জামালপুর ইসলামপুর থানায় বেড়েছে দালালের দৌড়াত্ম্য। দালালদের সঙ্গেই সেবাদাতা পুলিশদের ওঠা বসা করার অভিযোগ উঠেছে। দালালের দৌড়াত্ম্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না পুলিশী সেবাপ্রার্থীরা। বিপরীতে অনেকেই দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন।
সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, থানা এলাকায় উৎপেতে থাকে দালালচক্র। থানায় কোনো সেবাপ্রার্থী আসলেই দালালরা সর্বপ্রথম জিঙ্গাসা করে কী করবেন জিডি না অভিযোগ না মামলা করবেন। সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা কাজে মিল পেলে সোজা চলে যায় থানার সামনে কম্পিউটার দোকানে। সেখানে গিয়ে মামলা বা অভিযোগ লেখার বা কম্পিউটার খরচের কথা বলে দালালচক্রটি হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। তবে ইতোমধ্যে দুই দালালকে থানায় না ঢুকতে সতর্ক করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দালাল না ধরলে পাওয়া যায় না কাক্সিক্ষত সেবা। এমনকি দালালের মাধ্যমে থানায় নিয়মিত সালিশ বসাচ্ছে পুলিশ। সেখানে অর্থ আত্মসাৎসহ জায়গা-জমি দখল ও দখলমুক্ত করতে সমাধান করা হচ্ছে চুক্তির বিনিময়ে।'
দালালচক্রের দ্বিতীয় ফাঁদ হলো, তারা সকল মামলা বা অভিযোগের বাদী বিবাদীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে থাকে। পরবর্তীতে তারা সালিশের আকারে থানায় বা থানার আশপাশে বৈঠকের নামে উভয়পক্ষ থেকে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা।'
থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), উপপরিদর্শক (এসআই) থেকে ইন্সপেক্টরদেরও নিজস্ব দালাল রয়েছে। দালালরা প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় সমাধানে পার্টির সঙ্গে অর্থের চুক্তি করে পছন্দের পুলিশ কর্তাদের দিয়ে থানায় প্রায় নিয়মিত সালিশ বসাচ্ছেন। বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে ইচ্ছেমতো দেওয়া হয় রায়। এতে অনেক সময় বাদী-বিবাদী দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হন এমন অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, ' সাধারণ মানুষ
থানায় সেবা নিতে অনেক সময় নিরাশ হয়ে ফিরে যান। দালাল ধরলে মেলে কাক্সিক্ষত সেবা। দালাল না ধরলে পুলিশও সেবা দিতে আগ্রহ দেখান না। এ ছাড়া দালালরা নিজেরাই অভিযোগ হাতে নিয়ে তাঁদের পছন্দের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। নানা অযুহাত দেখিয়ে দালালরা অর্থ হাতিয়ে নেয়।
'ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, 'দালালদের ব্যাপারে থানা-পুলিশকে কঠিন নির্দেশনা দেওয়া আছে। থানায় দালালদের স্থান হবে না। থানায় সেবাপ্রার্থীদের যথাযথভাবে যাতে সেবা দেওয়া হয়, সেবিষয়েও নির্দেশনা রয়েছে।'
ইসলামপুর থানার ওসি মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, 'আমি এই থানায় কয়েক মাস হলো যোগদান করেছি। দালালদের চিহ্নিত করতে সময়ের প্রয়োজন। দালালদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কামাল হোসেন এবং মহাদেব সাহা নামে দুই দালালকে থানায় না ঢুকতে সতর্ক করা হয়েছে। দালালদের সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্য জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ওসি আরও বলেন, 'থানায় সালিশ বসানো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিচার-সালিশে তেমন আগ্রহ দেখান না। এ কারণে থানায় কিছু পারিবারিক বিরোধ মীমাংসা করা হয়।'
৬ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে