কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা জন্ম নিবন্ধনের অভিযোগ উঠেছে। অস্বাভাবিক এই নিবন্ধনে জড়িত একটি শ্রেণী মোটা অঙ্কের বাণিজ্য করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। এই অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে উপজেলার চারটি ইউনিয়নে। তবে সবচেয়ে বেশি হয়েছে জারইতলা ও ছাতিরচর ইউনিয়নে। অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সিংপুর ও গুরুই ইউনিয়নেও।
এর মধ্যে জারইতলা ইউনিয়ন পরিষদে পাঁচশ’রও বেশি নিবন্ধিত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন আফরোজকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, তার জানা মতে শতাধিক লোকের জন্মসনদ তৈরি করা হয়েছে। এ নিয়ে জটিলতার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। তবে ৫০০ লোকের নিবন্ধন এই ইউনিয়নে হয়নি বলে জানান তিনি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক উদ্যোক্তা বলেন, আমি এ রকম পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির তালিকা দেখেছি এক ছাত্রনেতার সংগ্রহে। মূলত ভালো অঙ্কের টাকার বিনিময়েই এগুলো করানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গা বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে এও বলেন যে, বহিরাগতের নিবন্ধন করা হয়েছে।
সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এ সম্পর্কে কোনো খবর তিনি জানেন না। তবে রোহিঙ্গা নিবন্ধনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ায় ইউএনও অফিসে উদ্যোক্তা ও সচিবকে ডেকে নিয়ে মিটিং করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
ছাতিরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান চৌধুরী ওরফে ইয়ার খান বলেন, ইউএনও’র কাছে তালিকা একটা জমা দিয়েছেন এই ্ইউনিয়নের উদ্যোক্তা। তবে কতজনের নামে তা আমি কিছু জানি না।
ছাতিরচর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব বজলুর রশিদ বলেন, এটা উদ্যোক্তাই বলতে পারবেন।
ছাতিরচর ইউনিয়নের উদ্যোক্তা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সেক্রেটারি আতিকুর রহমান আতিকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এখান থেকে কোনো নিবন্ধনের তালিকাই জমা দেয়া হয়নি, এসব সম্পূর্ণই মিথ্যা তথ্য।
গুরুই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোতা মিয়া বলেন, আমি ভুয়া নিবন্ধনের বিষয়ে কিছু জানি না। তবে সচিব ও উদ্যোক্তা এগুলো করে। আমি আওয়ামী লীগ করি। কোনো দুর্নীতি করি না। রোহিঙ্গা নিবন্ধনের বিষয়ে কথা হলে তিনি এই প্রসঙ্গে আরো বলেন, এমনটি হয়ে থাকলে রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ইউএনও এই ঘটনাটি বর্তমানে তদন্ত করছেন। একপর্যায়ে তার ফোন সচিব আল আমিনকে ধরিয়ে দেন চেয়ারম্যান। তখন সচিব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ২৩৯ জনের নামে একটি তালিকা দেয়া হয়েছে। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান নিজে থেকেই বলেন, এ কাজগুলো মূলত সিংপুরের উদ্যোক্তা ও ছাতিরচরের উদ্যোক্তা মিলেই করেছে।
নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা পারভীন নিবন্ধনে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে বলেন, নিবন্ধনে অনিয়মের যে অভিযোগটি উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলার জন্য রোববার দুপুরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
৩৩০ দিন ২৩ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৩৮৭ দিন ১৩ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
৩৯০ দিন ২১ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
৩৯২ দিন ১৩ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৩৯৬ দিন ২১ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
৩৯৬ দিন ২১ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৪০৬ দিন ২২ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
৪০৯ দিন ১৬ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে