জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনায় দু'পক্ষের দস্তাদস্তিতে ছাদেক আলী মাস্টার (৭০) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন। তবে তাঁকে কিলঘুষি দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ তোলেছেন তাঁর স্বজনরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে তিন নারীসহ পাঁচজনকে।
শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে উপজেলার পার্থশী ইউনিয়নের রৌহেরকান্দা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত ছাদেক আলী মাস্টার ওই গ্রামের মৃত বাবর আলীর ছেলে। তিনি পার্শ্ববর্তী ঢেংগারগড় সর্দার বাড়ি জামে মসজিদে ইমামমতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এর আগে ইসলামপুর ইসলামীয়া কামিল মাদরাসা থেকে সহকারী শিক্ষক পদে অবসর গ্রহণ করেন ছাদেক আলী।
ইসলামপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, আটককৃত নারীরা হলেন মৃত জয়নাল আহম্মেদের স্ত্রী
গোলাপফুল বেগম (৭০), মিয়া উদ্দিনের স্ত্রী মোছা. নার্গিস (৬৫) নুর হোসেনের স্ত্রী মোছা. ফুলে (৪০), ছামিউল (৬০) এবং অজ্ঞাত এক যুবক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়ির সামনে সড়কের পাশের জমিতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন করাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন ফুলুর ছেলে রফিকুল ইসলাম দুখুর সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাদেক আলীর। এনিয়ে দু'পক্ষের কথা-কাটাকাটি হয়। দু'পক্ষের মধ্যে দস্তাদস্তির এক পর্যায়ে ছাদেক আলী মাস্টার অসুস্থ্য হয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত অবস্থায় ছাদেক আলীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সেঁজুতি শারমিন সারা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাদেক আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ বলেন, 'বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন করতে সড়কের পাশ দিয়ে ড্রেন কেটে দেওয়াকে কেন্দ্র করে পূর্ব শক্রুতার জের ধরে প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম দুখু, নাচ্চু মিয়া, বাচ্চা শেখ, তোতা শেখ, লাজু শেখ ও জালাল শেখ গংদের সঙ্গে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে আমার বাবাকে তারা ধাক্কা দিয়ে কিলঘুষি মারে। এতে আব্বা গুরুত্বর আহত হন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আব্বাকে মৃত ঘোষণা করেন। দিবালোকে আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।'
অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম দুখু বলেন, 'তুচ্ছ ঘটনায় কথা কাটাকাটি হয়েছে ঠিক। তবে আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাদেক আলীকে আঘাত করেনি। মূলত তিনি দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। তাঁর হর্ডে রিং পড়ানো ছিলো। উচ্চস্বরে কথা বলায় তিনি অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। আমাদের অযথা ফাঁসানো হচ্ছে।'
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার এ এ এম আবু তাহের বলেন, 'হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাদের আলীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।'
ইসলামপুর থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান মোড়ল বলেন, 'মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাদেক আলীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।''
এ ব্যাপারে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী বলেন, দিনে দুপুরে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।'
৫ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৪৯ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে