সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন মনে করেন বর্তমান সংবিধান পুরোপুরি বাদ দেওয়া ভুল হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি আয়োজিত বাহাত্তরের সংবিধান ও প্রস্তাবিত সংস্কার শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন।
ড. কামাল বলেন, বর্তমান সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, মানুষের যে আনুগত্য রয়েছে তা বজায় রেখে সংস্কার প্রস্তাবের আলাপ-আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তা গ্রহণ করা যেতে পারে। সেই আলোচনায় সবার অংশ নেয়া করা উচিত।
তিনি বলেন, বাহাত্তরের সংবিধান সংগ্রাম ও জনগণের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে। সংবিধানের যেকোনো পরিবর্তন ও সংশোধনে যেন দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঠিক প্রতিফলন হয়। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে যেন সংবিধানকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে ব্যবহার করার সুযোগ না থাকে।
সংবিধানে সংস্কারের প্রস্তাব আসতে পারে বলে মনে করেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা। তিনি বলেন, সময়ের প্রয়োজনে পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরা যেতে পারে। কিন্তু গড়ে সংবিধানকে ফেলে দিয়ে নতুন সংবিধান করা, সংস্কার না, সংবিধানকে ধ্বংস করার পথ।
ড. কামাল হোসেন বলেন, পুরো সংবিধান বাদ দেওয়া ভুল হবে। কারণ এত দিন এটার ভিত্তিতে দেশকে পরিচালনা করা হয়েছে, জনগণ এটা মেনে নিয়েছে। সেটাকে পুরোপুরি ফেলে দিয়ে সংবিধান নতুন করে পুনর্লিখন করা যুক্তিসংগত ও গ্রহণযোগ্য না।
বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের প্রতিটি বর্ণ, শব্দ, অনুচ্ছেদ যদি অপাঙ্ক্তেয় হয় কিংবা ইতিহাস, ঐতিহ্য, বর্তমান, ভবিষ্যৎ এবং দূরবর্তী ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা না থাকলে আমি এ সংবিধান চাই না। কেউ কি দেখাতে পারবেন? আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে চাই, বাহাত্তরের সংবিধান হলো বাঙালি জাতির হৃদয় থেকে উচ্চারিত, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত দিয়ে যে দলিল লিখিত হয়েছে, তার প্রতিরূপ। যারা বাহাত্তরের সংবিধান লন্ডভন্ড করেছে, তাদের পরিণতি সবাই দেখেছেন। আবার যারা বাহাত্তরের সংবিধান বাদ দিয়ে পুনর্লিখনের কথা নিয়ে আজগুবি সার্কাস করছেন, তাদের অবস্থা আরও খারাপ হবে।
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা রাজনীতিবিদদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। আগে সামরিক শাসন হতো, তারা রাজনীতিবিদদের কিছুদিন দূরে রেখে ক্ষমতা দিয়ে চলে যেত। কিন্তু এখন যারা আসছেন, তারা তো মিলিটারি না। আমার তো মনে হয় তারা ক্ষমতায় না থাকলেও তাদের ধারাবাহিকতায় আসবে নতুন সরকার। ধারাবাহিকতার বাইরে উল্টো দিকে চলে যাবে এ রকম কিছু অন্তত ড. ইউনূসের নেতৃত্বের উপদেষ্টা পরিষদ করবে বলে মনে করি না।
গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের সভানেত্রী ডা. ফাওজিয়া মোসলেম, সিনিয়র সাংবাদিক সোহরাব হাসানসব অনেকে।
১৩ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
১ দিন ৬ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
১ দিন ৯ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
১ দিন ১০ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে
১ দিন ১৪ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
১ দিন ১৭ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
১ দিন ১৮ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে