সাময়িক বন্ধ ঢাকা আরিচা মহসড়ক বেরোবিতে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষ একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন শাজাহানপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটা ও বহন করার অপরাধে মোবাইল কোর্টে অর্থদণ্ড দাগনভূঞা জমজমে সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির ইফতার পলাশবাড়ীতে যাত্রীবাহী বাসে পুলিশের অভিযান একশ বোতল ফেন্সিডিলসহ এক জনকে আটক। গোদাগাড়ী পৌর সেচ্ছাসেবক দলের দোয়া ও ইফতার মাহফলি ৭ বছর পর নজরূল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটি বিয়ের মেহেদির রং শুকিয়ে যাওয়ার আগেই দুর্ঘটনা তরুণের মৃত্যু পাটগ্রামে অবৈধ পাথর ভাঙা মেশিনে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান, ২৮ হাজার টাকা জরিমানা UITS Civil Engineering Department is going to organize a workshop titled ‘Addressing Complex Engineering Problem through Capstone Project’ লাহুড়িয়া পুলিশের অভিযানে ০১ বছর সাজাপ্রাপ্ত ০১ জন আসামি গ্রেফতার কক্সবাজারে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে একসঙ্গে কাজ করবে জাইকা ও বিএফডিসি দায়িত্বে অবহেলায় শিশুর মৃত্যু শরীয়তপুরের সেই চিকিৎসককে চান না রৌমারীবাসী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তোপের মুখে রায়পুরের মেয়র - ভিডিও ভাইরাল শরীরে যে পরিবর্তন আসে প্রেমে পড়লে! শুক্রবার মুসলিম কমিউনিটি মৌলভীবাজার এর আলোচনা সভা ইফতার মাহফিল গাজা হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদমদীঘিতে সড়ক পারাপার হতে গিয়ে ট্রাকের ধাক্কায় একজন নিহত ইউক্রেনকে এফ-১৬ বিমান সরবরাহকারী দেশ বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে: পুতিন

ঈদুল ফিতরের অঙ্গীকার : আত্মার হউক পরিস্কার



মাহে রমজানে এক মাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের নূতন চাঁদ মুসলমানদের মধ্যে লইয়া আসিয়াছে পরম আনন্দ ও খুশির পবিত্র ঈদুল ফিতর। চন্দ্র দর্শন সাপেক্ষে উদযাপিত হইয়া থাকে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় এই উৎসবটি। 




রোজাদার যে পরিচ্ছন্নতার ও পবিত্রতার সৌকর্য দ্বারা অভিষিক্ত হন, যে আত্মশুদ্ধি, সংযম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, উদারতা, বদান্যতা, মহানুভবতা ও মানবতার গুণাবলি দ্বারা উদ্ভাসিত হন, তাহার গতিধারার প্রবাহ অক্ষুণ্ণ রাখিবার শপথ গ্রহণের দিন হিসাবে আসে ঈদুল ফিতর।




আসলে ঈদ শব্দটির আরবি শব্দমূল ‘আউদ’। ইহার অর্থ যাহা ফিরিয়া ফিরিয়া বারংবার আসে বা প্রচলিত অর্থে খুশি, আনন্দ বা উৎসব। আর ফিতর শব্দের অর্থ ভাঙিয়া দেওয়া। তাই ঈদুল ফিতর মানে রমজানের দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম ভাঙিবার এক আনন্দঘন উৎসব কিংবা হালকা নাশতা করা।




দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এইদিনে খাওয়া-দাওয়ার অনুমোদন মেলে। সেই আনন্দ ও খুশি সকলের মাঝে বিলাইয়া দিতে ইসলাম এই দিনকে উৎসবের দিন হিসাবে প্রবর্তন ঘটয়াইছে। এইদিনে মুসলমানরা উত্তম জামা-কাপড় পরিধান করিয়া ঈদগাহে গিয়া নামাজ আদায় করিবেন এবং আল্লাহর কাছে রমজানের ভালো কাজগুলি কবুল করিবার আরজি পেশ করিয়া থাকেন। মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময়, সালাম-মুসাফাহা-কোলাকুলি, নানা স্বাদের খাবারের আয়োজন-আপ্যায়ন, স্বজনদের খোঁজখবর নেওয়া ইত্যাদি কাজ দিনটিকে তাৎপর্যময় করিয়া তোলে। বিশেষ করিয়া জাকাত-ফিতরা ও সাধারণ দানের মাধ্যমে সমাজের অসহায় মানুষের সহিত আনন্দ ভাগাভাগি করিয়া সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের ডাক দেয়।




ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্‌যাপন দিনটিকে সর্বজনীন উৎসবে পরিণত করিয়াছে। সমাজের পরতে পরতে সমতা, মানবিকতা, সহানুভূতি, সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের বার্তা ছড়িয়ে দিতে এইদিন অগ্রণী ভূমিকা পালন করিয়া থাকে।




ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলেই উদ্ভাসিত হই উৎসবের আনন্দে। সকল প্রকার ভেদাভেদ ভুলিয়া, হিংসা-বিদ্বেষ বিস্মৃত হইয়া এবং সাম্য, সৌহার্দ্য আর ভ্রাতৃত্ববোধের প্রতিফলন ঘটাইয়া আলিঙ্গন করিবে পরস্পর। এই উৎসবের অপর দিক হইল, এই দিবসে ধর্মীয় বিভাজনের দেয়াল অতিক্রম করিয়া মুসলমানদের সহিত তাহাদের অমুসলিম প্রতিবেশী কিংবা বন্ধুবান্ধবও যোগ দেয়।




ধনী-গরিব সকলেই মিলিয়া এক কাতারে শামিল হইয়া ঈদগাহে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের জন্য দুই রাকায়াত নামাজ আদায় করেন। বছর জুড়িয়া নানা প্রতিকূলতা, দুঃখ-বেদনা সকল কিছু ভুলিয়া ঈদের দিন মানুষ সকলের সহিত ঘনিষ্ঠভাবে সম্মিলিত হন। ঈদগাহে কোলাকুলি সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনের আবদ্ধে একে অপরকে বিমোহিত করিয়া তোলে। এই ঈদ তাই এক নির্মল আনন্দের ফল্গুধারা। 


আমাদের দেশে ঈদের আনন্দ সকলের সহিত ভাগাভাগি করিয়া নিতে পথের বিড়ম্বনা অগ্রাহ্য করিয়া অনেকেই ছুটিয়া চলেন স্বজনের নিকট। এইবার ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়াছি অন্তত ১ কোটিরও অধিক মানুষ। 




ঈদযাত্রা ঘিরে সকল ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। তবে যাত্রাপথের ভোগান্তি কমাতে এবং পরিবহনব্যবস্থার সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা নিশ্চিত করিতে সকলেরই আন্তরিক ভূমিকা জরুরি। ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা কমাইতে শৃঙ্খলার বিকল্প নাই। ঈদ ঘিরিয়া সকল ধরনের অপরাধ ও শান্তি বিনষ্টকারী অপচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করিতে হইবে। হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারি-বেসরকারি জরুরি সেবা কার্যক্রম যেনো কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেইদিকে খেয়াল রাখিতে হইবে এবং ঈদ-পরবর্তী পর্যটনকেন্দ্রগুলোর শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।




নৈতিক, আত্মিক ও সামাজিক পরিশুদ্ধির সীমানা অতিক্রম করিয়া সামষ্টিক কল্যাণ লইয়া আসে ঈদুল ফিতর। তাকওয়া বা খোদাভীতির শক্তিতে বলীয়ান হইয়া নূতন জীবনে ফিরিয়া আসিবার অঙ্গীকার লইয়া আসে এই ঈদ। ইসলামের দৃষ্টিতে ঈদের এই দিনটি পুরস্কার দিবস হিসাবে গণ্য। রোজা রাখিবার পুরস্কার আল্লাহ নিজেই দিবেন বলিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়াছেন। তাই ঈদের দিন এই মহাপুরস্কার তথা ক্ষমা লাভের সুযোগ তৈরি হওয়ায় এক অন্যরকম ভাবাবেগ তৈরি হয় মুমিন মুসলমানদের নিকট। যখন ঈদুল ফিতরের দিন আসে, তখন যাহারা রোজা পালন করিয়াছে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাহাদের সম্পর্কে ফেরেশতাদের নিকট গৌরব করিয়া বলেন, ‘হে আমার ফেরেশতাগণ, তোমরা বলো তো, যে শ্রমিক তাহার কাজ পুরোপুরি সম্পাদন করে, তাহার প্রাপ্য কী হওয়া উচিত? উত্তরে ফেরেশতাগণ বলিবেন, ‘হে মাবুদ পুরোপুরি পারিশ্রমিকই তাহার প্রাপ্য।’ এই জন্য এইদিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রার্থনায় সাড়া দিবেন। আমাদের পাপরাশি ক্ষমা করিয়া দিবেন। এমনকি সাধারণ পাপরাশিকে পুণ্যে পরিণত করিয়া দিবেন। ইহার চাইতে আধ্যাত্মিক আনন্দের খবর আর কী হইতে পারে? এই জন্য ফেরেশতাগণ ঈদের দিন রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়াইয়া থাকিয়া রোজাদার ব্যক্তিদের দ্রুত আল্লাহর দিকে ধাবিত হইতে বলিবেন। তাই আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক ঘোষিত এই পুরস্কার প্রত্যাশায় এই ঈদ অধিক মহিমান্বিত ও আনন্দঘন হইয়া উঠে। সিয়াম সাধনা, ইফতার-সেহরি গ্রহণ, তারাবিহ ও জাকাত-ফিতরা আদায়, ইতিকাফ ও লাইলাতুল কদর উদযাপন ইত্যাদির মাধ্যমে পাপ-পঙ্কিলতামুক্ত হইয়া অনাবিল আনন্দ লাভের মধ্যেই ঈদুল ফিতরের বিশেষ সওগাত নিহিত। বলা বাহুল্য, অন্য যে কোনো আনন্দ-উৎসব ও ঈদের আনন্দ উৎসবের মধ্যে রহিয়াছে মৌলিক পার্থক্য। আত্মার আনন্দই এইখানে বড় কথা। তাই ঈদুল ফিতরের উৎসব বাস্তবিক শুভময়তা ও পারলৌকিক মুক্তির প্রত্যাশায় ঋদ্ধ।




চলমান প্রচণ্ড দাবদাহে বিপর্যস্ত জনজীবনে স্বস্তি আনিতে প্রয়োজন একপশলা বৃষ্টি। ঈদের ছুটির এই কয়েক দিনেও এমন তাপমাত্রা বহাল থাকিলে ঈদের আনন্দ মাটি হইয়া যাইবে। সেইকারণে মহান আল্লাহর নিকট বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা উচিত। এই ছাড়া বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। তাহা থেকে পরিত্রাণ পাইতে সর্বোচ্চ সতর্কতার বিকল্প নাই। আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোও সামর্থ্যবান মানুষের অন্যতম কর্তব্য। পাশাপাশি সমাজের সকল মানুষই যেনো ঈদের আনন্দে শামিল হইতে পারে, সেই জন্য ঈদের আগেই সকলের প্রাপ্য বুঝিয়া দেওয়া উচিত।




পবিত্র ঈদুল ফিতর ধর্মীয় বিধিবিধানের মাধ্যমে সকল স্তরের মানুষকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করিবার প্রয়াস পায় এবং পরস্পরের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের শিক্ষা দেয়। আমাদের জাতীয় জীবনে এই সকল শিক্ষা ও অঙ্গীকারের অনুশীলন একান্ত প্রয়োজন। ইহা ছাড়া পৃথিবীব্যাপী যেইভাবে যুদ্ধবিগ্রহ, হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি ও অশান্তি বাড়িয়া গিয়াছে, তাহাতে ঈদের শিক্ষা লইয়া আমরা বিশ্বকে বসবাস উপযোগী করিতে সচেষ্ট হইতে পারি। এই জন্য আমাদের আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ও সৌহার্দের বন্ধন দৃঢ় করিতে হইবে। আমাদের আগামী দিনগুলি আরও সুন্দর ও সৌন্দর্যমণ্ডিত হউক। হাসিখুশি ও ঈদের আনন্দে ভরিয়া উঠুক প্রতিটি প্রাণ। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনে সংযম, ধৈর্য, ঐক্য ও প্রেমপ্রীতির পরিবেশ পরিব্যাপ্তি লাভ করুক। ইহাই হউক ঈদুল ফিতর উৎসবের ঐকান্তিক কামনা। 




এই বারের ঈদে আমাদের একান্ত প্রত্যাশা—রাষ্ট্র ও সমাজ সকল সংকট-সমস্যা কাটিয়া উঠুক। মজবুত হউক আমাদের জাতীয় ভ্রাতৃত্ববোধ। সকল ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দলমতের মানুষের মধ্যে গড়িয়া উঠুক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের অটুট বন্ধন। সহনশীলতা, সহাবস্থান ও পরমতসহিষ্ণুতার চর্চা হউক সমাজের সর্বত্র। ঘুচিয়া যাক ধনী-দরিদ্র, উঁচু-নিচু ও ক্ষমতাবান-ক্ষমতাহীনের ফারাক। ঈদের আনন্দে ধুয়ে-মুছে যাক সকল দুঃখ-গ্লানি। মহামিলনের এই উৎসব উপলক্ষে আমরা দেশবাসীকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন বিপণিবিতানের ব্যবসায়ীদের প্রতি জানাই সমবেদনা ‌ও সহমর্মিতা।


ঈদুল ফিতরের বিশেষ দিক, উৎসবটা আসে এক মাস সিয়াম সাধনার পর। সকল প্রকার ইন্দ্রিয় সংযম পালন, আত্মিক বিশুদ্ধতা অর্জনেরও সাধনা চলে এই সময়ে। শুধু দিবাভাগে পানাহার হইতে বিরতিই নহে; সেহরি ‌ও ইফতারেও খাদ্য গ্রহণ করিতে হয় পরিমিত। এমনকি আচার-আচরণে‌ও প্রদর্শন করিতে হয় কঠোর সংযম। এই দীর্ঘ অনুশীলনের মধ্য দিয়া জন্ম লয় এক নূতন মানুষ, যে তার দরিদ্র নিকটাত্মীয় তো বটেই; দরিদ্র প্রতিবেশীর প্রতিও সহমর্মী হয়। যাহার দ্বারা অপরের অনিষ্ট সাধন অকল্পনীয়। এই দিক হইতে বলা যায়, ঈদুল ফিতর একজন মুসলমানের জন্য নূতন করিয়া জীবনকে সাজাইবার অঙ্গীকার গ্রহণেরও উৎসব।


আমাদের প্রত্যাশা, আগামী দিনগুলিতেও দরিদ্র ও অসহায় মানুষের প্রতি সহমর্মিতা অব্যাহত থাকিবে। পরিস্থিতির সুযোগ লইয়া মজুতদারি, সিন্ডিকেটবাজি ইত্যাদির মাধ্যমে নিত্যপণ্যের গলাকাটা দাম আদায় বন্ধ হইবে। সর্বোপরি ধর্মীয়, রাজনৈতিকসহ সকল ইস্যুতে হিংসা-হানাহানির পথ পরিহার করিয়া সমাজে শান্তি ‌ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখিতে সর্বশ্রেণিই সচেষ্ট থাকিবে। কথাগুলি বলিবার কারণ, বিগত দিনসমূহে আমরা নানা কৌশলে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলিয়া ব্যবসায়ীদের একটা অংশকে অতিমুনাফা লুটিতে দেখিয়াছি; কতিপয় উগ্রবাদীর ছড়ানো গুজবে কান পাতিয়া অনেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করিয়াছে; রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রধান দুই শিবির নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নিজেদের মধ্যকার আলোচনার পরিবর্তে সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হইয়াছে; যাহা দেশের মানুষ তো বটেই, অর্থনীতির জন্যও মোটেও কল্যাণকর নহে।


প্রতিবার পরিবার ‌ও স্বজনদের সহিত ঈদ উৎসব উদযাপনের জন্য বিপুলসংখ্যক কর্মজীবী মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন বড় শহর হইতে গ্রামে যায়; যাহা একদিকে গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতি দেয়, অপরদিকে সমাজের উপরতলায় প্রবল বিচ্ছিন্নতা সত্ত্বেও বিশেষত মধ্যবিত্ত ‌ও নিম্নবিত্তের মধ্যে দৃঢ় সামাজিক বন্ধনের বার্তা দেয়। সামাজিক পুঁজি হিসাবে উহা আমাদের জাতীয় সম্পদও বটে।



আশার বিষয়, ঈদে ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তি ইতোপূর্বে প্রায় নিয়তি হইয়া দাঁড়াইলেও এইবার অন্তত উল্লেখযোগ্য কোনো অভিযোগ শ্রুত হয় নাই। টিকিট বিক্রয় এবং শুধু টিকিটধারী যাত্রীদের রেল ভ্রমণ নিশ্চিত করিতে যে ব্যবস্থা গৃহীত হইয়াছে; কিছু সমালোচনা সত্ত্বেও উহা বেশ প্রশংসা পাইয়াছে। অন্যান্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও এই রূপ শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যাইবে বলিয়া আমাদের বিশ্বাস। ঈদ উদযাপন শেষে এই সকল মানুষ যাহাতে নিরাপদে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে কর্মস্থলে প্রত্যাবর্তন করিতে পারে, সেই দিকেও নজর রাখা বাঞ্ছনীয়। 




আমরা জানি, দুই বৎসরের করোনা অতিমারির ধাক্কা এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতি, তৎসহিত জনজীবনও নানা সংকট মোকাবিলা করিতেছে। যদিও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পাইয়াছে; সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অনেকে নূতন করিয়া দারিদ্র্যসীমার নিম্নে পতিত হইয়াছে। তৎসত্ত্বেও পারস্পরিক সহযোগিতা-সহমর্মিতার ভিত্তিতে ঈদ উদযাপিত হইলে কাহারও জন্য আনন্দের কোনো ঘাটতি পড়িবে না বলিয়া আমাদের বিশ্বাস। ঈদ উৎসব হইয়া উঠুক সর্বজনীন– এই কামনায় সকলকে ঈদ মোবারক। ঈদ মোবারক। ঈদ মোবারক।

আরও খবর


65e00348b1b45-290224100840.webp
তারুণ্যের ভাবনায় দেশের চিত্র: আজ ও আগামী

২৯ দিন ২ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে


65de7f7be59d3-280224063403.webp
একুশের ভাষা আন্দোলন ও মওলানা ভাসানী

৩০ দিন ৬ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে


deshchitro-65db37a1c4f3c-250224065041.webp
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৫তম বার্ষিকী।

৩২ দিন ১৭ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে


deshchitro-65d613bbf23f9-210224091611.webp
বই পড়া কেনো প্রয়োজন সবার?

৩৬ দিন ১৫ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে



65ccbd96b3935-140224071814.webp
রহস্যঘেরা সুন্দরবন।

৪৩ দিন ২২ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে