শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় বিয়েবাড়িতে পুলিশের পিটুনিতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে এক বৃদ্ধা নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার (৩ আগস্ট) দিনগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের চরমালগাঁও ভাদুরীকান্দি গ্রামের সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাকশাহার গ্রামের ভিক্ষুক সুলতান খার স্ত্রী পেয়ারা বেগম (৬০), চরমালগাঁও ভাদুরীকান্দি গ্রামের মো. শরিয়াতুল্লাহ সরদার (২৬), শামীম ব্যাপারী (১২), আমানুল্লাহ সরদার (৩৫), চৈতি আক্তার (২৪), মীম আক্তার (১৪), স্বপ্না আক্তার (১৫) ও সুমী আক্তার (১৪)।
আহতদের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) চরমালগাঁও ভাদুরীকান্দি গ্রামের জয়নাল মল্লিকের মেয়ে নুপুর আক্তারের (১৮) বিয়ের দিন ধার্য ছিল। বুধবার রাতে নুপুরের গায়েহলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গায়েহলুদ শেষে রাত ১২টার দিকে চার তরুণী সাউন্ড বক্সে মিউজিকের তালে নাচছিলেন। এ সময় ডামুড্যা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফোয়াদ হোসেনসহ দুজন কনস্টেবল বশিরুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান পুলিশের পিকআপ থেকে নেমে হঠাৎ বিয়েবাড়িতে প্রবেশ করে গাছের ডাল দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন।
বিয়েবাড়ির লোকজন কারণ জানতে চাইলে তখন পুলিশ বলে সাউন্ড বক্স বাজছে কেন? এ সময় পুলিশের পিটুনিতে ১০ জন আহত হন। তাছাড়া বিয়েবাড়ির প্লাস্টিকের বেশ কয়েকটি চেয়ার ভেঙে ফেলে পুলিশ। পরে আহতদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঘটনার পর রাত দেড়টার দিকে ডামুড্যা থানার এসআই সজল কুমার পালসহ পাচঁজনের পুলিশের একটি দল বিয়েবাড়িতে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে।
আহত পেয়ারা বেগম বলেন, ‘দাঁড়িয়ে আমার ভাতিজির গায়েহলুদের অনুষ্ঠান দেখছিলাম। হঠাৎ পেছন থেকে লাঠি দিয়ে কেউ একজন বেশ কয়েকটি আঘাত করে। আমি মাটিতে পড়ে যাই। পরে দেখি পুলিশ। আমি এখন হাঁটতে পারছি না। মনে হয় পেছনের হাড় ভেঙে গেছে। আমি এর বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ভিক্ষা করে। চিকিৎসা করার টাকা পাবো কোথায়? আমি ব্যথায় মরে যাচ্ছি।’
মেয়ের চাচা ফারুক ভান্ডারি ও আহত আমানুল্লাহ সরদার, শামীম ব্যাপারী ও চৈতি বলেন, ‘পুলিশ এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারতো। তা না করে মারধর শুরু করে, যা অমানবিক। আমরা এর বিচার দাবি করছি।’
ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা রতন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে একটি বিয়েবাড়িতে রাতে সাউন্ড বক্স বাজাচ্ছিল। পুলিশের এসআই ফোয়াদ ও দুজন কনস্টেবল এসে বিয়েবাড়ির লোকজনকে গাছের ডাল দিয়ে মারধর করে ও চেয়ার ভাঙচুর করে, যা দুঃখজনক। শুধু তাই নয়, আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছে ফোয়াদ।’
এ বিষয়ে ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফ আহমেদ বলেন, ‘রাতে ওই এলাকায় উচ্চ সাউন্ডে বক্স বাজানো হচ্ছে জানিয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়া হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে বিয়েবাড়ির লোকজনের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে শুনি। পরে আবার এসআই সজলসহ পাচঁ পুলিশের একটি দল বিয়েবাড়িতে পাঠাই। তারা ঘটনাটি শুনে দুঃখ প্রকাশ ও সমাধান করে চলে আসেন।’
১১ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
১২ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
১৬ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
১৯ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
২০ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
২ দিন ১১ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
২ দিন ২০ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে