প্রশ্ন: ইহরাম পরিধানের পর কী কী কাজ করা যাবে না এবং দম কখন দিতে হয়—বিস্তারিত জানতে চাই। মুনির হোসেন, কুমিল্লা
উত্তর: হজ বা ওমরাহর নিয়তে তালবিয়া পাঠ করে বিশেষ নিয়মে নিজেকে আবদ্ধ করার নামই ইহরাম। ইহরাম সম্পন্ন করার পর স্বাভাবিক অবস্থার মতো সব কাজ করা বৈধ নয়। ইহরাম অবস্থায় যা করা যাবে না, তার একটি তালিকা দেওয়া হলো—
» মাথা ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গ থেকে চুল-পশম মুণ্ডন করা, কাটা বা ওপড়ানো এবং নখ কাটা যাবে না। (সুরা বাকারা: ১৯৬, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
» পুরুষের জন্য সেলাই করা কাপড় পরা নিষেধ। পায়ের পাতার ওপরের উঁচু হাড় ঢেকে যায় এমন জুতা-স্যান্ডেলও পরা যাবে না। (মুসলিম) নারীরা স্বাভাবিক সব কাপড় ও মোজা পরতে পারবে। তবে চেহারায় নেকাব বা চেহারার সঙ্গে লেগে থাকে এমন পোশাক পরা যাবে না। তবে পরপুরুষের নজর থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। (আবু দাউদ)
» পুরুষের জন্য মাথা ও মুখমণ্ডল আবৃত করা নিষেধ। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
» ইহরামের কাপড়ে বা শরীরে আতর বা সুগন্ধযুক্ত তেল, পাউডার, স্নো ইত্যাদি ব্যবহার করা নিষেধ। (মুসলিম, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
» ইহরাম অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী সহবাস করা, কামোদ্দীপক কথাবার্তা ও কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া নিষেধ। (সুরা বাকারা: ১৯৭, মুয়াত্তা মুহাম্মদ)
» কোনো বন্য পশু শিকার করা বা শিকারিকে সহযোগিতা করা যাবে না। (সুরা মায়িদা: ৯৬, তিরমিজি)
» ঝগড়া-বিবাদ করা যাবে না। এটি স্বাভাবিক অবস্থায়ও নিষিদ্ধ। ইহরাম অবস্থায় আরও বেশি নিষিদ্ধ। (সুরা বাকারা: ১৯৭, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
» কাপড় বা শরীরের উকুন মারা যাবে না। তাবিয়ি ইকরিমা (রহ.)কে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘ইহরামকারী কাপড়ে উকুন দেখলে কী করবে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘আলতোভাবে ধরে মাটিতে রেখে দেবে; মেরে ফেলবে না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
» ইচ্ছাকৃতভাবে ফল-ফুলের ঘ্রাণ নেওয়া এবং সুগন্ধিযুক্ত খাবার খাওয়া মাকরুহ। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
দম কখন ওয়াজিব হয়
ইহরাম অবস্থায় যেসব কাজ নিষিদ্ধ, তাতে লিপ্ত হওয়া গুনাহ। এর কারণে হজ অসম্পূর্ণ হয় যায়। এ ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে ‘দম’ বা কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব হয়ে যায়। সেই সব কাজের কোনো একটি বাদ গেলে হজে দম দেওয়া তথা কোরবানি করা ওয়াজিব হয়ে যায়, তা হলো সাফা-মারওয়া শায়ি করা, মিকাত পার হওয়ার আগে ইহরাম পরা, সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান, মুজদালিফায় রাতযাপন, মুজদালিফার পরে মিনায় অন্তত দুটি রাত কাটানো, কঙ্কর নিক্ষেপ করা, হাদি (পশু) জবাই করা (তামাত্তু ও কেরান হাজিদের জন্য), চুল কাটা ও বিদায়ী তাওয়াফ। (প্রশ্নোত্তরে হজ ও ওমরাহ)
এ ছাড়া আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের আগে স্ত্রীসহবাস করলে হজ নষ্ট হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে গরু বা উট জবাই করা ছাড়াও পরের বছর তা কাজা করা জরুরি। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ, শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
সূত্র: দৈনিক আজকের পত্রিকা
৭ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
৫ দিন ৫ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে
১০ দিন ২২ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
১১ দিন ১৫ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
১১ দিন ১৭ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
১২ দিন ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে
১৩ দিন ১ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
১৩ দিন ১৫ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে