টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিয়ে পুঁজিবাজারে ফের দরপতন শুরু হয়েছে। এক দিন সামান্য এগোচ্ছে তো, পরের কয়েক দিন টানা পড়ছে। এর ফলে দেশের দুই শেয়ারবাজারে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষে হয়েছে। একইসাথে উভয় বাজারে লেনদেনও কমেছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (১৪ মে) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৮১.১৪ পয়েন্ট, লেনদেন হয়েছে ৬৬৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭০.৯৩ পয়েন্ট আর লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
এ টানা দরপতনের আগে পুঁজিবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। ফলে পুঁজিবাজার পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসছে এমন ধারণা করতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের হতাশ করে ফের টানা দরপতন শুরু হয়েছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের রিজার্ভ গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে-এমন একটি খবর আজ গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। এই খবরের কারণেই মূলত বাজারে আজ বড় পতন হয়েছে। তাঁদের মতে, বাজার যেখানে সামনের দিকে যাওয়ার কথা, সেখানে রিজার্ভের নেতিবাচক খবরে বাজার আবারও বড় আকারে ধাক্কা খেল।
তারা আক্ষেপ করে বলছেন, দেশে-বিদেশে খারাপ কিছু হলেই শেয়ারবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাজার অনর্থক চাপেতৈরি হয়। অথচ দেশে-বিদেশে ভালো কিছু হলে এর ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে দেখাই যায় না।
তারা বলছেন, বর্তমানে গোটা বিশ্ব আর্থিক চাপে রয়েছে। তারপরও বিশ্বের প্রায় শেয়ারমার্কেটেরই রেকড উত্থানের খবর আসছে। কিন্তু বাংলাদেশের শেয়ারমার্কেট এর ব্যতিক্রম। এখানে খারাপ খবরের চাপ দেখা যায়। কিন্তু ভালো খবরের কোনো প্রভাবদেখা যায় না।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের রিজার্ভের সঙ্গে শেয়ারবাজারের সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই। অথচ রিজার্ভের নেতিবাচক খবরের বড় টার্গেট হয়েছে শেয়ারবাজার। গত কয়েক দিন শেয়ারবাজারে ভালো ভালো খবর বেরিয়েছে। যার মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন চেয়ারম্যান, নতুন কমিশন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বাজারে অফলোড করার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা, সরকারের কাছ থেকে আইসিবির বড় অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা ইত্যাদি। তারপরও আজ বাজারে এভাবে বড় পতন কোনোভাবে কাংখিত নয়।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স সূচক আগের দিনের (সোমবার) চেয়ে ৮১.১৪ পয়েন্ট বা ১.৪৩ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৫৮৫.৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.৭৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৫.৭৬ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক ২৬.০৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৯১.৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে এদিন ২০ কোটি ২ হাজার ৩৩৩টি শেয়ার ও মিউচুয়্যাল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এসব শেয়ার ও ফান্ডের বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬৬৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩০৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯৬৮ কোটি ২ লাখ টাকা। অর্থাৎ মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন কমেছে প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা।
এছাড়া এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেনের দিক দিয়ে শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় প্রথমে উঠেছে ই-জেনারেশনস লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারে লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠেছে ওরিয়ন ইনফিউশনস। কোম্পানিটির শেয়ারে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে উঠেছে নাভানা ফার্মাসিউটিকেলস লিমিটেড। কোম্পানিটির টাকার অঙ্কে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এরপর লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে- এডভেন্ট ফার্মা, কোহিনুর কেমিক্যালস, বেস্টহোল্ডিংস লিমিটেড, এসকে ট্রিমস, গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ওরিয়ন ফার্মা ও প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
এদিকে ডিএসইতে লেনদেন শেষে ৩৯৯টি কোম্পানি ও মিউচূয়্যাল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দাম বেড়েছে ৩১টির, কমেছে ৩৪৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৫টি কোম্পানির শেয়ার দর।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মঙ্গলবার লেনদেন শেষে প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৭০.৯৩ পয়েন্ট কমে ১৬ হাজার ১৬৪.৭৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সিএসইতে এদিন ২৫৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়্যাল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৭টি কোম্পানির, কমেছে ১৯৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির শেয়ার দর। সিএসইতে দিন শেষে ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন হয়েছিল ১০৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন কমেছে প্রায় ৯৪ কোটি টাকা।
১৯ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১ দিন ১৪ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
২ দিন ১৬ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
২ দিন ১৬ ঘন্টা ৪৮ মিনিট আগে
২ দিন ১৬ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
৩ দিন ১ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৩ দিন ১৪ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে
৪ দিন ১২ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে