মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের কড়া হুঁশিয়ারি ওবায়দুল কাদেরের দুই বিভাগে হতে পারে বৃষ্টি সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬ কে হচ্ছেন শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান.? নন্দীগ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২ জনের জরিমানা ঝিনাইদহের উদয়পুর পবহাটি এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে হাফেজ ছাত্রকে বলাৎকারের বিষয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা নলছিটি কৃষি ব্যাংকে উৎসবমুখর পরিবেশে হালখাতা উদযাপন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মামলা,কালিগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ তীব্র তাপদাহে নাকাল জনজীবন, সারাদেশের ন্যায় সুন্দরগঞ্জে বৃক্ষরোপণ করলো ছাত্রলীগ। জয়পুরহাটে ১৬ টি স্বর্ণের বারসহ চোরাকারবারি আটক রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে হিট স্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু। অবৈধ মাটি উত্তোলনের দায়ে অভিযুক্তকে লাখ টাকা জরিমানা বে-টার্মিনালের ৪টি টার্মিনালই বিদেশি বিনিয়োগে হবে - বন্দর চেয়ারম্যান মাতামুহুরি নদীতে নিখোঁজ সেই দুই জেলেকে মৃত উদ্ধার জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে চশমা মার্কা ভোট চাই : ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জুনাইদ সালুয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান একেএম ফরিদ উদ্দিন খান আর নেই নাগেশ্বরীতে চরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে ভেড়া বিতরণ চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে মাছ ধরার ঝাঁক ঘিরতে গিয়ে ২ যুবক নিখোঁজ ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক-স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী আবারও টেকনাফে এসে পড়লো গুলি

১০৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের

সংগৃহীত ছবি

◾ নিউজ ডেস্ক 


চট্টগ্রামের যানজট ও জনভোগান্তি নিরসনে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ৩২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেকের সভায় অনুমোদন পায় চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। তবে ডিজাইনে ত্রুটি ও সঠিকভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই না হওয়ার কারণে নতুন করে ডিজাইন পরিবর্তন ও নতুন কিছু অঙ্গ যোগ করায় খরচ ও সময় বাড়াতে হচ্ছে প্রকল্পটির।


এখন ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে এক্সপ্রেসওয়ের। পাশাপাশি সময় বাড়ছে আরও দুই বছর। তবে নতুন কিছু জায়গায় পরিবর্তন আনায় জনগণ আগের তুলনায় আরও বেশি সুফল পাবে বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। এই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে চট্টগ্রামের চিত্র বদলে যাবে বলে মনে করছেন তারা।


প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে একনেকে অনুমোদন পেলেও কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। তাই প্রকল্পটির কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়াতে হয়। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের আপত্তি, জমি অধিগ্রহণে অপেক্ষা, ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি না পাওয়া, লালখান বাজার অংশের নকশা সংক্রান্ত আপত্তি ও বিকল্প সড়ক চালুতে সময়ক্ষেপণসহ নানা কারণে প্রকল্পটি দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে।


প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ -সিডিএ। নির্মাণকাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র‌্যাঙ্কিন জেভি । উড়ালসড়ক প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছিল পরিকল্পনা কমিশনে। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা শেষে নতুন করে ব্যয় ও সময় নির্ধারণ হয়। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। এটির মূল ব্যয় ছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৪৮ কোটি ১১ লাখ ১৭ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ ১১ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি মোট ২ হাজার ৩১২ কোটি ২২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা (৭১ দশমিক ১৩ শতাংশ) এবং বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ।


বর্তমানে অনুমোদিত প্রকল্পের ফ্লাইওভারের অ্যালাইনমেন্টে সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে। ভূমি সমতলে রাস্তার প্রশস্ততা বজায় রাখতে পিয়ারের পরিসর কমিয়ে ফ্লাইওভারের নকশা সংশোধন করা হয়েছে। কংক্রিটের গ্রেড উন্নয়ন ও অতিরিক্ত নির্মাণকাজের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি, কিছু অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধি এবং বাস্তবায়ন মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পটি প্রথম সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় একনেক সভার কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে।


প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সাবেক সদস্য ও বর্তমান পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এবং কার্যক্রম আছে যেগুলো পরিবর্তন বা যোগ না করলে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সার্থকতা থাকবে না। শুরুতেই কেন এসব চিন্তা করা হয়নি এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি করেছিলাম। তারা ভুল স্বীকার করেছেন। প্রকল্প তৈরির সময় এসব তাদের নজরে ছিল না। কিন্তু এসব কার্যক্রম এত গুরুত্বপূর্ণ যে বাধ্য হয়েই প্রকল্পটি সংশোধনীর সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। তবে যে ব্যয় বাড়ছে তা অনেক পর্যালোচনার পরই চূড়ান্ত করা হয়েছে।’


ব্যয় ও সময় বাড়ার বিষয়ে প্রকল্পটির পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রকল্পটি যখন তৈরি হয় তখন কোনো ড্রয়িং ও ডিজাইন করা হয়নি। শুধু ট্রাফিক স্টাডিসহ আনুষঙ্গিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছিল। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব- ডিপিপি অনুমোদনের পর পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপরই বাকি কাজ করতে হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের আপত্তির কারণে পুরো অ্যালাইনমেন্ট (যে স্থান দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে যাবে) পরিবর্তন করতে হয়েছে। নতুন করে ড্রয়িং ও ডিজাইন করতে হয়। এরপর প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হলে ইউটিলিটি স্থানান্তরের জটিলতা সৃষ্টি হয়। এখানে অনেক ব্যয় বেড়ে গেছে। পাশাপাশি ভূমি অধিগ্রহণ প্রথমদিকে ১২০ কাঠা করার কথা থাকলেও এখন ৬০০ কাঠার মতো নিতে হচ্ছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশনের চুলচেরা বিশ্লেষণের পর প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে।’


প্রকল্পের শেষ সময়ে যেসব ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে সেগুলো হলো--প্রকল্পের সল্টগোলা থেকে বারেক বিল্ডিং পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে প্রকল্পের অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন করতে হয়েছে। এতে ফাউন্ডেশন, সাবস্ট্রাকচার এবং সুপার স্ট্রাকচারের পরিবর্তন হয়েছে। এ ছাড়া স্প্যানের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে অ্যালাইনমেন্টের মধ্যে কেইপিজেড, সিমেন্ট ক্রসিং, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এলাকা, সিইপিজেড, বন্দর এলাকা, কাস্টমস সার্কেল এবং আগ্রাবাদ এলাকার ২০টি জংশন পড়েছিল। যান চলাচলে সুবিধার্থে এবং বিভিন্ন সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্প্যানের দৈর্ঘ্য পরিবর্তন করা হয়। এক্ষেত্রে মূল ডিজাইনের ৩০-৩৫ মিটার থেকে বাড়িয়ে এখন করা হচ্ছে ৪৫-৫০ মিটার। আরও যেসব ক্ষেত্রে পরিবর্তন করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে--পাইল ক্যাপের সাইজ-পিয়ার এবং কংক্রিট গ্রেডের পরিবর্তন।


রেললাইনের ওপর পোর্টাল ফ্রেমের মাধ্যমে পিয়ার নির্মাণ। ফাউন্ডেশনের ডিজাইন পরিবর্তন, পিসি গার্ডারের পরিবর্তে আরসিসি বক্স গার্ডার যুক্ত করা। ডেক স্ল্যাবের থিকনেস বা পুরুত্ব বৃদ্ধি করা, র‌্যাম্পগুলোর পিসি গার্ডারের পরিবর্তে আরসিসি বক্স গার্ডার অন্তর্ভুক্তকরণ করা হয়েছে।


যেসব খাত নতুন করে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলো হলো--এলইডি লাইট স্থাপন, সিসি টিভি ক্যামেরা (কেবল ও নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থাসহ) এবং প্লাম্বিং সিস্টেম (ফ্লাইওভার ও র‌্যাম্পসহ)। আরও আছে রাস্তার উভয়পাশে ড্রেন নির্মাণ, ফ্লাইওভারের সৌন্দর্য বর্ধন, মধ্যবর্তী প্রতিবন্ধক নির্মাণ এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে মনিটরিং ভবন ও ১৩টি কন্ট্রোল ইলেকট্রিক্যাল রুম নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে অর্থায়নের ধরনও পরিবর্তন হয়েছে।


প্রকল্পটির বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বর্তমানে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা এই প্রকল্পকে জনগণের জন্য আরও সহজ করেছে। প্রথমে যখন শুরু হয়, সেভাবে যদি থাকত, তাহলে তেমন একটা কাজে আসত না। এখন এটা জনগণের কাজে লাগবে।


আরও খবর