সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার-পানীয় এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা হলো রোজা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর যতক্ষণ না ভোরের সাদা রেখা কালো রেখা থেকে পৃথক হয়ে যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা খাও ও পান করো। তারপর রাতের আগমন পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)
প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মুকিম মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর রোজা রাখা ফরজ। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের আগেরকার লোকদের প্রতি ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমাদের মধ্যে তাকওয়া বা আল্লাহভীতি সৃষ্টি হয়।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
রোজার উদ্দেশ্য তাকওয়া অবলম্বন করা। পরহেজগার হওয়া। বিরত থাকা। সংযমী হওয়া। এগুলো করতে হবে সব ধরনের গুনাহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে। যেমন মুখ বা চোখ কিংবা কান দ্বারা যত গুনাহ হতে পারে, সব গুনাহ থেকে বিরত থাকতে হবে। এভাবে সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গুনাহ থেকে বিরত থাকতে পারলে রোজা পূর্ণাঙ্গ হয়। রোজার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন হয়।
রোজা রেখে মাহরাম (যাদের সঙ্গে বিয়ে হারাম ও দেখা করা যায়) ছাড়া অন্য নারী-পুরুষের সঙ্গে শরিয়ত সম্মত কারণ ছাড়া দেখা করা বা কথা বলা জায়েজ নয়। শরিয়ত সম্মত কারণে দেখা করা বা কথা বলা যাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পানাহার থেকে বিরত থাকার নাম রোজা নয়। রোজা হলো, অসার ও অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা।’ (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১৯৯৬)
ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, ‘যুবতী পরনারীর সঙ্গে বিনা প্রয়োজনে কথা বলা জায়েজ নেই। কেননা এতে ফেতনার আশঙ্কা রয়েছে।’ (আল মাউসুয়াতুল ফিকহিইয়া, ৩৫/১২২)
রোজা রেখে পরনারীর সঙ্গে কথা বললে রোজা মাকরুহ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে কথা বলার দ্বারা রোজা ভাঙবে না।
পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। তবে নারী-পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু মানুষের সঙ্গে পর্দার বিধান নেই। তাদের সঙ্গে দেখা করা ও কথা বলার বিধান রয়েছে। এই মানুষদের মাহরাম বলা হয়। যে ১৪ শ্রেণির নারী মাহরাম এবং যাদের বিয়ে করা হারাম, তাদের তালিকা এখানে দেওয়া হলো—
১. মা
২. দাদি, নানি ও তাদের ওপরের সবাই
৩. নিজের মেয়ে, ছেলের মেয়ে, মেয়ের মেয়ে ও তাদের গর্ভজাত কন্যাসন্তান
৪. সহোদর, বৈমাত্রেয় (সৎমায়ের মেয়ে) ও বৈপিত্রেয় (সৎবাবার মেয়ে) বোন
৫. বাবার সহোদর বোন এবং বাবার বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন
৬. যে স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক মিলন হয়েছে, তার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী স্বামীর ঔরশজাত কন্যাসন্তান, স্ত্রীর আপন মা, নানি শাশুড়ি ও দাদি শাশুড়ি
৭. মায়ের সহোদর বোন এবং মায়ের বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন
৮. ভাতিজি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানেরা
৯. ভাগ্নি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানেরা
১০. দুধ মেয়ে (স্ত্রীর দুধ পান করেছে এমন), সেই মেয়ের মেয়ে, দুধছেলের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কোনো কন্যাসন্তান এবং দুধছেলের স্ত্রী
১১. দুধ মা এবং তার দিকের খালা, ফুফু, নানি, দাদি ও তাদের ঊর্ধ্বতন নারীরা
১২. দুধ বোন, দুধ বোনের মেয়ে, দুধ ভাইয়ের মেয়ে এবং তাদের গর্ভজাত যেকোনো কন্যাসন্তান। অর্থাৎ দুধ সম্পর্ককে রক্তসম্পর্কের মতোই গণ্য করতে হবে
১৩. ছেলের স্ত্রী
১৪. এমন দুই নারীকে একসঙ্গে স্ত্রী হিসেবে রাখা যাবে না, যাদের একজন পুরুষ হলে তাদের মধ্যে বিয়ে বৈধ হতো না। যেমন—স্ত্রীর বোন, খালা, ফুফু
১৪ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
১ দিন ৫ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
৬ দিন ১২ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে
৭ দিন ১৪ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে
৯ দিন ১৭ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
১২ দিন ১৮ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
১৫ দিন ২০ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে
১৬ দিন ৫ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে