যশোরের অভয়নগরের রূপ সম্পদের ঐতিহ্যবাহী পুড়াখালী বাওড়টি প্রকৃতির অনুপম সাজে সজ্জিত একটি অনুপম নির্ঝর সজ্জিত উর্বর জলাভূমি। এ সব হাওড়-বাঁওড় বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বৈচিত্র্য দান করেছে।বর্ষাকালে বাওড়ের যৌবন ফিরে পায়। এসময় সাগরের মতো বিশাল জলরাশিতে ভরপুর বাওড়টি নিজের ঐহিহ্যের জানান দেয়।
দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পুড়াখালী বাওড়টি প্রায় পানি শুন্য হতে বসেছে।বর্তর্মানে-উপরিস্থ পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে নীচে নেমে গেছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। ফলে কালের আবর্তে সময়ের পরিধিতে নিরবে নিভৃতে বিলুপ্ত হতে বসেছে বাওড়টির জীববৈচিত্র। সেইসাথে বিরাট এই অঞ্চলের কৃষকের বুকে টনটনে ব্যাথা জাগিয়ে ব্যাহত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী কৃষি আবাদ। এছাড়াও, নানা কারণে মৎস ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর বাওড়টি দিনদিন হারিয়ে ফেলছে তার চিরচেনা রূপ আর গৌরবময় ঐতিহ্য।
পুড়াখালী বাওড়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পানির অভাবে বিলিন হতে চলেছে যেমন-রুই, কাতলা, মৃগেল, গ্রাস কার্প, সিলভার কার্প, ব্লাড কার্প, স্বরপুটি, বাটা, রাজপুটি, লাইলনটিকা।এছাড়া দেশীয় প্রজাতির মাছের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য কৈ, পুটি, শৈল,গজার, টাকি, শিং, মাগুর, চাঁন্দা, খলিশা, টেংরা, পাবদা, গুতেবাইন, রয়না, কাকিলা, চিংড়ী, বেলে প্রভৃতি মাছ পানির অভাবে বিলিন হতে চলেছে।পানির যেমন সংকট তারপর আবার প্রচন্ড গরমে মাছ মারা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে পায়ে হেটে শৈল গজারের মত মূল্যবান দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরছে।
বাওড়ে অতীতে ফুঁটতো ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ নানা প্রজাতির শাপলা, পদ্ম ফুল ও হাজিগাছ, হাজী গাছ নামে খ্যাত,এই গাছ কেটে সাধারণ মানুষেরা জালানি হিসেবে ব্যবহার করত,সেটাও বিলিন হয়ে গেছে। চোখ জুড়ানো নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর লাল ও বেগুণী শাপলা ফুল মাথা উঁচু করে সৌন্দর্য ছড়াতো বাওড়ের বুকভরা পানিতে।
অতীতকাল থেকেই শাপলার ফল দিয়ে চমৎকার সুস্বাদু খই ভাজা হতো। যেটি গ্রাম-গঞ্জের মানুষের কাছে ঢ্যাঁপের খই নামে পরিচিত।
৫৪.২৫ হেক্টর আয়তনের এ বাওড়টি মৎস্যজীবী চাষীদের মৎস্য চাষের জন্য ন্যস্ত রয়েছে, যা পুড়াখালী বাওড় মৎস্যজীবী সমিতি বাওড়টি ব্যবস্থাপনা করে থাকেন। প্রতি বছর বাওড় ব্যবস্থাপনা কমিটি নিজস্ব অর্থায়নে বাওড়ে পোনা মাছ অবমুক্ত করে থাকে। মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ, বাওড় খনন, অভয়াশ্রম স্থাপন ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকলেও প্রায় পানি শুন্য বাওড়টি মাছ শুন্য হতে চলেছে।এবিষয়ে মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য দীপক কুমার জানান, পানি নেই বললেই চলে, কাঁদার উপরে সামান্য স্বরের মতো পানি কিছু কিছু স্থানে আছে, বাওড়ের এমন হাল-অবস্থা বহু বছর আগে দেখা গিয়েছিল।
তাছাড়া, শীত মৌসুমে অতিথি পাখির পদচারণায় পুড়াখালী বাওড় মুখরিত ও পাখিদের অভয়ারণ্য পরিলক্ষিত হলেও নানা কারণে আগের মতো আর অতিথি পাখির দেখা মেলে না। বাওড়টি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত না হলেও সব মিলিয়ে বাওড়টি হারাতে বসেছে তার প্রাচীণ ঐতিহ্য। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সংশ্লিষ্টদের এখনই নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ ও ব্যবস্থাগ্রহণ অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে।
১১ ঘন্টা ৭ মিনিট আগে
১ দিন ৮ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
২ দিন ৯ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে
২ দিন ১৭ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
৩ দিন ৯ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
৩ দিন ১১ ঘন্টা ৭ মিনিট আগে
৫ দিন ৭ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
৬ দিন ৭ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে