বিশ্বসেরা হাফেজ ইন্দোনেশিয়ার জাকি, দেশসেরা নেত্রকোনার ইরশাদুল ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য ইলিয়াস আলীসহ বিএনপি নেতাকর্মীকে গুম করে- তাহসিনা রুশদীর লুনা ডোমারে জমিয়তের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত উলিপুরে তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের দাবীতে মানববন্ধন বাকৃবির শাহজালাল হলের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত পীরগাছায় ছাওলা ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে ইফতার মাহফিল সেনাবাহিনীর অভিযানে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ইয়াবা, রামদা ও মাদক সেবনের সরঞ্জামসহ আটক ২ বগুড়ায় জুয়ার আসর থেকে কৃষকলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার চার ক্ষেতলালে শত শত রোজাদারকে ইফতার করালেন সাবেক ছাত্রনেতা আব্বাস আলী বেগমগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময় ও ইফতার গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের সম্মানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইফতার না:গঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইফতার মাহফিল হবিগঞ্জে মউশিক শিক্ষক কল্যাণ পরিষদের মানববন্ধন বড়লেখায় বিএনপি নেতা সাজু দায়িত্ব নিলেন হতদরিদ্র একশ' শিক্ষার্থীর নতুন করে সুন্দরবনের গুলিশাখালী আগুন পানি সংকট,নেভাতে জোয়ারের অপেক্ষা শ্রীমঙ্গলে শিক্ষকদের সম্মানে হাজী সোনা মিয়া সুরজান বিবি আলিয়া মাদ্রাসার ইফতার সংস্কার কমিশনের ১১৩টি প্রস্তাবে একমত এনসিপি ঈদ মিছিল হবে ঢাকায়, বসবে মেলা: আসিফ মাহমুদ পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটে যাত্রী পারাপারের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি। গোয়ালন্দ উপজেলা সাউন্ড ও লাইটিং ব্যবসায়ীর উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল।

কাঁটাতারে জড় ও জীবন

Md Nazmul Hasan ( Contributor )

প্রকাশের সময়: 07-01-2024 08:56:15 am

মোঃ নাজমুল হাসান

বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত কোনটি? এ প্রশ্নের জবাবে আমাদের মনে ভেসে উঠতে পারে ফিলিস্তিনিদের গাজা ভূখণ্ডের সঙ্গে ইসরায়েলের সীমান্তের কথা। কেননা, বছরের পর বছর সেখানকার বহু ফিলিস্তিনির নিষ্ঠুর হত্যার খবর বিশ্বের প্রধান প্রধান সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছে। অন্য আর যে সীমান্তে রক্ষীদের গুলিতে প্রাণহানির কথা শোনা যেত, সেটি হলো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্র আর মেক্সিকোর সীমান্ত। কিন্তু গুগলে অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে যে এই প্রশ্নের উত্তরটি হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। কেননা, সংখ্যার দিক থেকে সীমান্তে প্রাণহানিতে বিশ্ব রেকর্ডটি আমাদেরই। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে হতাহতের সবাই না হলেও অন্তত ৯৫ শতাংশই বাংলাদেশি। কিছুদিন পর পর সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে খবর চোখে পড়লেও বিষয়টি যে একটা বিশ্ব রেকর্ডে দাঁড়িয়েছে, সেটা প্রথম গণমাধ্যমের নজরে আসে ব্রিটেনের চ্যানেল ফোর-এর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। 


২০১১ থেকে ২০২৩। আজ ৭ জানুয়ারী। ফেলানী হত্যার বিচার না পাওয়ার ১৩ তম বছর। 

দেশভাগের পর জমিনের মধ্যখানে কাঁটাতারের দেয়াল তুলে তারপর সেই কাঁটাতারে দ্রুমদাম গুলি করে ঝুলে আছে কুয়াশায় রক্ত জমে কালো হয়ে থাকা ফেলানীর লাল জবার মতো শরীর। ঝুলে থাকে পোশাকের মতো, ঝুলে থাকে ১৪ বছরের ছোট্ট কিশোরী। সেই গুলির ক্ষত চুয়ে চুয়ে রক্ত নামে। সীমান্তের সবুজ জমিনে।


২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। হত্যাকাণ্ডের তের বছর পেরিয়ে গেলেও সন্তান হত্যার বিচার পায়নি পরিবার। ফেলানী হত্যার বিচারের আশায় এখনো কাঁদে তার পরিবার। 


কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের শ্রমিক নূরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতের বঙ্গাইগাঁও এলাকায়। সেখানেই তিনি একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। এর মধ্যে বাংলাদেশে নিজের খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় কিশোরী ফেলানী খাতুনের। সেই উদ্দেশ্যে বাবা নুরুল ইসলামের বড় মেয়ে ফেলানীকে নিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে রওনা দেন। 


২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুয়াশা ঢাকা ভোর ৬টার দিকে দালালের মাধ্যমে ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে মই বেয়ে কাঁটাতার পার হচ্ছিল ফেলানী ও বাবা নুরুল ইসলাম। মইয়ের সামনে ছিল বাবা নুরুল ইসলাম তার পেছনে ফেলানী। এ সময় বিএসএফ টের পেয়ে গুলি ছুড়লে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ফেলানীর বাবা নেমে পড়ায় বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে কাঁটাতারে ঝুলে পড়ে কিশোরী ফেলানী। গুলিবিদ্ধ হয়ে ছটফট করে পানি পানি বলে চিৎকার করতে করতে নির্মমভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে ফেলানী। প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে তার লাশ।


এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারের জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফএর এ কোর্টে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফর বিশেষ কোর্ট। রায় প্রত্যাখ্যান করে আবার বিচার দাবি জানায় ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুন:বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর বিএসএফর আদালতে শুধু স্বাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই ওই আদালত পুনরায় আসামি অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয়। রায়ের পর একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিমকোর্টে রিট পিটিশন করে। যা এখনো চলমান। 


আজ ২০২৪ এ এসে বিশ্বায়নের যুগে ওপার বাংলা-এপার বাংলা মাঝখানে কাঁটাতারে গুলি খেয়ে ঝুলে থাকতে ফেলানী লাশ দেখার কোন আগ্রহই নেই এই বিশ্ব মানবতার। আজকের দিনে আমার একটাই প্রত্যাশা বিভিন্ন অজুহাতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সহ বিশ্বের প্রতিটি সীমান্তে প্রতিনিয়ত মানুষ হত্যার মিছিল বন্ধ হোক।


মোঃ নাজমুল হাসান: শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

Email: pressnazmulbd@gmail.com

আরও খবর