আলু উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ২৬ হাজার টন বিঘায় কৃষকের ক্ষতি ১৩ হাজার টাকা
জেলায় এবার ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু রোপণ করেছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে ৭০ শতাংশ আলু তোলা হয়েছে। ফলন ভালো হলেও তবে দাম নিয়ে কিছুটা হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা। তিন সপ্তাহ আগেও বাজারে জাত ভেদে আলুর দাম বিক্রি হয়েছিলো ৬০-৭০ টাকায়। সেই আলু এখন বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪০-৫০ টাকা। হঠাৎ করে দাম কমে যাওয়ায় আগাম জাতের আলু চাষিরা বেকায়দায় পড়েছে। কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে চাষিরা।
চাষিরা জানান, চাষাবাদ, সার, বীজ, সেচ ও শ্রমসহ সব খরচ মিলে সমানে সমান হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার আলু চাষাবাদে দ্বিগুণ খরচ বেড়েছে। আবার আলুর ফলনও বেড়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে যারা আলু বাজারে আনবে তারা মুটামুটি লাভের মুখ দেখবে। আবার অনেকের বিঘাপ্রতি ৭/৮ হাজার টাকা লাভ টিকছে। অবশ্যে বাজার যদি দাম আরো কমে যায় তাহলে এ লাভ তো দূরের কথা আসল-ই টিকবে না।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, জাত ভেদে প্রতি মন আলু বিক্রি হচ্ছে ২১০০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে একই বিক্রি হয়েছিল ২৪০০ টাকায়। তিন সপ্তাহে আগে সেই আলু বিক্রি হয়েছিল মন প্রতি ২৮০০ টাকায়। এখন সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। ফলে মনপ্রতি আলুর দাম কমে নেমেছে অর্ধেকে। ফলন বাড়লেও দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৮৫৪ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। যার অগ্রগতি ১৫৫০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ হাজার ৮৮৩ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় আলুর আবাদ হয়েছিল ১৮৫০ হেক্টর। যেখান থেকে উৎপাদন হয়েছিল ২৬ হাজার ৮২৬ মেট্রিক টন।
বড় বাজারের আলু ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সরওয়ার বলেন, 'বাজারে আগাম জাতের আলুর যোগান বেশি। এজন্য দাম কম। তবে বর্তমান বাজার দর এটা থাকবে না'।
ববাহারছড়া বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী কলিম উল্লাহ বলেন ' আগাম জাতের আলুতে এখন বাজার ভরপুর। পাইকারি বাজারে দাম কমে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও দাম কমেছে। জাত ভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে।'
আলু বিক্রি করতে যাওয়া কৃষক নুরুন্নবী বিস্তারিত হিসাব দিয়ে জানান, তাঁর প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষে গড়ে ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘায় ফলন হয়েছে গড়ে ৮০ মণ। বর্তমান বাজার দর নিয়ে খুব চিন্তিত তিনি। বলেন, প্রতি বিঘায় ১৩/১৫ হাজার টাকা লোকসান হবে। আলু ক্ষেতে রেখে দেওয়া সম্ভব না। গত বছরও লোকসান হয়েছে। আগামী বছর আলু চাষ না করে অন্য কিছু করবে বলে জানান তিনি।
আলু চাষিদের সাথে কথা বললে তারা জানান, 'যারা আগে আলু তুলেছেন তারা বেশ ভালো দাম পেয়েছেন। বর্তমানে যারা আলু তুলে বিক্রি করছেন, তাদের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে। চাষাবাদ, সার, বীজ, সেচ, শ্রমসহ সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ তো দূরের কথা, আসল টাকাও উঠছে না। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর বাজার প্রতি মণ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। এভাবে কমতে থাকলে আগামী সপ্তাহে যারা আলু তুলবেন, তাদের আরো বেশি লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো: কবির হোসেন দৈনিক কক্সবাজারকে বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব সরকারের। যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বাজার দর উঠানামা করে। তিনি বলেন, কৃষকদের চিন্তার কোনো কারণ নেই, সামনে রমজান, দাম বাড়তে পারে।
১ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে
২ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে