◾ নিউজ ডেস্ক
আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকার জ্বালানি খাতকে লুটপাটের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি মহাসচিব সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জ্বালানিবিষয়ক এক সেমিনারে এই দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘আজকের জ্বালানি সংকটের প্রধান কারণ দুর্নীতি। এখন এটা দুর্নীতির একটা বড় উইপন (হাতিয়ার)।’
তিনি বলেন, ‘শুধু জ্বালানি খাত কেন? বাংলাদেশের কোনো খাত বাকি রাখেনি। আপনারা দেখেন কিছুদিন আগে কোভিডের সময় কীভাবে মানুষের জীবন নিয়ে, স্বাস্থ্য নিয়ে তারা দুর্নীতি করেছে? আপনারা দেখেছেন উত্তরায় গার্ডারচাপায় কীভাবে পাঁচ জনের জীবন গেল। সারাদেশে প্রতিদিন কয়েকশ মানুষ মারা যাচ্ছে দুর্ঘটনায়।’
মির্জা ফখরুল বহুল পঠিত ছড়া ‘ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে’ উল্লেখ করে বর্তমান সরকারকে বর্গী সরকার আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এই সরকার বর্গীদের সরকার। আজকে এরা (ক্ষমতাসীন দল) সেই বর্গীর ভূমিকা পালন করছে। আমাদেরকেও গান গাইতে হবে, বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানোর জন্য যে, আওয়ামী লীগ এলো দেশে এই কথা বলে।’
তিনি মনে করেন, তারা একাত্তর সালে যে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন তা বর্তমানের এই দেশকে দেখার জন্য নয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা একটা স্বাধীন-সার্বভৌম, একটা গণতান্ত্রিক সমাজ দেখতে চেয়েছিলাম, একটা মুক্ত উদার গণতন্ত্রের মধ্যে আমরা বাস করতে চেয়েছিলাম। আজকে এরা কী করেছে? এরা সম্পূর্ণভাবে দেশটাকে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
তিনি ‘আবার ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ‘বারবার কেন বলছেন আবার সেই ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চক্রান্ত হচ্ছে? আপনারা ১৫/১৬ বছরে ধরে চালিয়ে বললেন, টেরোরিজমকে আপনারা উধাও করে দিয়েছেন। সেখানে আবার সেই চিন্তা আসছে কেন?’
তিনি বলেন, ‘এরা প্রতিমুহূর্তে বাংলাদেশকে একটা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যার মধ্য দিয়ে, প্রতারণার মধ্য দিয়ে, জনগণকে বোকা বানিয়ে এই দেশটাকে চালাচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয় দেখছেন, এখন মানুষ নিজেরাই জেগে উঠতে শুরু করেছে। শেখ সুমন নামের একজন থানায় নিহত হয়েছে। কিন্তু বলা হয়েছে, সে আত্মাহত্যা করেছে। এর প্রতিবাদে জনগণ আজ নিজেরাই রাস্তা দখল করে গেট ঘেরাও করেছে, থানা ঘেরাও করেছে।’
তিনি চা-শ্রমিকরা নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় বেরিয়ে আসার নজির উপস্থাপন করেন।
ফের সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বিএনপির উদ্যোগে ‘দুর্নীতি জ্বালানি সংকটের উৎস’ শীর্ষক সেমিনার হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, যিনি ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী ছিলেন। প্রবন্ধে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ, ক্ষমতাসীনদের ব্যবসায়িক লুণ্ঠনের চিত্র তুলে ধরা হয়।
তিনি তার প্রবন্ধে বর্তমানে সৃষ্ট সংকট উত্তরণে জ্বালানি তেল আমদানিতে বর্তমান শুল্ক কর বাবদ ব্যয় করা ৩৪ শতাংশ অনতিবিলম্বে মওকুফ, জ্বালানি তেলের মূল্য ৫ আগস্টের পূর্বাবস্থায় পুনর্নির্ধারণ, রেশন কার্ডের বিপরীতে খাদ্য সরবরাহ, ওএমএসের আওতায় নিত্য দ্রব্যের আইটেম বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্রদান, নতুন গ্যাস ফিল্ড আবিষ্কার, নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতি গ্রহণ, বিপিসিতে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণসহ স্বল্প, মধ্যমেয়াদি ১৬ দফা করণীয় তুলে ধরেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন তার প্রবন্ধে বলেন, ‘জনগণের মাঝে ভয়ের সংস্কৃতি ছড়িয়ে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার একে একে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে চলেছে। সরকার জনকল্যাণের চেয়ে তাদের নিজস্ব দলীয় ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ায় সাধারণ মানুষের কাঁধে সমস্ত আর্থিক বোঝা চেপে বসেছে।’
ড. মোশাররফ এই অবস্থায় দ্রুত গণ-আন্দোলন গড়ে তুলে এই সরকারকে বিতাড়নের আহ্বান জানান।
১৮ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
১ দিন ৭ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
২ দিন ১ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
২ দিন ১ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে
২ দিন ২১ ঘন্টা ২৮ মিনিট আগে
২ দিন ২৩ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
৪ দিন ১ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৫ দিন ২ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে