গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রানীগঞ্জে একটি সড়কে প্রতিদিন শতাধিক (ট্রাক্টর/ট্রলি)অবৈধ ভাবে চলাচলে নবনির্মিত বেড়িবাঁধ সড়কটি ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে গ্রামীন সড়ক,পরিবেশ ও জনজীবন।
উপজেলার রানীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন বাড়ীগাঁও,নাজাই, বড়চালা ও চাপাত গ্রামের লোকজনের চলাচলের প্রধান বেড়িবাঁধ সড়ক এটি।
দানব আকৃতির এ বাহনটি দিনরাত মিলিয়ে অন্তত ১২-১৪ বার ওই কাঁচা পাকা সড়কটি দিয়ে বালুঘাটের বালু নিয়ে যাতায়াত করে। এতে সড়কটি বিনষ্ট হয়ে হাঁটু পরিমাণ বালু জমে গেছে। বিরতিহীনভাবে চলাচলকৃত ট্রলির দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছেন সড়কের পাশের বাড়িঘরের কয়েক শত বাসিন্দা। রাস্তার ধুলোবালু প্রতিনিয়ত তাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। ভাঁত খেতে গিয়েও থালায় বালুর দেখা পান তারা।এনিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
জীবন অতিষ্ঠ করে তোলা শতাধিক ট্রলির মালিকরা প্রভাবশালী এলাকার কিছু অসাধু নেতাদের প্রকাশ্য মদদে চলছে অবৈধ বালু মহাল ও এসব ট্রলি। জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা।
ইউপি চেয়ারম্যান এমএ ওহাব খাঁন খোকা জানান,গেল অর্থ বছরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সড়কটি উন্নয়নে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর ট্রলির চাকার নিচে পড়ে সে অর্থ বিফলে গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা ইউএনও'র সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাসিন্দারা আরও জানান,মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাণ্ডব থাকবে এ দানব যন্ত্রের। ট্রলির চাকায় পিষ্ট হয়ে সড়কটি একেবারে বেহাল অবস্থা হয়ে গেছে। আমাদের জীবন একেবারে অতিষ্ঠ করে তুলেছে এ দানবগুলো। রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে কয়েক মিনিটের জন্যও বের হওয়া যায় না। পরনে থাকা কাপড় ধুলোয় বিবর্ণ হয়ে যায়। ঠিকমতো মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে বা বাজারে যেতে পারি না। বর্ষাকালে রাস্তায় বড় বড় গর্ত এবং হাঁটু পরিমাণ কাঁদা থাকে। তখন চলাচল আরও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।
কয়েকজন নারী তাদের রান্না করা খাবার দেখিয়ে বলেন, আমরা ভাঁতের সঙ্গে বালু খাই। কয়েক সেকেন্ডের জন্যও যদি খাবার ডাকনা দিয়ে না রাখি, তাহলে বালু পড়ে খাবারে। ঘরের প্রত্যেকটি অংশে বালুর আস্তরণ। হাঁড়ি পাতিল এবং ভাতের থালায় পর্যন্ত বালু।
রাস্তায় দেখা হয় স্কুল ও মাদ্রাসাগামী কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে তারা বলেন, বালুর কারণে সাইনোসাইট্রিক সমস্যা আর পরনের কাপড় চোপড় নষ্ট হয়ে যায়। বাড়িতে ভিজা কাপড়ও রোধে শুকাতে দিলে ধুলো পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রানীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন হাইস্কুলের পূর্ব পাশে শীতলক্ষ্যা নদীর কুল ঘেঁষে এ স্থাপিত বালু মহালের মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী কাজল সরকার। তিনি বাড়ীগাঁও গ্রামের মরহুম লতিফ সরকারের ছেলে। বালু থেকো কাজল সরকার রাতের আঁধারে শীতলক্ষ্যা নদীর বালু কেটে শিল্পনগরী এলাকায় বিভিন্ন কোম্পানির নিকট বালু বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি শুধু এখানেই ক্ষান্ত নন,শীতলক্ষ্যা নদীর বিশাল একটি অংশ সরকারের বড় রাজস্ব বাঁশমহাল জবরদখল করেন। বাঁশমহাল সরকারের রাজস্ব লুণ্ঠিত করে দখলে নেওয়ার কর্মযজ্ঞ প্রকাশ্যে চালানো হচ্ছে।
২০২৩ সালে সরকারি ইজারা সম্পন্ন বাঁশমহাল রাজস্ব আদায়ে ইজারাদার এখন বাধার মুখে,বিভিন্ন সময় লোকজন পাঠিয়ে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছেন ইজারাদারকে বালু থেকো কাজল সরকার।
অভিযুক্ত কাজল সরকার বলেন, নিউজ করে কোনো লাভ নেই। এটি আমার জোত সম্পত্তিতে বাজার জমিয়েছি সরকার কে টাকা দেওয়ার জন্য না। নদী দখলের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
কাপাসিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল হুসাইন বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। কোনোভাবেই নদীর জায়গা দখল করতে দেওয়া হবে না। ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম গোলাম মোর্শেদ খাঁন বলেন,এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধভাবে নদী দখল করা হলে আর গ্রামীন সড়কে বেপরোয়া ওই সকল যানবাহন গুলোর বিষয়ে অভিযান চালিয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৪ দিন ৫ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
৯ দিন ১৩ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৯ দিন ২০ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১৮ দিন ১৪ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
৫৪ দিন ১৯ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
১৭৭ দিন ৪ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
২১২ দিন ১১ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
২১৩ দিন ৩ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে