দিনাজপুরে এক কীটনাশক ব্যবসায়িকে অপহরণ করে এক নারীর সঙ্গে অশ্লীল ভিডিও ধারন করে পরিবারের কাছে ব্লাকমেইল করে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করা তিন অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালি পুলিশ।এদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী।
২১ফেব্রয়ারি মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় কোতোয়ালী থানার অফিসার ইন চার্য মোঃ তানভীরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এক নারীসহ তিন অপহরণকারী কে গ্রেপ্তার ও মুক্তিবনের এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা উদ্ধারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
সংশ্লিষ্ট ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তিনজন হলেন দিনাজপুর শহরের গোলাপবাগ লেবুর মোড় এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে হারুনুর রশিদ ওরফে হারুন( ২৬) দিনাজপুর সদর উপজেলার মালিগ্রাম দীঘিপাড়া এলাকার রফি উদ্দিন আহমেদের ছেলে মোফাজ্জল হোসেন ওরফে শিমুল (৩২)এবং ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে শাকিরা আক্তার পুতুল ওরফে কাজল (২৭) কে গ্রেফতার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম জানান ২০ ফেব্রুয়ারি ইমারজেন্সি পুলিশ সেবা সার্ভিস ট্রিপল নাইনের ফোনের মাধ্যমে জানতে পারি দিনাজপুর পুলহাট এলাকার মোঃ মোবারক হোসেন নামেরএক কীটনাশক ব্যবসায়ীকে কৌশলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী লাল কালো রংয়ের ১৩৫ সিসি ডিসকভার মোটরসাইকেলের মাধ্যমে বিভিন্ন ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করে মোটরসাইকেলের উপর জোরপূর্বক বসিয়ে দিনাজপুর শহরের ৮নং উপশহরে অবস্থিত মৌসুমী বেগমের বাসার দ্বিতীয় তলার একটি ঘরের ভিতরে নিয়ে যায় সেখানে পূর্ব হতে অবস্থানরত অন্যান্য অপহরণকারীরা খুন করার ভয় ভীতি দেখিয়ে মোবারক হোসেনের নিকট পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শাকিরা আক্তার পুতুল ওরফে কাজলের সাথে বিভিন্ন রকমের অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ব্যবসায়ী মোবারক হোসেনকে ভয়ভীতি দেখায় এক পর্যায়ে তার পরিবারের নিকট এই অশ্লীল ছবি ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে। ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন নিরুপায় হয়ে তার স্ত্রীকে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা এবং মোবারকের ম্যানেজার মহবুল হকের মাধ্যমে আরো দুই লক্ষ টাকা অপহরণকারীরা কৌশলে গ্রহণ করে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহরণকারীদের লোকেশন শনাক্ত করে এবং ৮নং উপশহরের এক ভাড়া বাসা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় আরো কয়েকজন কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় ভিক্টিম নিজেই বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি অপহরণ ও অশ্লীল ছবি মোবাইলে ধারন করে ফেসবুকে আপলোড করার হুমকি সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।এই সময় ওসি আরো বলেন যে এই অপহরণকারীদের একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র রয়েছে, যারা শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদেরকে টার্গেট করে তাদেরকে অপহরণ ও বিভিন্ন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে কোন এক জায়গায় আটক রেখে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অশ্লীল ছবি ধারন করে এই ব্ল্যাকমেইলের কাজটি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। পুলিশ আরও তথ্য উদঘাটন করার লক্ষ্যে এই অপহরণকারী ও ব্লাকমেইলারদের সংঙ্গবদ্ধ চক্রকে আটকের জন্য এবং আরো তথ্য উদঘটনের জন্য আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড আবেদন করবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে যাহার মামলা নাম্বর ৬৬/ ২৩।