জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকান্ডের ঘটনায় এজাহার ভুক্ত সকল আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে অনশন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৮ টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে অনশনে বসেন বকশীগঞ্জে কর্মরত সকল সাংবাদিকরা। আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল আসামীকে গ্রেফতার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
পরে বেলা দেড়টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌর মেয়র আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম সওদাগর সাংবাদিকদের সাথে একাত্ত্বতা ঘোষনা করে অনশনে আসেন এবং নাদিম হত্যার সকল আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। সেই সাথে সামনে সাংবাদিকদের সকল আন্দোলনে পাশে থাকার ঘোষনা দেন যুবলীগ নেতা মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর।
অনশন চলাকালে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন সাংবাদিক জিএম সাফিনুর ইসলাম মেজর। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই আজকের মত সাংবাদিকদের অনশন ভাঙ্গার অনুরোধ করেন মেয়র। মেয়রের অনুরোধে দুপুর ২ টার দিকে অনশন ভাঙ্গেন সাংবাদিকরা। খেজুর ও জুস খাইয়ে অনশন ভাঙ্গান মেয়র।
অনশনে সাংবাদিক নাদিম হত্যার বিচার ও আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর, সিনিয়র সাংবাদিক এম শাহীন আল আমীন, সরকার আবদুর রাজ্জাক,মেলান্দহ রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি শাহজামাল,সরওয়ার জামান রতন,আশরাফুল হায়দার, আবদুল লতিফ লায়ন,সাফিনুর ইসলাম মেজর,এ,কে,এম নুর আলম নয়ন,সলিমুল্লাহ সেলিম,মাসুদ উল হাসান,জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু,রাজ্জাক মাহমুদ,রাশেদুল ইসলাম রনি, এমদাদুল হক লালন, মতিন রহমান, ছালাম মাহমুদ,আল মুজাহিদ বাবু,মনিরুজ্জামান লিমন, মোমতাহেনা আশা,রায়হান, মনিরুজ্জামান মনির, মারুফ, ইমরান আকন্দ ও শাহনাজ পারভীন প্রমূখ। বক্তারা বলেন আমাদের দাবি একটাই নাদিম হত্যার বিচার চাই। নামীয় সকল আসামীকে গ্রেফতার চাই।
গত ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে পৌর শহরের সরকারি কলেজ মোড়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম। সন্ত্রাসীরা তাকে নৃশংসভাবে আঘাত করে ও জখম করে ফেলে চলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ হাসপাতাল ও পরে জামালপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ জুন বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ওই দিন দুপুরেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নাদিম।
এই ঘটনায় ১৭ জুন সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামী করে ২২ জন নামীয় ও ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করেন নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম। ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আসামীদের সনাক্ত করে পুলিশ। এই ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে নামীয় ২২ জন আসামীর মধ্যে মাত্র ৫ জন আসামী ধরা পড়েছে। চেয়ারম্যান পুত্র রিফাতসহ ১৭ জন নামীয় আসামী এখনো পলাতক রয়েছে। সবাইকে বিভিন্œ মেয়াদে পুলিশ রিমান্ডে ও জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রধান আসামী বহিস্কৃত ইউপি চেয়ারম্যন মাহমুদুল আলম বাবু,রেজাউল করিম ও মনিরুজ্জামান মনির হত্যার দ্বায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
নামীয় ১৭ জন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সাংবাদিকরা। দ্রুত গ্রেফতার না হলে লাগাতার আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন সাংবাদিকরা।
সাংবাদিক নাদিম বাংলানিউজ টোয়েটিফোর ডট কমের জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তুর টিভির বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি ছিলেন।
৩ দিন ২৩ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে
৩ দিন ২৩ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
৪ দিন ২২ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে