ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করবে তুরস্ক: এরদোগান যেদিন থেকে হতে পারে সারাদেশে বৃষ্টিপাত দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার পেলেন মিথিলা ফের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিলো ৪০ বিজিপি সদস্য টেকনাফে আউশ ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৩শ কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে দুই প্রতারক জনতার হাতে আটক সন্তানের হার্টে ৫ ছিদ্র বাঁচাতে বাব‌ার করুণ আকুতি চাটখিল স্কয়ার হাসপাতালের এমডি'র একক স্বেচ্ছাচারিতা, দখল ও অর্থ আত্মসাৎ এর প্রতিবাদ চাটখিল স্কয়ার হাসপাতালের এমডি'র একক স্বেচ্ছাচারিতা, দখল ও অর্থ আত্মসাৎ এর প্রতিবাদ কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে ডেউটিন দিয়ে সহায়তা করেন কৃষিমন্ত্রী কন্যা উম্মে ফারজানা শ্রমজীবী মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করলেন জেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু পাবনায় তীব্র তাপদাহে তৃষ্ণা নিবারণে ছাত্রদলের শরবত বিতরণ পাবনায় তীব্র তাপদাহে তৃষ্ণা নিবারণে ছাত্রদলের শরবত বিতরণ কুতুবদিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম গঞ্জে পিড়িতে বসিয়ে চুল-দাড়ি কাটার দৃশ্য মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী -> উপজেলা পরিষদ নির্বাচন <- হাতীবান্ধায় নির্বাচনী সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ আহত ১০ দলের নির্দেশনা মানছে না টেকনাফ মহিলা দলের দুই নেত্রী চকরিয়ায় পরিষ্কার-পরিছন্নতা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে র‌্যালি চোখ বেঁধে টর্চার সেলে নির্যাতন, টেকনাফের ওসি প্রত্যাহারের গুঞ্জন! ধামরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী আলহাজ্ব আহাম্মদ হোসেন কই মাছ প্রতীকে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন

আয়াতুল কুরসির উচ্চারণ, অর্থ, কখন পড়তে হয়, ফজিলত ও উপকার

admin - দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 30-08-2023 08:17:46 am

পবিত্র কোরআনে সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াতটি ‘আয়াতুল কুরসি’ নামে পরিচিত। আয়াত অর্থ চিহ্ন বা নিদর্শন। কুরসি শব্দের অর্থ চেয়ার বা আসন। আয়াতে ব্যবহৃত কুরসি শব্দ থেকে আয়াতটির নামকরণ করা হয়েছে। আয়াতটি অধিক ফজিলতপূর্ণ। পবিত্র কুরআনের শ্রেষ্ঠতম আয়াত হলো আয়াতুল কুরসি।


আয়াতুল কুরসির উচ্চারণ : ‘আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইউল কাইয়ুম, লা তাখুজুহু সিনাতুও ওয়ালা নাওম, লাহু মা ফিস সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদি, মান জাল্লাাজি ইয়াশফাউ ইনদাহু ইল্লাহ বিইজনিহি, ইয়ালামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়া লা ইউহিতুনা বিশাইম মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শাআ, ওয়াসিআ কুরসিইউহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি, ওয়ালা ইয়াইউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুয়াল আলিইউল আজিম।’


আয়াতুল কুরসির অর্থ : ‘আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তাকে তন্দ্রা অথবা নিন্দা স্পর্শ করে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব তারই। কে সে, যে তার অনুমতি ছাড়া তার কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে তা তিনি অবগত, যা তিনি ইচ্ছা করেন তা ছাড়া তার জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারে না। তার ‘কুরসি’ আকাশ ও পৃথিবীময় পরিব্যাপ্ত; এদের রক্ষণাবেক্ষণ তাকে ক্লান্ত করে না। আর তিনি মহান, শ্রেষ্ঠ।’


হাদিসে আয়াতুল কুরসি পাঠের একাধিক উপকারের কথা এসেছে। যেমন-


কোরআনের গুরুত্বপূর্ণ আয়াত : হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ এক দিন আবুল মুনজিরকে লক্ষ করে বলেন, হে আবুল মুনজির! আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াত তোমার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? আবুল মুনজির বলেন, এ বিষয়ে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল সর্বাধিক অবগত। হজরত রাসুল (সা.) আবার বলেন, হে আবুল মুনজির! আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াত তোমার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? তখন আমি বললাম, আয়াতুল কুরসি (আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ)। এ কথা শুনে তিনি আমার বুকের ওপর হাত রেখে বলেন, হে আবুল মুনজির! তোমার জ্ঞানকে স্বাগতম। সহিহ মুসলিম : ১৭৭০


মৃত্যুর পর জান্নাত : হজরত আবু উমামা আল বাহিলি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশে মৃত্যুর ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।’ সুনানে নাসায়ি : ৯৯২৮


কোরআনের সবচেয়ে সম্মানিত আয়াত : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতিটি জিনিসের একটি চূড়া থাকে। কোরআনের চূড়া সুরা বাকারা। তাতে এমন একটি আয়াত আছে, যা কোরআনের অন্য আয়াতের ‘নেতা’। সেটা হলো আয়াতুল কুরসি।’ সুনানে তিরমিজি : ৩১১৯ 


আয়াতুল কুরসি কখন পড়তে হয়?


হাদিসে আয়াতটি দিনে-রাতে বারবার পড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মুমিনের কর্তব্য, এই পবিত্র আয়াতটিকে প্রতিদিনের অজিফা বানিয়ে নেওয়া। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রতি ফরজ নামাজের পর যে ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি পড়বে তার জান্নাতে যাওয়ার পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।’ নাসায়ি : ১০০


এ ছাড়া প্রতিদিন শোয়ার সময়ও আয়াতুল কুরসি পড়ার কথা বিভিন্ন হাদিসে এসেছে। এ প্রসঙ্গে সহিহ্ বোখারিতে এক আশ্চর্য ঘটনা বর্ণিত আছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে রমজানে জাকাত (সদকাতুল ফিতরের খেজুর) দেখা-শোনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। (রাতে) এক আগন্তুক এসে সেই (স্তূপীকৃত) খাদ্যবস্তু (খেজুর) থেকে মুঠি ভরে নিতে লাগল। আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে হাজির করব। সে বলল, দেখুন, আমি এক অভাবী, প্রয়োজনগ্রস্ত ও পরিবারের ভারগ্রস্ত লোক! আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে নবী কারিম (সা.) বললেন, আবু হুরায়রা! তোমার গত রাতের বন্দির কী হাল? আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সে তার অভাব-অনটন ও পরিবারের ভারগ্রস্ততার কথা বলায় আমার দয়া জেগেছে। তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি। নবী কারিম (সা.) বললেন, দেখো, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে; সে আবারো আসবে। ফলে আমার জানা হয়ে যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বলেছেন আসবে, অবশ্যই সে আসবে। আমি তার অপেক্ষায় প্রস্তুত রইলাম। ইতিমধ্যে সে এসে স্তূপীকৃত খাবার থেকে মুঠি ভরে ভরে নিতে লাগল। আমি তাকে ধরে বললাম, তোমাকে আল্লাহর রাসুলের কাছে হাজির করবই। সে তখন বলতে লাগল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি তো অভাবী লোক, পরিবারের ভারগ্রস্ত, আর আসব না। তার এ কথায় আমার দয়া হলো। ছেড়ে দিলাম। সকালে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার বন্দির কী খবর? আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সে তার প্রচণ্ড অভাবগ্রস্ততা ও পরিবারের ভারগ্রস্ততার কথা বলছিল, তাই আমার দয়া হয়েছে, তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, দেখ, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। সে আবারো আসবে। নবী কারিম (সা.)-এর কথায় তৃতীয় রাতেও আমি অপেক্ষায় রইলাম। একপর্যায়ে সে এসে মুঠি ভরে খাবার নিতে লাগল। আমি তাকে ধরে ফেলি এবং বলি, এবার তোমাকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে হাজির করেই ছাড়ব। এ নিয়ে তিনবার ঘটল যে, তুমি বল, আসবে না, কিন্তু আবারো আস। সে তখন বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আপনাকে এমন কিছু কথা শিখিয়ে দেব, যা দ্বারা আল্লাহ আপনাকে উপকৃত করবেন। বললাম, কী সেই কথা? সে বলল, যখন বিছানায় যাবেন তখন আয়াতুল কুরসি পড়বেন আল্লাহু লা ইলাহা হুয়াল হাইয়্যুল কাউয়ুম শেষ পর্যন্ত। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সকাল পর্যন্ত আপনার জন্য একজন রক্ষাকর্তা নিযুক্ত থাকবেন এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান আপনার কাছে ভিড়বে না। আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, গত রাতে তোমার বন্দি কী করল? বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সে বলল যে, আমাকে এমন কিছু কথা শিখিয়ে দেবে, যার দ্বারা আল্লাহ আমাকে উপকৃত করবেন। তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি। জিজ্ঞাসা করলেন, সে কথাগুলো কী? বললাম, সে বলেছে, যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন আয়াতুল কুরসি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠ করবে। সে বলল, আল্লাহর পক্ষ থেকে সকাল পর্যন্ত তোমার জন্য এক রক্ষাকর্তা নিযুক্ত থাকবেন আর (সকাল পর্যন্ত) কোনো শয়তান তোমার কাছে ভিড়বে না। নবী কারিম (সা.) বললেন, ‘শোনো, সে তোমাকে সত্যই বলেছে, যদিও সে ডাহা মিথ্যুক। এরপর বললেন, আবু হুরায়রা! তুমি কী জান পরপর তিন রাত কার সঙ্গে কথা বলেছ? তিনি বললেন, না। আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, সে ছিল এক শয়তান।’ সহিহ্ বোখারি : ২৩১১


বর্ণিত হাদিস থেকে এটা জানা গেল যে, রাতে শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসি পাঠের সুফল ও ফজিলত এবং শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে এই আয়াতের আমল কত ফলপ্রসূ। আয়াতুল কুরসির ফজিলত সংক্রান্ত হাদিসগুলোতে প্রতিদিন আটবার এই আয়াত পাঠ করার নির্দেশনা পাওয়া যায়। সকাল-সন্ধ্যা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর ও শোয়ার সময়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কেউ যদি এই মোবারক আয়াতের অর্থ-মর্ম স্মরণ রেখে উপলব্ধির সঙ্গে তা পাঠ করে তাহলে তা তার জন্য অত্যন্ত বরকতের বিষয় হবে। 


আয়াতুল কুরসিতে কী আছে?


আয়াতুল কুরসির মর্ম সম্পর্কে যদি চিন্তা করি তাহলে বুঝতে পারব, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ আয়াতে আল্লাহর পরিচয় দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর পরিচয় লাভের চেয়ে বড় জিনিস মানুষের জন্য আর কী হতে পারে? এই জ্ঞানই তো সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান, আর এ বিষয়ে অজ্ঞতাই সবচেয়ে ভয়াবহ অজ্ঞতা। যে আল্লাহর পরিচয় লাভ করে তার কাছে তার নিজ সত্তার, তার চারপাশের সৃষ্টিজগতের এবং এখানে ঘটে চলা সব ঘটনার সূত্র স্পষ্ট হয়ে যায়। জীবন-মৃত্যুর তাৎপর্য বোঝা সহজ হয়ে যায়। জীবনের লক্ষ্য নিখুঁতভাবে জানার এবং সেই লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার সব পথ সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসা জেগে ওঠে। এভাবে আল্লাহর স্মরণ ও পরিচয় মানুষকে দান করে তার আত্মপরিচয়। তাকে সচেতন করে তার নিজের লাভ-ক্ষতি সম্পর্কে।


আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.)-এর বক্তব্য অনুসারে এই মহিমান্বিত আয়াতে দশটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বাক্য রয়েছে। এই দশ বাক্যের মূল বিষয়বস্তু, তাওহিদ। আল্লাহর মহান গুণাবলি এ আয়াতে এমনভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, তা উপলব্ধির পর মুমিনের সর্বসত্তা থেকে ওই পরম সত্যের ঘোষণাই উৎসারিত হয়, যার মাধ্যমে এই মহিমান্বিত আয়াতের সূচনা আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহু, আল্লাহ- তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।



আরও খবর