জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ ও জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে জলবায়ু ধর্মঘট আদমদীঘিতে বিএনপির ঈদ পুর্নমিলনী উপলক্ষে কর্মী সভা আদমদীঘিতে ১২০পিস এ্যাম্পুলসহ একজন গ্রেপ্তার আশাশুনির গোয়ালডাঙ্গায় বেড়ী রাস্তা ভাঙ্গন স্থানে রক্ষা কাজ শুরু কটিয়াদীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবিতে তরুণ-তরুণীদের ধর্মঘট মোংলার পার্শবর্তী জিউধারায় ৩ দিনব্যাপী সাধুর মেলা বারুণী স্নানে লাখো মানুষের ঢল নওগাঁর নিয়ামতপুরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২ উন্নত বিশ্বে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে : আসিফ নজরুল পুলিশের নতুন লোগো প্রকাশ ইসলামপুরে ১০ জুয়াড়ি আটক কারাগারে অভিনেত্রী মেঘনা আলম মিয়ানমারে ফের ভূমিকম্প বেড়েছে সবজির দাম, সংকট সয়াবিন তেলের বদলে গেল মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম আশাশুনিতে দেল ও চড়ক পূজার ঐতিহায্য ম্লান হতে শুরু করেছে। আক্কেলপুর যৌথ অভিযানে মাদকসহ আটক ১০ বাঘায় এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা উপকূলে জলবায়ু অবরোধ কর্মসূচী শ্যামনগরে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় প্রথমদিনে অনুপস্থিত ৮০ জন

চা চাষে অধীর আগ্রহ বাড়ছে ঠাকুরগাঁয়ে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন সম্ভাবনা ।

ফাইল ছবি


বাংলাদেশ  প্রকৃতিক সুন্দরর্য্যের এক অপার  সম্ভাবনাময়   দেশ । দিগন্ত  ভরা সবুজ বিস্তৃর্ণ মাঠ । মাঠের পর মাঠ সবুজ  আর সবুজের সমারোহ । এ কথাকে আরো সার্থক করে তুলেছে  চায়ের  মাঠ। চা বাংলাদেশের  একটি  অর্থকারী ফসল । ইতিমধ্যে   ঠাকুরগাঁও জেলার  বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় সাড়ে ৩’শ একর জমিতে চায়ের আবাদ হয়েছে। যা জেলার কৃষি অর্থনীতির চাকাকে বেগবান করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।


ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি চা চায়ের জন্য উপযোগী হিসেবে চিহ্নত করে পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ড ১৯৯৮ সালে কাজ শুরু করেন। প্রথম পর্যায়ে এলাকার কেউ আগ্রহ দেখায়নি।



২০০৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীনের ছেলের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা বালিয়াডাঙ্গীর নিটলডোবা গ্রামে ৪০ একর জমিতে চা চাষ শুরু করেন।


পরর্তীতে তিনি গ্রীন ফিল্ড টি স্টেট’র কাছে তা বিক্রি দেন। স্থানীয় চা বোর্ডের কোন সহায়তা না পেলেও ঐ কোম্পানী নিজ উদ্যোগে কাজ চালাতে থাকে। তাদের দেখে আরো কয়েকটি কোম্পানী এখানে আসেন । উদ্যাক্তা পর্যায়ে চলতে থাকে চা চাষ। 


চা–চাষিরা বলেন, কয়েক বছরের মধ্যে এ চা চাষ বদলে দিয়েছে জেলার সীমান্ত এলাকার অর্থনীতির চিত্র। একসময় যে পতিত জমি ব্যবহৃত হতো গোচারণের কাজে, এখন তা চায়ের সবুজ পাতায় ভরে গেছে। এসব চা-বাগানে তিন হাজার নারী-পুরুষ কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। 


বালিয়াডাঙ্গীর ভান্ডারদহ গ্রামের পাকা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ১৬ শতক জমিতে চা চাষ করছেন শিক্ষক শহিদুল ইসলাম (৫২)। বছর তিনেক ধরে এ বাগানে শ্রম দিচ্ছেন তিনি। বাগানটি থেকে প্রতি ৪০ দিন পরপর ২০০ কেজির বেশি চা–পাতা সংগ্রহ হয়। এখন চা চাষ করে বছরের সাত মাসেই তাঁর আয় প্রায় ২৮ হাজার টাকা।


চা-চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, চা চাষের শুরুতে চা কারখানার মালিকেরা ইচ্ছামতো চা-পাতার দাম বেঁধে দিতেন। এখন সেই দিন পাল্টেছে। এ কারণে চাষিরা চা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।


বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তের নিটোলডোবা গ্রামে ৯৫ একরের ‘গ্রিনফিল্ড টি এস্টেট’ নামের একটি চা–বাগান রয়েছে। এ বাগানের ব্যবস্থাপক তাজমুল হক বলেন, গত বছর তাঁরা নিজস্ব বাগান থেকে প্রায় ৪০ লাখ কেজি কাঁচা চা-পাতা তুলেছেন। এ বাগানে নারী–পুরুষ মিলিয়ে ১৩০ শ্রমিক কাজ করেন।


উপজেলার রণবাগে ইসলাম টি এস্টেট নামের সাংসদ দবিরুল ইসলামের ৪৫ একরের একটি চা–বাগান রয়েছে। ওই বাগানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৭০ শ্রমিকের। গত বছর ইসলাম টি এস্টেট থেকে প্রতি রাউন্ডে এক লাখ কেজির বেশি কাঁচা চা-পাতা তোলা হয়েছে। এছাড়াও  যেখানে  -সেখানে  গড়ে  উঠেছে ছোট-বড় চায়ের বাগান। 


চাষিরা চা চাষে ঝুঁকছেন। এতে চা-বাগানে কর্মসংস্থানের সুযোগও হচ্ছে অনেকের। বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে সাধারণত ভারতের টোকনাই ভ্যারাইটি (টিবি) চা চাষ হচ্ছে। এ জাতের চা রোপণের দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে পাতা তোলা যায়। প্রতি একর জমির চা-বাগান থেকে টিবি জাতের চা পাওয়া যায় প্রায় ৮ হাজার কেজি। এ কারণে চাষিরা টিবি জাতের চা চাষের প্রতিই আগ্রহী। অন্যদিকে রং ও গন্ধ ভালো হওয়ায় চা গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিটি-২ জাতের চায়ের চাহিদা এখন শীর্ষে। এ জাতের চায়ের দামও অনেক বেশি।


ইসলাম টি এস্টেট চা বাগানের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত  এ কে এম শামসুজ্জামান (বাবলু)  বলেন, ৩টি বাগান থেকে গত বছর ১৫ লাখ কেজি চা পাতা সংগ্রহ করা হয়েছে। এবার এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ কেজি পাতা সংগ্রহ করেছি । আশা করছি পুরো বছরে এবারও ১৫ লাখ কেজি পাতা সংগ্রহ হবে। আর এ বাগানের চা পাতাগুলো সংগ্রহ করে গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় পঞ্চগড়ের সাজেদা রফিক টি ফ্যাক্টরিতে।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বেলায়েত হোসেন জানান, সীমান্তবর্তী বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার জমি অপেক্ষাকৃত উচু এবং উর্বর। এসব উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমি চা চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া গেলে চা চাষ দ্রুত সম্প্রসারিত হবে। যা স্থানীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।


আরও খবর