জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় থানা পুলিশ ৭ জুয়াড়িকে গ্রেপ্তারের আনুমানিক ১১ ঘণ্টা পর আরেক জুয়াড়ির লাশ উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। পুলিশের মারধরের শিকার হয়ে ওই জুয়াড়ির মৃত্যু হওয়ার অভিযোগ তোলে প্রথমে লাশ কাঁধে নিয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মিছিল করলেও পরবর্তীতে পরিবারের আপত্তি না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়।
গত সোমবার (১২ জুন) দিবাগত ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়নের ডিগ্রিরচর বালিয়ামারী এলাকা থেকে ৭ জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরদিন মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেলে একই ইউনিয়নের পয়েস্তি এলাকায় দশাআনী নদীরপাড় থেকে মো. হলকা আলী (৪২) নামে ১ জুয়াড়ির
লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। তিনি ওই ইউনিয়নের ডিগ্রিরচর খলিফাপাড়া এলাকার মো. আনিস হাজির ছেলে।
ইসলামপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল ও মাদক উদ্ধার অভিযান চলাকালে ডিগ্রিরচর বালিয়ামারী এলাকার ময়নাল খলিফার কাঠ বাগানে জুয়া খেলা হচ্ছে মর্মে খবর পায় পুলিশ। পরে উপপরিদর্শক (এসআই) মো. তারেক আহমেদের নেতৃত্বে সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) মো. খোকন মিয়া, এএসআই মো. আব্দুল হাদিসহ পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলার আসর থেকে ৭ জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে জুয়া খেলার বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ ৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছ।
গ্রেপ্তারকৃত জুয়াড়িরা হলো- ডিগ্রিরচর বালিয়ামারী গ্রামের মৃত হানিফ উদ্দিন খলিফার ছেলে ও চরপুটিমারী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীন ওরফে ঝালু (৪২), মৃত ফজলুল হকের ছেলে ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মুঞ্জুরুল ইসলাম (৪০),
ফরহাদ আলীর ছেলে আবু সাইদ (৩৫), পৌর শহরের নটারকান্দা গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে দুলাল মিয়া (৩৫), ডিগ্রিরচর দক্ষিণপাড়ার মৃত এঙ্গরাজ আলীর ছেলে ইয়াকুব আলী (২৮), ডিগ্রিরচর আকন্দপাড়ার দুদু শেখের ছেলে জামিনুর রহমান (২৫) এবং চরগোয়ালিনী ইউনিয়নের কান্দারচর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে লালন মিয়া (২৭)।
এ ব্যাপারে এসআই মো. তারেক আহমেদ বাদি হয়ে গ্রেফতারকৃত ৭ জনের নামোল্লেখে জুয়া খেলার অপরাধ আইনে মামলা দায়ের করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে জুয়া খেলা নিরোধ আইনের ধারার মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ৭ জুয়াড়িকে পুলিশ আদালতে হাজির করলে বিকেলে সংশ্লিষ্ট বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
অপরদিকে জুয়া খেলা আসরে পুলিশী মারধরের শিকার হয়ে জুয়াড়ি হলকা আলী মারা গেছে মর্মে খবর চাউর হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, হলকা আলী লাশ কাঁধে নিয়ে
ডিগ্রিরচর-বেনুয়ারচর সড়কে স্থানীয় শত শত মানুষ বিক্ষোভ করে। এ সময় 'পুলিশের বিচার চাই, পুলিশ বিচার চাই' স্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। অনেকেই অভিযোগ তোলেন পুলিশের মারধরের শিকার হয়েই হলকা আলীর মৃত্যু হয়েছে। পরে সন্ধ্যার একটু আগে ইসলামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হলকা আলীর বাড়ি উপস্থিত হন। এ সময় আলাপ-আলোচনার এক পর্যায়ে কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে পারিবারিক গোরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
মৃত হলকা আলীর ছোট ভাই আব্দুল হক বলেন, 'রাতে আমার ভাই জুয়া খেলার আসর থেকে পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে পালায়। পরদিন বিকেলে দশআনী নদীরপাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করি। পারিবারিক গোরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।'
ইসলামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান জানান, 'পুলিশী গ্রেপ্তার এড়াতে হলকা আলী জুয়া খেলার আসর থেকে পালিয়ে ছিলো কি-না, সেটা আমরা জানি না। বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফনের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিবারের নিকট হলকা আলী লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে ইসলামপুর থানায় একটি ইউডি মামলা রুজু করা হয়েছে।'
৬ ঘন্টা ২৮ মিনিট আগে
১৩ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
১ দিন ৫ ঘন্টা ২৮ মিনিট আগে
৫ দিন ৭ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
৫ দিন ১০ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৮ দিন ৫ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
১২ দিন ১০ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে