আশাশুনি উপজেলার শোভনালী আশরাফিয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। এলাকাবাসীর মনে মাদ্রাসা নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
মাদ্রাসাটি ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর মসজিদের সামনের প্রাচীরের কাছে ওয়াপদার পাশে ক্লাস কক্ষে ক্লাশ পরিচালনা করা হতো। সে সময় যথেষ্ট চাত্রছাত্রী ছিল এবং শিক্ষকরাও নিয়মিত ক্লাস পরিচালনা করতেন। কালে কালে নানাবিধ কারনে প্রতিষ্ঠানটি স্বকীয়তা হারাতে থাকে। মাদ্রাসার নামে ১.২৮ একর জমি রেজিষ্ট্রী করা থাকলেও জমির কোন হদিস নেই বললেই চলে। অনেকে বলেন জমি নদীগর্ভে বিলীনের পর যে যার মত দখল করে খাচ্ছে। পরবর্তীতে মসজিদের দক্ষিণ গা ঘেষে মসজিদের ইমামের থাকার কক্ষ ও পাশে অন্য দু’টি কক্ষে মাদ্রাসা চলছিল। তখন ৩০/৪০ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। কিন্তু বেশীদিন মাদ্রাসা চালু রাখা সম্ভব হয়নি। সেখানে একটি কক্ষে ইমাম সাহেব ও অপর দু’টি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
মসজিদ কমিটির দায়িত্বশীল সদস্য কামাল সরদার জানান, মাদ্রাসা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় দু’টি কক্ষ ভাড়া দিয়ে ১০ হাজার টাকা মসজিদের কাজে লাগানো হয়েছে। হারুনর রশিদ, আঃ রহিম মোড়ল, হযরত আলী সরদার ও মহিদুল ইসলাম জানান, করোনা শুরু থেকে মাদ্রাসা বন্ধ আছে, আর চলেনা। কোন ছাত্রছাত্রীও আসেনা, শিক্ষকদেরও কোন খোজ খবর দেখিনা। এবছর জানুয়ারি মাসে একদিন হঠাৎ করে এক শিক্ষক এসে পাশের কিছু ছেলেমেয়েকে ডেকে নতুন বই দিয়েছিল। তারপর থেকে আর কোন খোজ খবর দেখিনি। কেউ কেউ বলেন, মাদ্রাসার পুরনো বই বাইরের উপজেলায় নিয়ে বিক্রী করা হয়েছে। মসজিদের থাকায় এবছরের নতুন বই এখনো বেধে রেখে দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবী মাদ্রাসা চালু না থাকলেও খাতা কলমে দেখিয়ে কমিটির সভাপতি দুরভিসন্ধির আশ্রয় নিয়েছে। তাদের দাবী মাদ্রাসাটা জমি উদ্ধার করে নিজের জমিতে নেওয়া হোক, সম্ভব হলে পুনরায় চালু করা হোক। যোগ্য শিক্ষক ও কমিটি গঠন করা হোক। এভাবে বন্ধ মাদ্রাসা চালু দেখিয়ে আর কতকাল একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে মিথ্যার খোলসে আকড়ে রাখা হবে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে তদন্ত পূর্বক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানানো হয়েছে।
মাদ্রাসার সভাপতি আশরাফ আলী সরদার জানান, মাদ্রাসাটি ভালভাবে চালু ছিল। করোনার কারনে বন্ধ ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে ৩০/৪০ শিক্ষার্থী উপস্থিত হতো, তবে সেভাবে আর চালান সম্ভব হয়নি। কমিটির এক সদস্যের অসম্মানের কারনে শিক্ষক আসেননা বলে তিনি দাবী করেন।