জামালপুরের বকশীগঞ্জ থানায় ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশের ছেড়ে দেওয়া দুইব্যক্তি অপহরণ মামলার আসামি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের দাবি, পুলিশী হেফাজতে থাকাকালীন ওই দুইব্যক্তির বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ তোলেনি মামলার বাদি। সেকারণেই ২৪ ঘণ্টার কম সময় মধ্যেই তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অপহরণ মামলার বাদির ভাষ্য, তিনি যথা সময়েই থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বকশীগঞ্জ উপজেলায় গত ১১ মার্চ চলতি বছরের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রেম সংঘটিত কারণে উপজেলার টাঙ্গারিয়াপাড়ার আজাদ হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন ভাগিয়ে নিয়ে যায়। এনিয়ে আইনি প্রতিকার পেতে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশের দারস্থ হন ওই ছাত্রীর বাবা।
গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অভিযুক্ত আনোয়ারের ছোটো ভাই কলেজ ছাত্র ইমাম আলী এবং খালাতো বোন আমেনা বেগমকে থানায় আনেন বকশীগঞ্জের কামালের বার্ত্তী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ ও উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খায়রুল ইসলাম।
পরদিন মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে আনোয়ারকে আটক করাসহ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ থানায় আনার পর রাত ৩টার দিকে থানা থেকে ইমাম আলী এবং আমেনা বেগমকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রুজুকৃত ওই ছাত্রী অপহরণ মামলায় পুলিশী হেফাজত থেকে রাতে ছাড়া পাওয়া ইমাম আলী এবং আমেনাকেও আসামি করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মেয়ে অপহণের অভিযোগে ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে আনোয়ারসহ তার ছোট ভাই ইমাম আলী, বাবা আজাদ, এবং খালাতো বোন আমেনার নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।
পুলিশী হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়া ইমাম আলী বলেন, 'আমিসহ আমার খালাত বোন আমেনা বেগমকে গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে থানায় এনে ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাত ৩টার দিকে ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় পর থানা থেকে আমাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। আমি স্থানীয় গাজী আমানুজ্জামান মডার্ন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। আমি ছোট মানুষ। ২০০৬ সালের ১ সেপ্টেম্বরে আমার জন্ম। এসআই খায়রুল ইসলাম থানায় আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। আমার খালাতো বোন আমেনাকেও গালাগালি করেছে।'
পুলিশী হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়া আমেনা বেগম বলেন, 'পুলিশ অযথা আমাদের ধরে থানায় রেখেছিল। প্রেমের টানে ওই ছাত্রী পালিয়ে ছিলো। আমাদের কোনো দোষ ছিলো না। আমাদের গালাগালি করেছে, কষ্ট দিয়েছে পুলিশ। নির্দোষ হওয়ায় আমাদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আমাদের হয়রানি করতেই আসামি করা হয়েছে।'
ভুক্তভোগী ইমাম আলীর ছোট ভাই আশিক মিয়া বলেন , 'রাত ৩টার দিকে ইমাম আলী এবং আমেনাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ তাদের মারধরও করেছে।'
বকশীগঞ্জের কামালের বার্ত্তী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ ও উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, 'জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে থানায় আনা হয়েছিল। তাঁদের কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।'
বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান বলেন, 'মামলার বাদি প্রথমে মেয়ে হারানো জিডি করেন। জিডিমূলে এক যুবককে আটক করাসহ আমরা ভিকটিমকে উদ্ধার করি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা দুইব্যক্তিকে ছেড়ে দিয়েছে। মামলার বাদি বিলম্বে অভিযোগ দেওয়ায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।'
মামলা বাদী বলেন, 'মেয়ে অপহরণের দুইদিন পর থানায় অভিযোগ দিয়েছি। দুইজনকে পুলিশ কেনো ছেড়ে দিয়েছেন, সেটা জানি না।'
৬ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে
১৩ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
১ দিন ৫ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে
৫ দিন ৭ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৫ দিন ১০ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৮ দিন ৫ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
১২ দিন ১০ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে