জবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি, মার্কিন ও সৌদি দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান লালপুর থানা থেকে ছাত্রদল নেতাকে ছিনতাই, ওসিসহ ৪ পুলিশকে প্রত্যাহার উপজেলা আহ্বায়ক কমিটিতে সাবেক ছাত্রদল নেতা উৎফুল্ল নেতা-কর্মী সুন্দরবনে অপহৃত নারী সহ ৩৩ জেলেকে উদ্ধার করল কোস্টগার্ড চৌদ্দগ্রাম মিরশ্বান্নী বাজার ছাগলকে নল দিয়ে পানি খাইয়ে মোটাতাজা করানোর সয়ম ৯জন কে আটক করেছে উপজেলা প্রশাসন। স্বল্পমেয়াদি সংস্কারে সম্মত হলে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে কার ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বস্তিকা হেদায়েতের জন্য দোয়া করা কুষ্টিয়ায় সাহেরা খাতুন ফাউন্ডেশন ও হাজ্বী নায়েব আলী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র কর্তৃক শিক্ষা উপকরণ বিতরণ বাঘায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে-১০৪৩ কেজি টিসিবির পণ্য চুরীর অভিযোগ চিলমারীতে গাজায় গণহত্যা প্রতিবাদে সাংবাদিক ফোরামের বিক্ষোভ মিছিল একজন জনপ্রিয় অধ্যাপক এবং আদর্শ বাবার শেষ পরিণতি দৃঢ়ভাবে আগাও - নূরুল ইসলাম নাযীফ ফিলিস্তিন - শাহীন খান রাজশাহী বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থী কমেছে ১৯ হাজার রাজশাহী কলেজে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ নরসিংদী কমিউটার ট্রেন ঘোড়াশাল স্টেশনে স্টপেজ দেওয়ায় পলাশের জনমনে স্বস্তি লালপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতিমূলক সভা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে নাগেশ্বরীতে প্রস্তুতি সভা জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নন্দীগ্রামে বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপারের পথসভা

৫আগষ্টে আহত আরিফ; অভাব ঘোচাতে যেয়ে ফিরলেন পরিবারের বোঝা হয়ে

ছবি: দেশচিত্র

শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার ঘড়িষার ইউনিয়নের হালইসার গ্রামে হানিফ দেওয়ানের ছেলে আরিফ দেওয়ান (১৮)। গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার লং মার্চে অংশ নিয়ে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে পৌছালে, দূর্বৃত্তরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় আরিফের ডান পায়ের রগ ও মাংস পা থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং বাকীরাও খুব গুরুতর আহত হন। 

বছর খানেক আগে পরিবারের অভাব ঘোচাতে পড়াশোনা বন্ধ করে ঢাকা পাড়ি জমান পরিবারের একমাত্র ছেলে আরিফ দেওয়ান। গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে লং মার্চে অংশগ্রহণ করতে যেয়ে গুলিস্তানে হামলার স্বীকার হন আরিফ দেওয়ান। তখন কিছু লোক তাকেসহ ৬ জনকে ভ্যানে তুলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে আসেন। কিছুদিন ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকার কারনে তার বাবা তাকে গ্রামে নিয়ে আসেন। বর্তমানে ক্ষত স্থানে ঘা হয়ে পঁচন ধরার উপক্রম। পায়ের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে এখন বিছানায় কাতরাচ্ছেন পরিবারের একমাত্র ছেলে আরিফ দেওয়ান। তার পায়ের ক্ষত ভালো হতে প্রয়োজন উচ্চতর চিকিৎসার কিন্তু সেই সামর্থ্য নেই তার দিনমজুর বাবার এবং এখনো পাননি কোন সহযোগিতা।

আরিফকে তার বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে আরিফ বলেন- বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে, নতুন করে দেশ আরেকবার স্বাধীন হয়েছে আর এই স্বাধীনতার পিছনে আমারও একটা গল্প আছে, আমারও কিছু ত্যাগ আছে। আমার মনে কোন কষ্ট নেই। দেশের মানুষ স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে তাতেই আমি খুশি। 

তবে আজ যেখানে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলতেছে, যারা আন্দোলনে শহীদ হয়েছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতেছে। কিন্তু আমি আজ কয়েকমাস বিছানায় পড়ে আছি। সাহায্যের জন্য একটা আবেদন পত্রও পোস্ট করেছিলাম কিন্তু এখনও কেউ দেখতে পর্যন্ত আসেনি। আমার বাবা একজন দিনমজুর। এই কয়দিনের চিকিৎসায় বাবা অনেক ঋণ করেছে, তার জমানো যা ছিলো সব শেষ। আগামী দিনের ওষুধ কিনব কি করে তাও জানা নেই।

আরিফের বাবা হানিফ দেওয়ান জানান, ৫ আগষ্ট বেলা ৩ টার সময় আমার ছেলের এ অবস্থার খবর পাই। তখন ঢাকা যাবার খুব চেষ্টা করি, কিন্তু গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় আমি তখন যেতে পারিনি। পরে আমার ঢাকার এক আত্মীয় ঢাকা মেডিকেলে যেয়ে তাকে চিকিৎসা করান। রোগী বেশি হওয়ায় সেদিন মেডিকেল তার ভর্তি নেয়নি, তাই আমার আত্মীয় আরিফকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। তিনদিন পর আমার ছেলেকে আবার ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে ডাক্তার জানায়- ক্ষতস্থানে ঘাঁ হয়ে গেছে, উন্নত চিকিৎসা করাতে হবে। আমি ঢাকায় কিছুদিন আমার ছেলের চিকিৎসা করাই। কিন্তু ঢাকায় থাকা ও হাসপাতালের এত খরচ বহন আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না, তাই ছেলেকে নিয়ে গ্রামে চলে আসি। এখন গ্রামের এক ডাক্তারকে দেখাচ্ছি। আজ ১ মাস ৬ দিন হল আমি কষ্ট করে আমার ছেলের চিকিৎসা করাচ্ছি। ডাক্তার বলছে যদি উন্নত চিকিৎসা করাতে বেশি দেরি হয়ে যায়, তাহলে এই ঘাঁ আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে এবং আরিফ হয়তো আর হাটতে পারবে না।

তার বাবা আরও জানান, "আমার কাছে যত টাকা ছিল সব শেষ। বর্তমানে আমি আমার ছেলের ওষুধের খরচও ঠিকমতো বহন করতে পারছিনা, এর থেকে ওর থেকে নিয়ে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। তাছাড়া আমার ছেলের পায়ের যে অবস্থা আমি এতো ওষুধের টাকা পাব কই আর অপারেশনই বা করাব কিভাবে"।

স্থানীয় কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) বলেন, তার বর্তমান অবস্থা সংকটাপন্ন। যদি সময়মতো উন্নত চিকিৎসা না করানো যায় তাহলে হয়তো তার ডান পা'টা অকেজো হয়ে যাবে। যেহেতু আরিফের পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল, চিকিৎসার ব্যয় বহন করা তাদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। তাই সরকারিভাবে বা সমাজের বিত্তবানরা যদি আরিফকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে তবে তার পরিবারের অনেক উপকার হবে এবং আরিফ আবার হাটতে পারবে।

আরও খবর