ব্রাজিলে প্রবল বৃষ্টিপাতে ৩৯ জনের মৃত্যু ডোমারে বিএনপির ভোট বর্জনের ডাক ডোমার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নীলফামারীতে সেরা প্যানেল আইনজীবী নির্বাচিত হয়েছেন ডোমারের অ্যাড. আনোয়ার হোসেন দীর্ঘ একযোগেও ভোগান্তি কমেনি ব্রিজ পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেই; জনগণের ভোগান্তি চরমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কমিউনিটি ব্যাংকে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু সহজ জয় দিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করলো বাংলাদেশ আগামী সপ্তাহে জর্ডানের বাদশাহ’র সাথে বৈঠক বাইডেনের সাধারন ভোটারদের আস্থা রশিদ ঠিকাদার জয়পুরহাটে দুই ছাত্রীকে বিয়ে, তৃতীয়জনকে কুপ্রভাব ৪০ ফিলিস্তিনি নারীকে সুখবর দিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা আজ কুতুবদিয়ায় খেলাঘরের ৭২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন কৃষ্ণচূড়ায় রঙ লেগেছে ঝড়-তুফানের আশঙ্কা , সতর্কসংকেত ৭ অঞ্চলে ট্যুরিজম বোর্ডের সঙ্গে কাজ করবে ডিএনসিসি বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাবনা গৃহীত হলো জাতিসংঘে প্রান্তিক মানুষদের মূলধারায় নিয়ে আসতে চেষ্টা করা হচ্ছে: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী গরমে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা প্রতিকারে যা করবেন

পূর্ণাঙ্গ ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় কুরআন -সুন্নাহর বিকল্প নেই

admin - দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 16-08-2023 08:13:23 am


◾ আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল মালেক : মুসলমানের পরিচয় তার কর্মে-আচরণে ও চলাফেরায় । কর্মে যথাযথভাবে ইসলামকে অনুসরণ না করলে নিজেকে খাঁটি মুসলমান হিসেবে পরিচয় দেয়ার কোন অবকাশ নেই। সেজন্য কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন গঠন করার মধ্যেই কল্যাণ নিহিত। 


ইসলাম শুধু একটি ধর্মের নাম নয়। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। যেখানে জীবন গঠনের সবচেয়ে সুন্দর নিয়মনীতি রয়েছে। ইসলামের মৌলিক সব বিষয় সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। কিভাবে জীবন গঠন করলে ইহ ও পরকালে মুক্তি মিলবে তার বিধানও দেয়া আছে। সুতরাং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন পেতে কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই।


নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতের মতো ইসলামের মৌলিক বিষয়ের পাশাপাশি প্রাত্যহিক জীবনাচারণেও কুরআন-সুন্নার অনুসরণ ও অনুকরণ করে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। কেননা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো অনেক মুসলিম যথাযথভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করলেও অন্য বিষয়গুলো পালনে তেমন সচেষ্ট থাকেন না। যা একজন খাঁটি মুসলিম হিসেবে গড়ে ওঠার অন্তরায়।


হালাল-হারাম জানা, চলাফেরা ও আচার-আচরণে ইসলামের বিধান জানা,পর্দার বিধান সম্পর্কে জানা এবং ব্যবসায়, চাকরি, শিক্ষা, অর্থনীতি ও সমাজনীতিসহ জীবনের সবদিক কুরআন-সুন্নাহকে একমাত্র পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করতে পারলে পরিপূর্ণ মুসলিম হওয়া যাবে। ইন শা আল্লাহ।


পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল জীবনের জন্য কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞান অর্জন জরুরি। এ বিষয়ে আমরা অনেকেই গাফেল। গুরুত্ব দেই না ইসলামী জ্ঞান আহরণের প্রয়োজনীয়তাকে। অথচ মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কুরআন নাজিলের শুরুতেই ‘ইকরা’ শব্দের উল্লেখ করে মূলত জ্ঞান অর্জনকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই আমরা ইসলামী বিধান সম্পর্কে জানতে পারব। ফলে তা অনুসরণ করে একটি সুন্দর জীবন গঠন করতে সক্ষম হবো।


তাই আমাদের বুঝতে হবে যে, কুরআন-সুন্নাহ প্রাত্যাহিক জীবনের প্রতিটি কর্মে প্রতিফলিত না হলে নিজেকে প্রকৃত মুসলমান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা কখনোই সম্ভব হবে না ৷


প্রিয় ভাই ও বোন!

চারপাশে ফেতনার ছড়াছড়ি। ইসলামের নামে বহুমতবাদ, বহু বিভক্তি বিদ্যমান। একদল লোক আছে যারা কুরআন মানে দাবি করে অথচ রসুলুল্লাহর (সা.) সুন্নাহ ও হাদীসকে অস্বীকার করে চলছে। 

অথচ আল্লাহ বলেন; আল্লাহ আপনার উপর কিতাব (আল-কুরআন) ও হিকমাহ নাযিল করেছেন। [সূরা নিসা:১১৩]

অধিকাংশ আলেম হিকমাহর তাফসির করেছেন সুন্নাহ বলে। আল্লাহ তা'আলা তাঁর ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা 'আলা বলেছেন;

'হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। [সূরা নিসা: ৫৯]

আর রাসূলের আনুগত্য করার নির্দেশ দেওয়ায় তাঁর সুন্নাহ শরীয়তের দলিল হওয়া ও সে অনুযায়ী আমল করা অত্যাবশ্যকীয়। আল্লাহ তা'আলা বলেছেন;

 'আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানি করবে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম, যেখানে সে চিরদিন অবস্থান করবে। [সূরা জীন: ২৩]

রাসূলের অবাধ্যতা করলে তার জন্য শাস্তির বিধান সাব্যস্ত থাকায় প্রমাণিত হলো যে, সুন্নাহ অবশ্যই আল-কুরআনের মতই হুজ্জত (দলিল)। 

আল্লাহ তা'আলা বলেছেন যে,

 "রাসূল সা. তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও। [সূরা হাশর: ৭]

 

আবার এমন অনেক মহান ব্যক্তি দাবিদার রয়েছে তারা ইবাদতের কিছু ক্ষেত্রে ইসলাম ও রসুলের (সাঃ) আর্দশ মানে। বাকী বিষয়ে রসুলের (সাঃ) আদর্শ বাদ দিয়ে নিজের পছন্দনীয় ব্যক্তিকে আদর্শ হিসেবে মেনে নেয়। এককথায় সুবিধাভোগী মানুষ। তাঁরা নিজ মতাদর্শের দ্বীন প্রতিষ্ঠায় প্রচার, প্রচেষ্টা চালায়। কোটি কোটি অর্থ খরচ করে। অথচ রসুলুল্লাহর (সা.) আদর্শের চেয়ে উত্তম আর্দশ কি হতে পারে!? আল্লাহ তা'আলা বলেছেন;

 'অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। [সূরা আল-আহযাব: ২১]


রাসূলের অনুকরণ ও অনুসরণ বলতে বুঝায় দালালাতুল কুরআন (কুরআনের সুন্নাহ মুতাবেক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সব কাজ করেছেন ও তিনি নিজে যা সুন্নত করেছেন সে সব কাজ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুম'আর খুতবায়ে ঘোষণা করে বলেছেন,

'অতঃপর উত্তম হাদীস (কথা) হলো আল্লাহর কিতাব, আর উত্তম হিদায়েত হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিদায়েত'(মুসলিম -৮৬৭)


অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. তাঁর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন;

'তোমরা আমার সুন্নত ও আমার পরে হিদায়েতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতের অনুসরণ করো, এগুলো শক্ত করে আঁকড়ে ধরো' (আবুদাউদ -৪৬০৭)


আবার বর্তমানে অনেক আলেম কুরআন ও হাদীসের অনেক বক্তব্য, তথ্য ও কেয়ামতের আলামত রসুল (সাঃ), সাহাবীদের মেতাবেক অনুধাবন না করে নিজের মনমতো ব্যাখা করে চলছে। তাদের যুক্তিতে মিললে না হাদীস মানবে নাহলে হাদীসের অর্থ পরিবর্তন করে নিজেদের মনমতো ব্যাখার প্রচেষ্টা চালায়।

অথচ - মুসলিম হল আল্লাহর কিতাব ও রসুলের (সাঃ) সুন্নাহর নিকট একনিষ্ঠ আত্মসমর্পণকারী।


একবার ইসরা ও মিরাজকে কেন্দ্র করে মক্কায় প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একদিন কিছু লোক আবু বকর -এর কাছে এসে বলে—‘আচ্ছা, তোমার বন্ধু (রসুল(সা.) কি বলছে শুনেছ কি?'


আচ্ছা, তোমার বন্ধু (রসুল(সাঃ)) কি বলছে শুনেছ কি?'

তিনি বললেন ,কী বলেছে?’

এবার তারা সুযোগ পেয়ে হাসি চাপতে চাপতে বলল, সে নাকি এক রাতে বাইতুল মুকাদ্দাস গিয়েছে এবং আকাশেও পরিভ্রমণ করে এসেছে!'

আবু বকর জানতে চান, ‘সত্যই কি তিনি এমন কথা বলেছেন?' তাঁর কণ্ঠে বিশেষ কিছু ছিল। 

এটা বুঝতে পেরে তারা বলল অবশ্যই বলেছে।'

এবার আবু বকর বিন্দু পরিমাণ দ্বিধা না করেই বললেন, যদি তিনি এ কথা বলে থাকেন, তবে অবশ্যই সত্য বলেছেন।'

সেদিন থেকেই বরং তার আগে থেকেই তাঁর নাম সিদ্দিক, সত্যবাদী। স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা বলেন যে,তথা,ওই ব্যক্তি যে সত্য নিয়ে এসেছে এবং তাঁকে সত্যায়ন করেছে।' (সূরা জুমার : ৩৩)


আবু বকর (রাঃ)ছিলেন সত্যবাদী তিনি বিনা যুক্তিতে রসুল(সাঃ) কথাকে সত্য হিসেবে মেনে নেন।

বর্তমানেও আবু বকরের (রা.) মত একনিষ্ঠ ঈমানই মুক্তির পথ।


দেখুন,বর্তমান সময়টা আধুনিক প্রযুক্তির। এ সময়টা খুবই সেনসেটিভ। কারণ, আধুনিক যুগের এই প্রযুক্তিগুলো আমাদের বিপথগামী করতে পারে খুব সহজেই। তাই এসব প্রযুক্তির যেন অপব্যবহার হতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। নিজের পরিবার ও সমাজকে রক্ষা করতে হবে। কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত বিধিবিধানগুলো জেনে তা মেনে চলতে পারলে আধুনিক প্রযুক্তির ফেতনা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।


কাজেই, হে মুমিন_ ঈমানকে মজবুত করুন যেভাবে সাহাবায়ে কেরাম করেছেন ৷ আমল করুন যেভাবে সাহাবায়ে কেরাম করেছেন ৷ কারণ রাসূল সা. বলেছেন যে,আমি তোমাদের মধ্যে দুটি জিনিষ রেখে দিয়েছি ,যদি তোমরা তা আঁকড়ে ধরো ৷ তাহলে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না ৷ তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব কোরআন এবং আমার সুন্নাহ ৷

অতএব রাসূলের সুন্নাহের রঙে নিজেকে রঙিন করার মধ্যেই নিহিত ইহ ও পরকালের মুক্তি ৷ 

আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রতিটি কাজে কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। 



লেখক, আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল মালেক 

শিক্ষক:  জামিয়া মিফতাহুল উলুম কাওমী মাদ্রাসা (লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ)

সদস্য, বাংলাদেশ নবীন লেখক ফোরাম

আরও খবর