◾অমিত হাসান || বাংলাদেশের মানুষ ভীষণ রকমের আশাবাদী। ব্যর্থতায় মুষড়ে যাওয়া নয় ব্যর্থ হওয়ার পরও প্রতিবারই দেখে নতুন স্বপ্ন, নতুন আশা। বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতে এই আশা, আকাঙ্ক্ষাটা আরো বেশি। বিশেষ করে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই খেলা ক্রিকেট আর ফুটবল নিয়ে বাঙালির প্রত্যাশার পারদ অনেক বেশি। তবে সে প্রত্যাশা অনুযায়ী গত এক দশকে বিশ্বমঞ্চে তেমন বড় কোনো সাফল্য নেই বাংলাদেশের। তবুও সমর্থকেরা নতুন দিনের আশা করছেন। বিশ্বাস রাখছেন বর্তমান প্রজন্মের প্রতি। বিশেষ করে হামজা চৌধুরী বাংলাদেশে পা রাখার পর ফুটবল নিয়ে বাঙালির উন্মোদনা বেড়েছে বহুগুণ। বাড়ারই তো কথা। হামজা দেওয়ান চৌধুরী যে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবল লিগ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার। এখানেই শেষ নয়। তিনি ইংল্যান্ডের অনুর্ধ্ব ২১ দলের হয়েও খেলেছেন সাতটি ম্যাচ। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামার আগে হামজা তার স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশের হয়ে তিনি এশিয়ান কাপ বা বিশ্বকাপে খেলতে চান। যদিও স্বপ্ন আর বাস্তবতার মাঝে ফারাক বহুদূরের তবু আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই হামজা, জামাল, তারিকদের প্রতি।
যে আমরা আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি বা ইতালির ফুটবল নিয়ে মেতে থাকি কিংবা রাত জেগে বার্সেলোনা, রিয়াল, পিএসজিদের খেলা দেখি এবার আমরা যে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চাই। আমরা চাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন বিদেশের মেসি, নেইমার বা রোনালদো নয় বাংলাদেশের হামজা চৌধুরী হতে চায়। বাংলাদেশে তৈরি হোক বিশ্বমানের আরো এমন ফুটবলার যারা বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে। নিয়মিত খেলবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগার মতো টুর্নামেন্টগুলো। দেশকে নিয়মিত এশিয়ান কাপ ও বিশ্বকাপে খেলার যোগ্য করে তুলবে। বিশ্বকাপ এলে আর্জেন্টিনা -ব্রাজিল বা বিদেশি কোনো দলের নয় নিজেদের পতাকা উড়াতে চাই। নিজেদের প্লেয়ারদের নিয়ে জয়ধ্বনি দিতে চাই। আর এজন্য চাই দেশের ফুটবলের সামগ্রিক উন্নয়ন। এক্ষেত্রে প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে দেশি, বিদেশি স্পন্সরদের।
বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে এই সময়টাতে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা সবচেয়ে জরুরি। এরপরই কাজ করতে হবে ফুটবলের অবকাঠামো উন্নয়নে। স্টেডিয়াম, প্রশিক্ষণ মাঠ, জিমন্যাশিয়াম ইত্যাদি সুবিধার উন্নয়ন প্রয়োজন। দেশের প্রত্যেকটি বিভাগে ও জেলায় আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল স্টেডিয়াম তৈরি অথবা বিদ্যমান স্টেডিয়ামগুলোর সংস্কার করতে হবে। তারপর সেগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও রাখতে হবে নজর। এরপরের কাজটাই হলো নিয়মিত জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বয়স ভিত্তিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা। এতে অবশ্যই অবশ্যই মানসম্মত প্লেয়ার, কোচ ও রেফারির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
তাছাড়া ফুটবল উন্নয়নে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে একাডেমি ও ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ করাও জরুরি। যাতে করে প্রত্যন্ত গ্রামে সুপ্ত থাকা ফুটবল প্রতিভাগুলো হারিয়ে না যায়। প্রবাসী ফুটবলাররা নিশ্চয়ই আমাদের দেশীয় ফুটবলে ইমপ্যাক্ট রাখতে পারে তবে দেশীয় প্রতিভাগুলো যাতে হারিয়ে না যায়। বরং তারাও যেন বিশ্বমানের হতে পারে, খেলতে পারে সে ব্যবস্থাপনাটাও নিশ্চিত করতে হবে দেশের ফুটবলের নীতিনির্ধারকদের। বর্তমানে ফুটবল নিয়ে যে উন্মোদনা এই সুযোগটা কাজে লাগানোর সময় এখনই।
অমিত হাসান
লেখক ও সংগঠক
২১ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে
১ দিন ১০ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
২ দিন ১ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে
৫ দিন ১৯ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে
৫ দিন ১৯ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
৫ দিন ১৯ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
৬ দিন ১৮ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে
৮ দিন ৪ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে