আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা-১ (তালা--কলারোয়া) আসনটি নিজেদের অনুকূলে রাখতে মরিযা রাজনৈতিক দলগুলো। বিশেষ করে আওয়ামী ও বিএনপি জামাত। দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের ১২ জন সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে চলছে সাজ সাজ রব। ফলে এরই মধ্যে সাতক্ষীরায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় ভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এবারের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণায়। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদানের পাশাপাশি উঠান বৈঠক,সভা-সমাবেশের মাধ্যমে। সরকারের উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। আবার অনেক প্রার্থীরা রং-বেরঙের লিফলেট ও ফেস্টুন টানিয়ে নিজের প্রার্থিতার পরিচয় জানান দিচ্ছেন। অন্যদিকে,রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের সংগঠিত করছে সরকার বিরোধী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। চল মান এক দফা দাবি,সরকারের পদত্যাগ,গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার,নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি।এবং দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সহ নেতা-কর্মীদের কারামুক্তির নানা ইস্যুতে জনমত তৈরি করছে বিএনপি। একই সঙ্গে ভোটেরও প্রস্তুতিও নিচ্ছে তারা। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলার ৪টি আসনই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের দখলে। ৩ টিতে আওয়ামী লীগ ও একটিতে মহাজোট ভুক্ত ওয়ার্কার্স পার্টি। তবে এবার আওয়ামী লীগ ৪ টি আসনই পেতে চায়। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের দলগুলো সর্বদা লড়াইয়ে মরিয়া । এছাড়া এ আসনটি আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক খ্যাত। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র এখন একটাই আলোচনা কোন দলের কে প্রার্থী হচ্ছেন। তত্তাবধায়ক সরকারের অধীনে,নাকি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে- তা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।
সূত্র আরো জানায়,সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের নিজেদের অবস্থান বা জনপ্রিয়তা ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে। তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে মত বিনিময় ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। প্রার্থীতা নিশ্চিত করতে স্ব স্ব রাজনৈতিক দলের উপরি মহলের হেভিওয়েট নেতাদের সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন লবিং গ্রুপিং। সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আওয়ামী লীগের শক্ত ভীত এ আসনটিতে। কিন্তু বর্তমানে মহাজোটগত ভাবে টানা দু'বারের এমপি হিসেবে আসনটি আঁকড়ে আছেন ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। এবারও তিনি প্রার্থিতার তালিকায় শক্ত অবস্থানে আছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রায় অর্ধ ডজন সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থীদের মধ্যেই মনোনয়ন প্রাপ্তির দাবিতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি বিএনপি,জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থীরাও রয়েছেন শক্ত অবস্থানে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এবার মনোনয়ন চাইবেন এ আসনের সাবেক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য,সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সফল সভাপতি,, তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সফল সভাপতি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত রাজপথের সৈনিক জননেতা শেখ নুরুল ইসলাম। ২০১৪ সালে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফাকা মাঠে ১৪দলের অন্যতম শরীক দল ওর্য়ার্কার্স পাটির নেতা এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহকে নৌকা প্রতিক দিয়ে শেখ নুরুল ইসলামকে বসিয়ে দেয় জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ নুরুল ইসলামের দীর্ঘ ৪৫ বজর রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত কারাবরণকারী নেতা, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার শেখ নুরুল ইসলাম বর্তমান স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াত শিবিরের আতঙ্ক। মাত্র ১৩ বছর বয়সে চোখের সামনে পিতা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক তৎকালীন ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি শেখ আব্দুর রহমান ও বড় ভাই জালালউদ্দীনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাক হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল। সেই থেকে শুরু রাজনৈতিক জীবনের হাতেখড়ি। বুকে লালন করে লেখাপড়া জীবনে ১৯৮৯ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালে ছাত্র সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়। ১৯৮৭ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য মনোনীত হন। ১৯৮৮ সালে তালা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে একই পদে পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে তালা উপজেলা আ’লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে তালা উপজেলা মহাজোটের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৪ ও ২০১৯সালে আবারও আ’লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এবং সেই থেকে অদ্যবদি সভাপতি দায়িত্ব পালন করে আসছে।১৯৮৬, ৯১, ২০০০’র উপনির্বাচন ও ২০০১’র জাতীয় নির্বাচন সহ সকল নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের উপনির্বাচনে, ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ও ২০০৬ সালের ১/১১ স্থগিত নির্বাচনে তিনি তালা কলারোয়া আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও ২০১৪ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা (তালা-কলারোয়া)-১ আসন থেকে তাকে মনোনয়ন দেন।
এ আসনে আরো মনোনয়ন প্রত্যাশী সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাধারন সস্পাদক সরদার মুজিব, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান,জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, , ,কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুল ইসলাম,সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনর সাবেক সহ-সভাপতি এড.মোহাম্মদ হোসেন, এছাড়া বিএনপির প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপি সভাপতি,কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব। তবে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার বকুল প্রার্থী হবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে,জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত্, জাতীয় সমাজতান্রিক দল জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলু, ওয়ার্কাস পাটির জেলা শাখার সভাপতি পলিট ব্যুরো সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুর্লাহ।
অপরদিকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে এবারও নাম শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ'র। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ(চরমোনাই) সমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থী ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট দলীয় সূত্রে প্রকাশ।
২ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে