পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কুতুবদিয়াসহ দেশবাসীকে অগ্রিম শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক জানিয়েছেন কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা ও কুতুবদিয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিম সিকদার রাসেল।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন,উম্মতে মুহাম্মাদিকে আল্লাহতায়ালা বিশেষ কিছু বরকতময় অনুষ্ঠান প্রদান করেছেন, যা পরস্পর ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা, প্রীতি ও সৌহার্দের এক অনুপম দৃষ্টান্ত প্রদর্শন ও মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালার অনুকম্পা লাভের অন্যতম প্রধান অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদ।
ঈদের দিন বিশ্ব মুসলিম পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদগাহে গিয়ে ছোট-বড়, ধনি-নির্ধন, আমির-ফকির মিলিতভাবে একই কাতারে দাঁড়িয়ে এ বিশেষ দুরাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করে। এ নামাজ আদায়ের উৎকৃষ্ট সময় সূর্যোদয়ের পর থেকে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত। কেউ বিশেষ কোনো কারণে এ নামাজ আদায় করতে না পারলে এর কোনো কাজা আদায় করার প্রয়োজন পড়ে না। কারণ ইসলামি শরিয়ায় ঈদের নামাজের কাজা আদায় করার কোনো বিধান নেই।
হজরত রাসূলে করিম (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর সেখানে দেখতে পান, প্রতি বছর মদিনায় পারসিকদের প্রভাবে শরতের পূর্ণিমায় ‘নওরোজ উৎসব’ এবং বসন্তের পূর্ণিমায় ‘মিহিরজান উৎসব’ উদযাপিত হয়ে আসছে। এ দুটি বিজাতীয় উৎসবের রীতি-নীতি ইসলামি রীতি-নীতির পরিপন্থি ছিল বলে নবি করিম (সা.) মুসলমানদের এতে যোগদান করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করেন এবং তদস্থলে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা-এ দুটি উৎসব পালনের রীতি প্রবর্তন করেন।
আল্লাহর হুকুমে তারই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মাসব্যাপী রোজা রাখার পর ঈদের নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে ঈদগাহে গেলে একে অপরের হাতে হাত, বুকে বুক রাখলে মুসলমান ভুলে যায় সারা মাসের উপবাসের কষ্ট। ঈদের নামাজ হলো সামাজিক নামাজ। বছরান্তে দুদিন সমাজের সর্বস্তরের মুসলিম জনতা ঈদের জামাতে সানন্দে উপস্থিত হয়। একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময়ের একটা অপূর্ব সুযোগ আসে এ দিনে। তখন ছোট-বড়, ধনী-নির্ধন, আমির-ফকির, শিক্ষিত-অশিক্ষিতের কোনো ভেদাভেদ থাকে না।
মহান আল্লাহর কাছে আত্মনিবেদনের পর একে অন্যের সঙ্গে বুক মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ের যে অনন্য সুযোগ লাভ করা যায়, তার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ঈদের নামাজ। ঈদুল ফিতরের সময় সমাজের গরিব-দুঃখীকে সদকা-ফিতরা প্রদান এবং একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাতে যে সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশের সৃষ্টি হয় তা-ই দুনিয়াকে বেহেশতের বাগানে পরিণত করে।
ঈদ আসে বিশ্ব মুসলিমের দ্বারপ্রান্তে বছরে আনন্দের বার্তা নিয়ে, আসে সীমাহীন প্রেম-প্রীতি, সৌহার্দ-ভালোবাসা ও কল্যাণের সওগাত নিয়ে, সেই ঈদকে যথার্থ মর্যাদায় উদযাপন করা এবং ঈদের নামাজ যথাযথভাবে আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য।বছরে দুদিন বিশ্ব মুসলিমের জন্য যে মহাসম্মিলনের ব্যবস্থা মহান আল্লাহতায়ালা করে দিয়েছেন, যার অনুপ্রেরণায় সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ পারে কুরআন নির্দেশিত সমাজ নির্মাণ করতে, পারে ন্যায়-নীতি ও ইন্সাফভিত্তিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিতে, সমাজের কলুষতা দূর করতে, পারে দল-মত নির্বিশেষে হিংসা-বিদ্বেষ-কলহ ভুলে পরস্পর প্রেম-প্রীতির ডোরে আবদ্ধ হয়ে ঈদের আনন্দের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ করতে, যার মাধ্যমে এ কণ্টকাকীর্ণ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে স্বর্গীয় আবেশ সৃষ্টি হতে পারে।
ঈদ এমন একটি নির্মল আনন্দের আয়োজন যেখানে মানুষ আত্নশুদ্ধির জন্য পরস্পরের মিলন বন্ধনের ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং খুশী সমভাগাভাগি করে নেওয়া। নিজেদের অতীত জীবনের সব পাপ-কুলুশতা থেকে মুক্ত হয়ে পবিত্র অনুভুতি ধারন করেই পুর্নতা লাভ করে পবিত্র ঈদের খুশী।ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম। এখানে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানির কোনও স্থান নেই। মানবিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক সহাবস্থান, পরমতসহিষ্ণুতা ও সাম্যসহ বিশ্বজনীন কল্যাণকে ইসলাম ধারণ করে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি, সংযম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মূলবন্ধন পরিব্যক্তি লাভ করুক এটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা।
পরিশেষে সকলের জীবনে বয়ে উঠুক ঈদের খুশী, দূর হউক সকল কুলশতা ও জটিলতা। আল্লাহ সবাইকে মাফ করুন, হেফাজত করুন-আমিন।
২ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে