তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার সাংবাদিক মধুপুরে ছেলের হাতে মা খুন স্ত্রী গুরুতর আহত মিরসরাই সমিতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইফতার ও দোয়া মাহফিল শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে ব্যাক্তির দায়িত্ব দল নিবে না- ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন পাঁচবিবিতে ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেফতার নান্দাইলে বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত নান্দাইলে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পীরগাছায় হাসনা পাইটকাপাড়া জামে মসজিদের দ্বিতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর রাজবাড়ীতে বিএনপির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অটোরিকশা চার্জে থেকে আগুনে পূর্ণ ৬টি দোকান পাংশায় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালিত পাংশায় দেড়শ পিস ইয়াবাসহ আটক ১ পাংশায় মোটরসাইকেল ও মাদকসহ গ্রেফতার ২ ঝিনাইদহে জামায়াত ও বিএনপির দুই গ্রুপ সংঘর্ষে আহত ৬ সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন কুবিতে লক্ষ্মীপুর স্টুডেন্ট’স ক্লাব'র ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল বড়লেখায় কোয়াবের উদ্যোগে খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা ও ইফতার মাহফিল বড়লেখায় হঠাৎ ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি,ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করল সাতকানিয়া - লোহাগাড়া মানবিক ফাউন্ডেশন।

সাতক্ষীরায় সালমা আক্তার ছাগল পালনে ভাগ্য ফিরিয়েছেন


ছাগল পালনে দারিদ্র্য বিমোচন করে সংসারে সুদিন এনেছেন সাতক্ষীরার সালমা আক্তার। বদলে ফেলেছেন নিজের ভাগ্য। এলাকার বেকার যুব ও মহিলাদের মধ্যে জ্বেলেছেন আশার আলো। সালমা আক্তারের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের বালিথা গ্রামে। তাঁর স্বামীর নাম মুজিবুর রহমান। স্বামীর চাষযোগ্য জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করতেন। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে বিলগুলো মৎস্য ঘের করায় এখন আর ফসল চাষ হয়না।


সালমা আক্তার জানান, ছোট থাকতে একবেলা খাবার জুটলেও অন্য বেলা উপোস থাকতে হতো। এরই মধ্যে স্বপ্ন দেখেন নিজে কিছু করার। ছোটবেলা থেকে ছিলো উদ্যোক্তা হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা। মাত্র দুটি ছাগল পালন শুরু করেন স্বপ্ন জয়ের যাত্রা। দেখতে দেখতে ছোটখাটো একটি খামার হয়ে যায় তাঁর। সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি ইউনিয়নের বালিথা গ্রামে নিজের বাড়িতেই বিশাল ছাগলের খামার গড়ে তুলেছেন সালমা আক্তার। সেখানে দুম্বা, ছাগল ও গাড়ল পালন করেন তিনি।


সালমা আক্তার জানান, ছোটবেলা থেকেই পশুপাখির প্রতি ভালোলাগা থেকেই ছাগল পালনের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার। দারিদ্র্য বিমোচনে ছাগল পালন ভূমিকা রাখে। তাই বিবাহের পরেও স্বামীর বাড়িতে এসে স্বামীকে সাথে নিয়ে বৃহৎ খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। বিদেশি জাতের ছাগল বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়। একটি ছাগল সর্বোচ্চ ৫টি বাচ্চা দেয়। ছয় মাস বয়সী ছাগল বিক্রি হয় ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। 


একটি ছাগল ছয় মাসে খড়, কাঁচা ঘাস, ভুষি খায় প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার। সালমা আক্তার জানান, বর্তমানে তার খামারে শতাধিক উন্নত জাতের ছাগল রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য শিরহি, তোতাপুরি, নাগপুরী বিটল, যমুনা পাড়ি, গুজরি, হরীয়ানাসহ দেশি-বিদেশি উন্নত জাতের ছাগল। যার বাজার মূল্য ২০ হাজার থেকে শুরু করে প্রায় ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। সালমা আক্তারের খামারে দু’জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। যাদের মাসিক আয় দশ হাজার টাকা।


খামারে কর্মরত শ্রমিকরা বলেন, প্রতিদিন তিন বেলা ছাগলের খাবার ও পানি দিতে হয়। এছাড়া ছাগলকে গোসল করানো ঔষধ খাওয়ানো, খড়, কুটা, ভূষি, বিচালি, সবুজ ঘাষ খেতে দিতে হয়। উন্নত জাতের পাঠা ছাগল পালনে সালমা আক্তারের বেশ সুনাম রয়েছে। তার খামারে বাঘা তোতা পাঠা, মেউতি তোতা পাঠা, বিটলসহ উন্নত জাতের পাঠা ছাগল রয়েছে।


যার প্রতিটির বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকা। সালমা আক্তারে সাফল্য দেখে প্রতিবেশী নারীরাও ছাগল পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সালমা আক্তার তাঁদের ছাগল পালনের পরামর্শ দেন। ধীরে ধীরে সাতক্ষীরা সদরের অনেক বেকার যুবকও সালমা আক্তারের থেকে ছাগল পালনের পরামর্শ নিয়ে ছোট ছোট ছাগলের খামার তৈরি করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে।


দীর্ঘ ৩০ বছর ছাগল পালনের অভিজ্ঞতা নিজের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে সালমা আক্তার ছড়িয়ে দিচ্ছেন তার এলাকায়। ভূমিকা রেখে চলেছেন গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকাশক্তি ছাগল পালনে। বর্তমানে সালমা আক্তারের মাসিক আয় ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু সালমা আক্তারের কিছু আক্ষেপ রয়েছে। তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলা শহরে তার মতো বড় ছাগলের খামার আর কারো নেই। এরপরেও ৩০ বছরে একটি দিনও জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কোন প্রাণীর চিকিৎসক খামারটি পরিদর্শন করেননি।


খামারের ছাগলের কোন অসুখ হলে চিকিৎসার জন্য গ্রামের যে সকল পশু চিকিৎসক ডাকা হয় অনেক সময় তাদের ভুল চিকিৎসায় ছাগল মারা যায়। তাই জেলা প্রাণিসম্পদ থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে এবং জেলার বড় বড় খামারগুলো যদি প্রাণিসম্পদ অফিসের সহায়তা পায়, তাহলে সাতক্ষীরা জেলার বেকার যুবক থেকে শুরু করে হাজারো নারী উদ্যোক্তার ভাগ্য বদলাতে পারে ছাগল পালন।


স্থানীয় ফিংড়ি ইউপি সদস্য আরশাদ আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি সালমা আক্তার দেশি-বিদেশি ছাগল পালনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। তাঁর দেখাদেখি গ্রামের অনেক নারী ও যুবক ছাগল পালনে বদলে ফেলেছেন নিজেদের ভাগ্য। সালমা আক্তার এখন দারিদ্র্য বিমোচনে এলাকার মডেল। তাঁর মতো উদ্যোক্তা তৈরি হলে বদলে যেতে পারে এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা। শুধু দরকার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।


সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এসএম মাহবুবুর রহমান জানান, সালমা আক্তারের ছাগলের খামারটির বিষয়ে তিনি যোগদানের পর অতি সম্প্রতি জেনেছেন। বিষয়টি জানার পর তিনি ও তাঁর অধীনস্থ কর্মকর্তাকে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতার তাগিদ দিয়েছেন।


তিনি বলেন, সালমা আক্তার ছাগল পালনের মাধ্যমে নিজের দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি অনেক নারী ও যুবকের বেকারত্ব দূরীকরণে আলোর পথ দেখাচ্ছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।


আরও খবর