◾ রবিউল হাসান সাগর || শিক্ষা হলো মানব জীবনের মূল ভিত্তি। এটি শুধু একটি মৌলিক অধিকার নয় বরং একটি জাতির উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ারও বটে। তবে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো গ্রামীণ ও শহুরে শিক্ষার বৈষম্য।
এই বৈষম্য আমাদের সমাজের উন্নয়নে বর্তমানে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহুরে এলাকায় শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা তুলনামূলক অনেক বেশি। উন্নত অবকাঠামো, দক্ষ শিক্ষক, প্রযুক্তি-নির্ভর শিক্ষা এবং বহুমুখী সহায়ক কার্যক্রম শহুরে শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী এবং দৃঢ় করেছে। এর বিপরীতে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে অনেক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই। শিক্ষার্থীদের অনেক দূর থেকে স্কুলে আসতে হয়। যা অনেক সময় তাদের পড়াশোনার প্রতি অনেকটা আগ্রহ কমিয়ে দেয়। বর্তমান যুগ হলো প্রযুক্তিনির্ভর যুগ। এদিক থেকে গ্রামের শিক্ষার্থীরা অনেকটা পিছিয়ে আছে।
শহুরে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ইন্টারনেট এবং অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করছে। কিন্তু গ্রামীণ এলাকাগুলোতে এসব সুবিধা এখনও সীমিত। বিদ্যুৎ সরবরাহের সমস্যা এবং প্রযুক্তির অভাবে গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। শহরের বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া তুলনামূলক উন্নত। দক্ষ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা দিতে সক্ষম। অন্যদিকে গ্রামীণ বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাব এবং অনেক সময় নিয়মিত ক্লাস পরিচালনার ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা যায়। এদিক থেকেও তারা পিছিয়ে আছে। শহরে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বেশি। পরিবার গুলো শিশুদের শিক্ষার জন্য বড় বাজেট ব্যয় করতে প্রস্তুত। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর পরিবর্তে কাজে পাঠান। এর ফলে শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার আগেই ঝরে পড়ে। এই বৈষম্য দূর করার জন্য সরকার ও বেসরকারি সংস্থা গুলোর যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন।
এছাড়াও গ্রামীণ স্কুল গুলোর জন্য উন্নত ভবন, টয়লেট এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামীণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং প্রণোদনা বৃদ্ধি করতে হবে। যাতে তারা উন্নত মানের শিক্ষা প্রভাইড করতে পারে। গ্রামীণ এলাকায় কম্পিউটার ল্যাব এবং ইন্টারনেট সুবিধা চালু করতে হবে। একই সাথে বিদ্যুৎ এর ভোগান্তি কমিয়ে আনতে হবে। গ্রামীণ পরিবারগুলোর মধ্যে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে দেশ-বিদেশের বড় বড় সংস্থাগুলোর সাহায্য নিতে হবে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে তারা বিভিন্ন প্রোগ্রাম করলে । শিক্ষার্থীর অকাল ঝরে পড়া হ্রাস পাবে। গ্রামীণ ও শহুরে শিক্ষার এই বৈষম্য দূর করা শুধু একটি সামাজিক দায়িত্ব নয় বরং এটি দেশের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। যখন শহুরে ও গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাবে তখনই আমরা একটি সমৃদ্ধ এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। সবার জন্য সমতাভিত্তিক শিক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তোলা আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
• রবিউল হাসান সাগর
তরুণ লেখক ও শিক্ষার্থী
৯ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
২ দিন ১৪ ঘন্টা ১২ মিনিট আগে
২ দিন ১৪ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
৬ দিন ১৩ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
৬ দিন ২১ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
৮ দিন ৭ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
৮ দিন ১৮ ঘন্টা ১২ মিনিট আগে
১০ দিন ১১ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে