জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে টানিয়ে দেওয়া সতর্কতামূলক 'ভুলে ভরা' ব্যানারগুলো সংশোধন করেছে সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু ভুলে ভরা ওইসব ব্যানারগুলোর লেখা সংশোধনের পরও রয়েছে 'ভুল'।
ব্যানারে লেখা বাক্যে বানান ভুলের কারণে বিষয়টি অনেকের কাছে দৃষ্টিকটু ঠেকলেও পরীক্ষা শুরুর ১০ দিন অতিবাহিতের পরও ভুলে ভরা লেখাসংবলিত সতর্কীকরণ ব্যানারই ঝুলছে পরীক্ষাকেন্দ্রে। তবে পরীক্ষাকেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের দাবি, ভুল লেখা সংশোধন করে নতুন ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, খোদ পরীক্ষাকেন্দ্রে সতর্কীকরণ ব্যানারের লেখা ভুলে ভরা হলেও এসব দেখার যেনো কেউ নেই। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থা এভাবে তো চলতে পারে না। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের জোরালো পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল সকাল ১০টায় সারা দেশের ন্যায় উপজেলার ১০টি কেন্দ্রে একযোগে শুরু হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে নকলের প্রবণতা দূর করতে নিজ নিজ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের সতর্কতামূলক দিকনির্দেশনা লেখাসংবলিত ব্যানার কেন্দ্রের প্রধান ফটকসহ আশপাশের জনসমাগম স্থানে টানিয়ে দেওয়া হয়।
নকল প্রতিরোধে সতর্কতামূলক দিকনির্দেশনা প্রচারণার এসব ব্যানারে ভুলের ছড়াছড়ি দেখা গেছে। ভুল বানানে ভরা ব্যানার দেখে পরীক্ষার্থীসহ শিশু-কিশোরেরা ভুল বানান শিখছে বলে মন্তব্য করেছে সচেতন মহল। মনোবিদেরা বলছেন, এ ধরনের ভুল বানান যাত্রাপথে শিশুদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। বানান ভুল ও ভাষা বিকৃতির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতাকে দায়ী করে অনেকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেছেন। এ নিয়ে গত ১ লা মে আজকের পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে 'ভুলে ভরা পরীক্ষাকেন্দ্রের সতর্কতামূলক ব্যানার' শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা। এক পর্যায়ে ভুলে ভরা ব্যানার সংশোধনের উদ্যোগগ্রহণ করে। কিন্তু সংশোধনের পরও ব্যানারগুলোতে ভুল লেখাই লক্ষণীয়।
মঙ্গলবার (৯ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, ইসলামপুর নেকজাহান পাইলট মডেল হাইস্কুল পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রধান ফটকে নকল নিরুৎসাহিত করতে 'সবার জন্য শিক্ষা এই হোক দীক্ষা, শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ' স্লোগান সংযোজনে সংশোধন করা ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়। ব্যানারে ‘পরিক্ষা’ শব্দটি সংশোধন করে ‘পরীক্ষা’ বানানে এবং বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বাক্যে ‘রাহীম’ শব্দটি ‘রাহিম’ লেখা হলেও অন্যদিকে ‘নকলমুক্ত’ শব্দটি ভুলভাবে লেখা হয়েছে ‘নকল মুক্ত’।
এ ছাড়া মোবাইল, ঘড়ি বা যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ নিষেধ বাক্যটিও অর্থ ও ব্যাকরণসিদ্ধ নয়। বাক্যটিতে আগের ব্যানারে ভুলে ভরা লেখার মতোই ‘ইলেকট্রনিক’ শব্দের স্থলে ‘ইলেকট্রনিক্স’, ‘কোনো’ শব্দের স্থলে ‘কোন’ লেখা হয়েছে।
ইসলামপুর সরকারি নেকজাহান পাইলট মডেল হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব এস. এম. রিয়াজুল করিম বাবু বলেন, 'লেখা সংশোধন করে ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরও লেখা ভুল হয়েছে কি-না, তা আমি দেখিনি।'
উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার মো. মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, 'ভুলে ভরা লেখাসংবলিত ব্যানার টানিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।'
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মু. তানভীর হাসান রুমান বলেন, ‘সবাইকে ভাষা ব্যবহারে যত্নবান হতে হবে। একই সঙ্গে মাতৃভাষার প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই শুদ্ধতার চর্চা করা জরুরি।'
শিশু ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হেফজুল বারী বলেন, 'পরীক্ষাকেন্দ্রে টানিয়ে দেওয়া ব্যানারে লেখা ভুলে ভরা বিষয়টি লজ্জাজনক। দায়িত্বশীলদের ভাবা জরুরি যে, বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখা দেখে শিশুরা অনেক কিছুই শেখে। সেকারণেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো লেখা যাতে ভুল না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।'
সরকারি ইসলামপুর কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রভাষক মাহমুদা সুলতানা বলেন, 'ভুলে ভরা লেখা সংশোধনের পরও ভুল থাকাটা দুঃখজনক। সংশ্লিষ্টদের এমন কাণ্ডজ্ঞান হীনকাজ কাম্য নয়।
৬ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
১৩ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
১ দিন ৫ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৫ দিন ৭ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
৫ দিন ১০ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
৮ দিন ৫ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
১২ দিন ১০ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে