস্টিং যদি আশেপাশে কোথাও হয় তাহলে অন্তত সন্ধ্যার পর রেগুলার রোগী দেখা যাবে। তবে এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসবে কি না সেটা নিয়ে এখনও ভাবা হয়নি। তবে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসলে তখন ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কি করা যায়।’


চিকিৎসা নিতে আসা নাজমুল হক নামে এক রোগী বলেন, ‘জনসেবার উদ্দেশ্যে এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কতজন এমবিবিএস পাস করে ব্যবসার মতো টাকা ইনকামে নেমে যায়, সে হিসেবে ওনার উদ্যোগটা খুবই ভাল। আমি নিজেও ফেসবুকে জানতে পেরে দেখা করলাম। কিছু সমস্যা ছিল আমার, উনি শুনে প্রেসক্রিপশন দিলেন। মাত্র এক টাকার ভিজিটেই ডাক্তারি পরামর্শ পেলাম। আশা করছি এলাকার হত দরিদ্ররা তার কাছে সেবা পেয়ে উপকৃত হবেন।’


রোগীর ভিজিট এক টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে এই নারী চিকিৎসক বলেন, দি ফাইভ ফাউন্ডেশন’ নামে আমার একটা ছোট্ট অর্গানাইজেশন আছে। করোনার সময় থেকেই সংগঠনটির কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। আমরা মূলত সেখানে মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) নিয়ে কাজ করে থাকি। এছাড়াও শীতে শীতার্তদের শীতবস্ত্র প্রদান, কোরবানির ঈদে গরু কোরবানি করে গোশত বিলি করা, অসহায়দের অর্থ সহায়তা দিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, কিছু দু:স্থ পরিবারে নিয়মিত খাবার সহায়তা দেওয়া, একটি এতিম বাচ্চার ভরণপোষণ দেওয়ার মতো অনেক কাজই ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে করা হয়। সেজন্য ওই সংগঠনের আয় হিসেবে এই এক টাকা নেওয়া হচ্ছে।


ডা. সুমাইয়া পরিবার সম্পর্কে জানান, আমার পাঁচ বছর ও দুই বছর বয়সী দুটো বাচ্চা আছে। আমার হাজবেন্ডও পেশায় চিকিৎসক। আমার এই উদ্যোগে তিনিও খুশি, সব রকমের সাপোর্ট দিচ্ছেন। আমি আমার আব্বু-আম্মুর স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করছি।


সুমাইয়ার বাবা রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মীর মোজাম্মেল আলী। স্বপ্ন পূরণে মেয়ের এমন মহত উদ্যোগের বিষয়ে বাবা মীর মোজাম্মেল আলী বলেন, ‘ইচ্ছে ছিল আমার চার ছেলে-মেয়েই ডাক্তার হবে। তিন মেয়ে ডাক্তার হয়েছে, আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল, তারা মানুষের সেবা করবে। আমরা ডাক্তার হতে পারিনি, সেই একটা দুঃখ ছিল আমাদের সময়। যেহেতু আমরা হতে পারিনি, তাই ছেলে-মেয়েদের মধ্য দিয়েই স্বপ্নটা পূরণ করার চেষ্টা করছি।’


তিনি আরও বলেন, ‘ডাক্তারদের বদনাম আছে, তারা কসাই, মানুষের টাকা খসায়। অন্তত সেটা ঘোঁচানোর জন্য এক টাকা ভিজিটের রোগী দেখার উদ্যোগটা ভাল। আমার মেয়েরা যেন জনসেবা অব্যাহত রাখতে পারে এবং সেবার মাধ্যমে রাজশাহীর লোক উপকৃত হতে পারে সেজন্য সকলের দোয়াও চান তিনি।


আরও খবর





deshchitro-67bc2095c049f-240225013237.webp
'ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম' এর পথনাটক

১৬ দিন ১৮ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে