দু’দিনেরও বেশি পেরিয়ে গেছে, ভূমধ্যসাগরে ভাসমান নৌকার ৪০০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়নি এখনো। লিবিয়ার তবরুক থেকে রওয়ানা হওয়া নৌকাটিকে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সাহায্য করতে গেছে ইতালির কোস্ট গার্ড। তবে সেখানকার পরিস্থিতি সুবিধার নয়। নৌকাটির জ্বালানি শেষ, তলদেশ পানিতে ভরে গেছে, আরোহীদের কয়েকজনের জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রয়োজন। তাছাড়া, বিরূপ আবহাওয়ায় নৌকাটি ডুবে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
ইতালীয় কোস্ট গার্ড বলেছে, সাগরের বিরূপ অবস্থার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। তারা বর্তমানে অভিবাসনপ্রত্যাশীবোঝাই দুটি নৌকাকে সাহায্য করছে। দ্বিতীয় নৌকাটিতে প্রায় ৮০০ আরোহী রয়েছে।
ইতালি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কোস্ট গার্ড বাহিনী গত শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে। তাদের বহনকারী নৌকাগুলো লাম্পেদুসা দ্বীপে পৌঁছেছে।
জার্মান অলাভজনক সংস্থা রেসকিউশিপ জানিয়েছে, গত শনিবার রাতে ইউরোপগামী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি নৌকা ডুবে দুজন মারা গেছেন এবং অন্তত ২০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
মঙ্গলবার সিসিলি উপকূলে আইওনিয়ান সাগরে ৪০০ আরোহী বহনকারী নৌকাটির সবশেষ অবস্থান শনাক্ত করেছিল বেসরকারি সাহায্য সংস্থা অ্যালার্ম ফোন।
সংস্থাটি টুইটারে জানিয়েছে, উদ্ধার সরঞ্জাম দেখা গেলেও নৌকার পরিস্থিতি নাটকীয়। বেশ কয়েকজনের জরুরি চিকিৎসাসেবা দরকার, নৌকায় পানি ভরে যাচ্ছে এবং জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে।
অ্যালার্ম ফোন বলেছে, গত রোববার নৌকাটি মাল্টার জলসীমায় থাকতে ইতালি, গ্রিস ও মাল্টা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রথমবার জরুরি সতর্কতা সংকেত পাঠানো হয়েছিল।
জার্মান সংস্থা সি-ওয়াচ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ওই সময় নৌকাটির আশপাশে দুটি বাণিজ্যিক জাহাজ ছিল। কিন্তু অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার না করতে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। শুধু একটি জাহাজকে জ্বালানি দিয়ে নৌকাটিকে সহায়তা করার অনুমতি দিয়েছিল মাল্টা।
মাল্টার সশস্ত্র বাহিনী স্থানীয় গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছে, নৌকার আরোহীদের উদ্ধারের জন্য তাদের কাছে কোনো অনুরোধ করা হয়নি। কিন্তু অ্যালার্ম ফোন জানিয়েছে, তারা বিপদগ্রস্ত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধারের অনুরোধ জানিয়ে মাল্টা কর্তৃপক্ষকে ২১ বার ইমেইল পাঠিয়েছে। তারা ফোনেও অনুরোধ জানিয়েছিল, কিন্তু কল কেটে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ইতালির কোস্ট গার্ড বলেছে, তাদের উদ্ধার অভিযান চলছে। ৮০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী বহনকারী দ্বিতীয় নৌকাটি অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই বলেও জানিয়েছে তারা। তবে নৌকাটি কোথা থেকে যাত্রা শুরু করেছিল, তা নিশ্চিত নয়।
প্রতি বছর যুদ্ধ, নির্যাতন ও দারিদ্র্য থেকে বাঁচতে এবং আরও ভালো অর্থনৈতিক সম্ভাবনার সন্ধানে ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী। এদের মধ্যে অনেকেই ছোট ছোট নৌকায় মাঝসমুদ্রে আটকা পড়েন। এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা নিয়ে এ অঞ্চলের ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সবশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছেন ১ লাখ ৫ হাজার ১৩১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার চেষ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৩৬৮ জন।
গত মার্চ মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার সময় তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে অন্তত ২৮ অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রাণ হারান।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত ২৭ হাজার ৮৭৫ জন এই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রা করেছেন। এদের বেশিরভাগই আইভরি কোস্ট, গিনি, বাংলাদেশ, তিউনিসিয়া ও পাকিস্তানের নাগরিক।
১ দিন ১৫ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
১ দিন ১৭ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
২ দিন ১৬ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
২ দিন ১৭ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
৩ দিন ৮ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে
৪ দিন ২ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে
৫ দিন ১৮ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
৫ দিন ১৮ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে