এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে পা দিয়ে পরীক্ষা দেওয়া সেই সিয়াম। সিয়াম চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে হরখালী মুজিবুর রহমান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। আজ মহেশ চন্দ্র স্কু এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় ১৯৬ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। এতে ১৯৪ উত্তীর্ণ হয়েছে আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ২৪। সিয়াম পরীক্ষায় ৩.৮৩ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। পরীক্ষায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবার ও বাড়ির আশেপাশের লোকজন। এদিকে বিষয়টি শুনেই সাংবাদিকদের মাধ্যমে সিয়ামকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সংসদ সদস্য আবদুর রশিদ।
অভাব, দারিদ্র ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে পা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থী সিয়াম। হাত না থাকলেও অন্যের সাহায্য ছাড়াই পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। মনের অদম্য শক্তিতে শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে পিছনে ফেলে স্কুল কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার দিনমজুর পরিবারের সন্তান সিয়াম মিয়া।
সিয়াম জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের দিনমজুর দম্পতি জিন্নাহ মিয়া-জোসনা বেগমের ছেলে। জিন্নাহ-জোসনা দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে সিয়াম ছোট। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত না থাকলেও হাল ছাড়েনি পড়াশোনা ও খেলাধুলায়। ২০১৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুল থেকে অংশগ্রহণ করে ভালো ফল লাভ করে। এর পর জেএসসি অংশ নিয়ে পরীক্ষাতেও ভালো ফলাফল লাভ করে সিয়াম।
ছোটবেলায় ভাইবোনের সঙ্গে স্কুলে গিয়ে লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ জাগে সিয়ামের। বিভিন্ন অক্ষরের ওপর পা দিয়ে ঘষামাজা করতে করতে লেখার অভ্যাসটা শুরু হয়। পরবর্তীতে অভ্যাসের সঙ্গে বাঁ পা দিয়ে লেখার ধারাবাহিকতা শুরু হয়। এছাড়া হাত ভনেই বলে তার কোনো কাজই থেমে থাকেনি।
সিয়ামের সহপাঠীরা জানান, ক্রিকেট খেলা, সাতাঁর, মোবাইল ফোন চালানো, টিউবয়েল চেপে পানি ভরা থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়ার মতো সব কাজ সে পা দিয়ে করে।
বিদ্যালয়ের সহযোগীতায় লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারায় খুশি মা জোসনা বেগম। তিনি বলেন, দারিদ্রের তাড়নায় কষ্টে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।এসময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
জীবনে আরও ভালো কিছু করবে বলে মনে করেন পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব থাকা কর্মকর্তা জানান, ইচ্ছা শক্তি নিয়ে সিয়াম এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যাবে।
সিয়ামের পড়াশোনার ভার নিয়েছিলেন সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান। সিয়াম পাশ করায় আমি খুবই খুশি হয়েছি। তিনি বলেন,এসপি স্যারের নির্দেশনায় সিয়ামের পড়াশোনার ভার নিয়েছি।
সিয়ামের মনে বিন্দুমাত্র নেই কোনো হতাশা। লেখা পড়া করে সরকারি ভালো চাকরি করতে চায় সিয়াম। অভাবের সংসারের ধরতে চায় হাল। আর শিক্ষকদের প্রত্যাশা সিয়ামের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে প্রশাসন।
এদিকে ১৪১ জামালপুর ৪ সরিষাবাড়ী আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রশিদ মুঠোফোনে এ জানান, প্রতিবন্ধী হলেও পা দিয়ে লিখে সে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে, এর জন্য তাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। বিশেষ করে শিক্ষার জন্য যার টার্গেট থাকে, সে অবশ্যই তার লক্ষ্যে পৌছতে পারে।সেইসাথে অর্থাভাবে যেন তার পড়াশোনা বন্ধ না হয়ে যায় সেজন্য ভবিষ্যতে যা কিছু প্রয়োজন হবে তার সকল দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেন এমপি আবদুর রশিদ ।
তিনি আরো বলেন, 'অতীতেও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি ভবিষ্যতেও পাশে থাকবো।'
২৫ দিন ৮ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
১৬২ দিন ২৩ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
১৬৬ দিন ২ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
১৭১ দিন ২২ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
১৭২ দিন ২২ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
১৭৩ দিন ২ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১৭৬ দিন ২২ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
১৮৬ দিন ১ ঘন্টা ৪ মিনিট আগে