গণঅধিকার পরিষদ কারও নেতৃত্বে কোনো জোটে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
নুর বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের সিদ্ধান্ত হলো আগামী নির্বাচনে আমরা দলীয় মার্কায় অংশ নেবো। একটা আলোচনা হচ্ছে সমমনা দল আমাদের নেতৃত্বে কাজ করবে, আগামীতে তাদের নিয়ে একটা জোট হতে পারে। আমরা কারও নেতৃত্বে কোনো জোটে যাচ্ছি না, এটা পরিষ্কার। ছাত্ররা নতুন দল করছে। তাদের আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে তাদের সঙ্গে দল করা, তাদের সঙ্গে জোট করা- এসব আলোচনা নেই। কারণ তারা এখনো দলই গঠন করেনি।
তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন একটা উদাহরণ হবে, এজন্য দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে বলেছি। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার কথা বলেছি। এ ছাড়া যেহেতু একটা রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে এবং এটা এখন পপুলার ডিমান্ড যে, ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ এবং দোসরদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, তাহলে তো নিবন্ধন অবশ্যই অটো বাতিল হবে।
ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, দুটো বিষয় কেন্দ্রিক আলোচনা করেছি। সংকটকালে তারা দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের পারফরমেন্সের ওপর জাতির আগামীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। এখন আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রস্তুতি কেমন, কী কাজ করছে, বিশেষ করে অনেক দিন ধরেই প্রবাসীরা ভোট দেওয়ার অধিকার চাচ্ছেন। প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বলেছেন। তাই তাদের ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করতে কমিশন কী কাজ করছে, এটা আদৌ সম্ভব কি না ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে, সেই আলোচনা হয়েছে। কমিশন বলেছে তারা চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য একটা দক্ষ প্রশাসন দরকার। গত ১৬ বছরের যে প্রশাসন কারচুপির নির্বাচন করেছে, তাদের দিয়ে কী করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব? আগে বলতো আওয়ামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ, এখন কেউ বলছে গণঅধিকার পরিষদের লোক, কেউ বলে বিএনপির লোক, কেউ বলে জামায়াতের লোক। আবার কেউ বলে আমরা ছাত্রদের প্রতিনিধি। কাজেই এখনকার প্রশাসনের মধ্যেও যদি এই রাজনৈতিক মনোভাব থাকে, তাহলে তো নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। তাই পরিষ্কারভাবে আমরা বলেছি যে, নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করবেন- রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা, তারা যেন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকেন, সেটা যেন কমিশন আগেভাগেই নিশ্চিত করেন।
নুর বলেন, বিতর্কিত নির্বাচনে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যে ব্যবস্থা নেবে, তা রাষ্ট্র নেবে। তাদের অনেকে বহাল তবিয়তে আছেন। অনেককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে। অনেককে কিন্তু তলে তলে সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমার পরিষ্কারভাবে বলেছি, তারা যেন নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন। দলগুলোর পক্ষ থেকে এরই মধ্যে বলা হয়েছে কিংবা রাজনৈতিক অঙ্গনেও এই আলোচনা চলছে যে, স্থানীয় নির্বাচনগুলো আগে হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যেহেতু স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, তারা কারও নির্দেশনায় নির্বাচন করবে না। তবে তারা যেহেতু সংকটকালীন দায়িত্ব নিয়েছে, একটা অর্থবহ নির্বাচনের জন্য সেখানে রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি। প্রধান উপদেষ্টা যে একটা সম্ভাব্য ডেট দিয়েছেন, সেটাকে সামনে রেখেই তারা একটা প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঐকমত্য যদি স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয় তাহলে তারা বিবেচনা করবে, যদি ঐকমত্য না হয়, তারা তো তা করতে পারবে না।
নুরুল হক নুর বলেন, নামসর্বস্ব পার্টি যারা নিবন্ধন নিয়েছে এবং আনুপাতিকভাবে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে, এক্ষেত্রে সেখানে কিন্তু সবগুলো দলের মার্কা থাকবে। নির্বাচন কমিশনের যে শর্ত আছে, ১০০ উপজেলা এবং এক তৃতীয়াংশ জেলায় অফিস ও কমিশন থাকতে হবে; এটা যেসব রাজনৈতিক দল প্রতিপালন করছে না, তাদের নিবন্ধন স্থগিত করা উচিত। এতে নামসর্বস্ব বা কিংস পার্টির নিবন্ধন কিন্তু বাতিল হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর বলেন, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না সেই সিদ্ধান্ত অবশ্যই নির্বাচন কমিশন একা নিতে পারবে না। এজন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হতে হবে। সরকারেরও এখানে ভূমিকা নিতে হবে। এরই মধ্যে সেই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গত মিটিংয়েও রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, সেজন্য তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। তবে ছোট পরিসরে স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে হতে পারে। কেননা, জন্মনিবন্ধনের মতো সেবা মানুষ পাচ্ছে না। একজন আমলা আর কতটুকু করতে পারেন। অন্তত সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলাগুলোর নির্বাচন হতে পারে।
১৩ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
১ দিন ৬ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
১ দিন ৯ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
১ দিন ১০ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে
১ দিন ১৪ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
১ দিন ১৭ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
১ দিন ১৮ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে