বৃক্ষ আমাদের ফুল-ফল, কাঠ ছায়া, অক্সিজেন, ভেষজ ঔষধ, জ্বালানি ইত্যাদি দিয়ে থাকে। গাছ আমাদের পরম বন্ধু। দিন দিন বৃক্ষ নিধনের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অসহনীয় মাত্রায় চলে যাচ্ছে, তখনি কেবল আমাদের হুঁশ হয়, যে বৃক্ষ রোপণ করা দরকার এবং ঠিক তখনি আমরা সভা, সেমিনার করে বৃক্ষ রোপণের জন্য অস্থির হয়ে উঠি। প্রচন্ড তাপদাহ, রোদ এবং শুষ্ক মৌসুমে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচিও পালন করি! ফলশ্রুতিতে কি হয়? গাছ বাঁচে না। যার কারণে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি সফল হতে পারে না। মনে রাখবেন, জুন, জুলাই, আগস্ট এই তিনটি মাস বৃক্ষ রোপণের জন্য খুবই কার্যকারী। এ-সময় যথা সম্ভব বেশি বেশি গাছ লাগাবেন। বিভিন্ন গাছের বীজ সংগ্রহ করে রাস্তার দুই-ধারে ছিটিয়ে দিবেন। তাতে রাস্তা বৃষ্টির স্রোতে ভেঙে পড়ার চান্স কম থাকবে।
মনে রাখবেন, পরিবেশকে বাস উপযোগী, টিকিয়ে রাখার জন্য অবশ্যই অবশ্যই বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। আর ইসলাম ধর্ম মোতাবেক বৃক্ষরোপণ হলো সদকায়ে জারিয়া। "যখন কোনো গাছের ফল জীবজন্তু বা মানুষ খায়, তখন সেই বৃক্ষ রোপণকারীর আমল নামায় সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব লিখা হয়। - আল হাদীস। সদকায়ে জারিয়া বলতে আপনার মৃত্যুর পরও এই গাছ যত দিন থাকবে, মানুষের উপকার করবে, ততদিন আপনার আমলনামায় সওয়াব লিখা হতেই থাকবে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও বৃক্ষরোপণ অবশ্যই প্রয়োজন।
আমরা অনেকেই বলে থাকি, আমার হাতে গাছ হয় না। আসলেই কি আমি গাছ লাগানো, পরিচর্যাতে কি যত্নশীল? সেটা ভাবতে হবে সবার আগে। মাটির গুণাগুণ দেখে কোন মাটিতে কোন গাছ উপযুক্ত সেটা জানতে হবে। সাধারণত বেলে দোআঁশ মাটি মোটামুটি সব-গাছের জন্যই উপযুক্ত। তাছাড়া মাটিতে আমরা জৈব সার হিসেবে যে গোবর ব্যবহার করি; এই গোবর সার তাজা গোবর না দিয়ে শুকনো গোবর সার দিতে হবে এবং নিয়মিত পানি-তো অবশ্যই দিবেন। যারা ছাদ বাগান করেন বা টবে গাছ লাগান, আপনারা খেয়াল করবেন টবে যেন পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকে। কখনো টবে পানি জমা করে রাখবেন না। এতে মশা-মাছি ডেঙ্গুর উপদ্রবসহ অনেক সময় টবে অতিরিক্ত পানি জমার কারণে গাছ মারাও যায়।
শুধু গাছ লাগালেই হবে না, পুরনো বড় গাছ সেই গাছেরও পরিচর্যা করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে আম, কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি গাছ ফল শেষ হওয়া মাত্রই ছেঁটে দিবেন। তাতে আগামী বছর ভালো ফলন পাবেন। নারিকেল গাছও আষাঢ় মাসে ডাল ছাঁটাই করে দিবেন। বছরে ঐ একবার আষাঢ় মাসে করে দিলেই হবে। এতে নারিকেল প্রচুর হবে।
তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে প্রায় সব-গাছের গোড়াতেই মাটি দিতে হবে। এতে করে অনেক সময় প্রচুর ঝড়-বৃষ্টির কারণে গাছের শেকড় বের হয়ে গাছ উপড়ে পড়তে পারে। এজন্য গাছের গোড়ায় মাটি দেওয়াসহ যেসমস্ত গাছে বেড়া দিতে হবে সেগুলো বেড়া দিতে হবে। পেঁপে গাছসহ যে সমস্ত গাছ নাজুক; সেগুলো বাঁশ/খুটিতে গাছ বেঁধে দিতে হবে। বট, অশ্বত্থ, নিমগাছ ইত্যাদি প্রাচীন বৃক্ষ বাড়িতে লাগাতে পারেন। তাতে বাসা শীতল থাকবে। সৌন্দর্য বর্ধনে ফুল গাছ লাগাতে পারেন, তাতে চোখ এবং মনে প্রশান্তি আসবে। সর্বোপরি পরিবেশ রক্ষার জন্য, তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই আমাদের সকলকে বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে।
খাদিজা আখতার
শিক্ষার্থী, অনার্স ৪র্থ বর্ষ,
সরকারি দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ, ঢাকা।
৩ দিন ৪ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে
৩ দিন ৪ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে
৩ দিন ১৮ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
৩ দিন ১৯ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
৪ দিন ৪ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৪ দিন ৫ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
৬ দিন ১৪ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
৮ দিন ৪ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে