দিনাজপুরে ইনোসেন্স নামীয় এক থেরাপি সেন্টার সরকারী অনুমোদন এবং থেরাপি বিশেষজ্ঞ থেরাপিষ্ট ছাড়াই শুধুমাত্র ফিজিও থেরাপিষ্ট দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে সব ধরনের অটিস্টিক বাচ্চাদের চিকিৎসা সেবা।করছে চিকিৎসা সেবার নামে ভুক্তভোগীদের সাথে প্রতারনা।এই থেরাপি সেন্টারটি বিশেষ শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ জনিত চিকিৎসা ও সেবার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। অটিষ্টিক বাচ্চাদের অভিভাবকদের সরল বিশ্বাসকে পুজিঁ করে চিকিৎসা সেবার নামে অর্থ উপার্জনই এই প্রতিষ্ঠানের মুল উদ্দেশ্য।
সরকারী অনুমোদন ব্যাতীত পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই চালিয়ে যাচ্ছে অটিষ্টিক বাচ্চাদের থেরাপি সেবা।প্রতিষ্টানটির স্বত্তাধিকারী জিসান হলেও এই প্রতিষ্ঠানটির নেপথ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালটেন্ট ফিজিওথেরাপিষ্ট মোঃনাসিম।কাগজে কলমে প্রতিষ্টানটির স্বত্তাধিকারী জিসান হলেও প্রকৃতপক্ষে এর সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালটেন্ট মোঃ নাসিম এর তত্বাবধানে।সরেজমিনে ইনোসেন্স থেরাপি সেবা কেন্দ্রটিতে গেলে চিকিৎসা কেন্দ্রটির দায়িত্বে নিয়োজিত এক মহিলার সাথে কথা বললে তিনি জানান এখানে বাচ্চাদের থেরাপি সেবা দেন নাসিম,তার সহযোগী বধীর ইন্সটিটিউটের নাসিমা, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষক শাহনেওয়াজ ও প্রতিষ্ঠানের মালিক ফিজিও থেরাপিষ্ট জিসান।
দিনাজপুর শহরের পাহাড়পুর ইকবাল স্কুল মোড়ে আসুদা বীথি ভবনে ইনোসেন্স নামে গড়ে উঠা থেরাপি সেবা প্রতিষ্ঠানটি অটিষ্টিক বাচ্চাদের চিকিৎসা সেবা যেমন অটিজম,বুদ্ধি প্রতিবন্ধী,পায়ের পাতা বাঁকা,অস্থিরতা,বয়স অনুযায়ী কথা বলতে না পারা,সেরিব্রাল পালসি,ডাউনসিনড্রোম,পড়ালেখায় অমনোযোগী,চঞ্চলতা,থেরাপি ভিত্তিক প্রিস্কুলিং,ফিজিওথেরাপি,স্পিচ থেরাপি,অর্থোসিস এবং প্রস্থেসিস,ডে কেয়ার,চিকিৎসা ও পরামর্শ,অকুপেশনাল থেরাপি,বিশেষ শিক্ষা,ভোকেশনালট্রেনিং সহ অটিষ্টিক বাচ্চাদের এমন কোন সমস্যা নেই যার ট্রিটমেন্ট এখানে দেয়া হয়না।অথচ বাস্তবে দুজন স্কুল শিক্ষক আর ফিজিও থেরাপিষ্ট মোঃনাসিম ও স্বস্তাধিকারী ফিজিও থেরাপিষ্ট যিনি ঢাকাতেই অবস্থান করেন এবং সপ্তাহে ১দিন বা দুদিন আসে আর এভাবেই চলে থেরাপি ও চিকিৎসা সেবা বলে সুত্রে জানা যায়।ফিজিও থেরাপিষ্ট দিয়ে সেরিব্রাল পালসি,ফিজিওথেরাপির মত কয়েকটি রোগের থেরাপি দেয়া গেলেও অটিজম,ডাউন সিনড্রোম, পড়ালেখায় অমনোযোগী,চঞ্চলতা,বয়স অনুযায়ী কথা বলতে না পারার মত অটিষ্টিক বাচ্চাদের থেরাপি সেবা দেবার জন্য যে অকুপেশনাল থেরাপিষ্ট এবং স্পিচ থেরাপিষ্ট থাকার কথা তা নেই। বিশেষজ্ঞ থেরাপিষ্ট ছাড়াই দিনের পর দিন অটিষ্টিক বাচ্চাদের থেরাপি সেবার নামে অবহেলিত মানসিকভাবে বিপযস্ত শিশুদের চিকিৎসার নামে অভিভাবকদের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে তাদের প্রতারনা করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ১৫জন শিশুর চিকিৎসা সেবার নামে প্রতিমাসে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ৬থেকে ৮হাজার টাকা। এসেসম্যাট বাবদ ২০০০টাকা,পেশেন্ট দেখা বা থেরাপি বাবদ ১০০০ টাকা এবং টিকিট এর জন্য ৫০টাকা।অথচ সরকারিভাবে সমাজসেবা অধিদপ্তর কতৃক পরিচালিত বিনামুল্যে প্রতিববন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র থাকলেও সেখানকার দায়িত্বরত কনসালটেন্ট নাসিমের চাতুরতায় সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের অভিভাবকদের বুঝিয়ে তার তত্বাবধানে পরিচালিত টাকার বিনিময়ে থেরাপি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইনোসেন্সে পাঠায়।অটিষ্টিক বাচ্চাদের সরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানের পরিবর্তে তার নির্দেশনায় ও তত্বাবধানে গড়ে উঠা ইনোসেন্সে পাঠিয়ে অর্থ হাতানোই তার মুল উদ্দেশ্য।এপ্রসঙ্গে সিভিল সার্জন কার্যালয়সুত্রে ইনোসেন্সের নিবন্ধন ও কার্যক্রম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে জানানো হয় সরকার অটিজম বাচ্চাদের চিকিৎসাসেবার জন্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কোন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রনয়ন করেননি এবং ইনোসেন্স প্রতিষ্ঠানটি যেহেতু নিবন্ধিত নয় সেহেতু সে সম্পর্ক আমরা অবগত নই। এমনকি ইনোসেন্স প্রতিষ্ঠানটি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকেও নিবন্ধিত নয় বলে জানা যায়। স্বস্ত্বাধিকারী জিসানের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে সে ঢাকা থেকে এসে অটিষ্টিক বাচ্চাদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত বিশেষজ্ঞ থেরাপিষ্টদের তথ্য দিতে চাইলেও তিনি প্রকার তথ্য প্রদান করেননি বরং তার ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন। অসহায় প্রতিবন্দী বাচ্চাদের অভিভাবকদের মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে চিকিৎসা সেবার নামে যে প্রতারনা করছে এবং অসংখ্য পরিবারকে নিঃস্ব করছে তা অনতিবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহনে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন মহল এবং ভুক্তভোগী অভিভাবকবৃন্দ।